

উত্তরাপথঃ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সর্বদা মানুষের কাজকে সহজ এবং উন্নত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়। কিন্তু এর পিছনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এর অপব্যবহার কীভাবে রোধ করা যায়। নৈরাজ্যবাদীরা সর্বদা বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিতে বা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ভেঙে ফেলার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নামক একটি নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের পর এই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। শুরু থেকেই মানুষ প্রতিবাদ করে আসছে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রচার মানুষের সৃজনশীলতা, গোপনীয়তা এবং আর্থিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। কারণ এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা বিশ্বজুড়ে উপলব্ধ তথ্য অনুসন্ধান করে এবং যে কোনও ব্যক্তিকে কাঙ্ক্ষিত তথ্য সরবরাহ করে।
তবে, অ্যালগরিদমিক প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই তথ্য অনুসন্ধান করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে, এই কাজটি আরও বৃহত্তর পরিসরে এবং বহুগুণ দ্রুত করা যেতে পারে। অতএব, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উদ্বিগ্ন যে AI-এর উত্থানের সাথে সাথে, সৃজনশীলতা, গোপনীয়তা এবং আর্থিক নিরাপত্তার উপর এর প্রভাব ভবিষ্যতে বড় সমস্যার জন্ম দেবে । AI দ্রুত বিপুল পরিমাণে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করতে পারে, যা ডেটা লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের ঝুঁকি বাড়াবে বলে প্রাথমিক ভাবে অনেকে মনে করছেন।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে, বিভিন্ন দেশের নেতারা AI-এর অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার রোধ করার জন্য এর উপর নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। উদাহরণস্বরূপ, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ভুল তথ্য এবং সাইবার বুলিং-এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়েছেন। AI-কে চালিত করে এমন অ্যালগরিদমগুলিতে আরও স্বচ্ছতার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন যে AI একটি বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ এবং মানবতার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি। তিনি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রকেই এই বিষয়ে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, AI চিকিৎসা, শিক্ষা এবং প্রকৌশলের মতো ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। তবে, আর্থিক জালিয়াতি, হয়রানি এবং মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। AI প্রযুক্তির বিকাশকারীদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করার আশা করা হচ্ছে, তবে সরকারগুলিকে এই প্রযুক্তিগুলিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনি কাঠামোও তৈরি করতে হবে।
আজকের বিশ্বে, ডিজিটাল ডিভাইসের উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতার সাথে, AI অপব্যবহারের হুমকি এক বাস্তব সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইবার হ্যাকাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করছে এবং বিশ্বস্ত ব্যক্তিত্বের ছদ্মবেশে AI ব্যবহার করছে, যা বিভ্রান্তি এবং ভয়ের সৃষ্টি করছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে, এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও মানুষকে সতর্ক থাকতে আবেদন করতে হয়েছে।বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের মতো ফোরামে উত্থাপিত উদ্বেগগুলিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে নিশ্চিত করা যায় যে AI ক্ষতির উৎস নয় বরং ভালোর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন