কলকাতা হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বদলির সুপারিশ সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের

উত্তরাপথ: সি যে ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম কলকাতা হাইকোর্টের ৩ জন বিচারপতির বদলির সুপারিশ করেছে কেন্দ্রের কাছে। কলকাতা হাইকোর্টের তিন বিচারপতিকে দেশের তিনটি হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট দেশের হাইকোর্টগুলির ২৫ জন বিচারপতিকে বদলির সুপারিশ করেছিল কেন্দ্রের কাছে। সেই নামের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীকে পাটনা হাইকোর্ট, বিচারপতি শেখর বি সরফকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং মাত্র এক বছর আগে বিচারপতির দায়িত্ব নেওয়া লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কলকাতা থেকে তিনজনকে বদলি করে এলাহাবাদ থেকে এক বিচারপতিকে কলকাতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কলেজিয়ামের তরফে

 গত ৭ আগস্ট একটি চিঠির মাধ্যমে,বিচারপতি শেখর বি সরফ তার বদলির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। তিনি অবশ্য একই সাথে, প্রস্তাবিত স্থানান্তরের পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছেন এবং বিকল্প হিসাবে, তাকে যে কোনও জায়গায় যেমন দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোর এবং চণ্ডীগড়ের স্থানান্তর করার কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিচারপতি শেখর বি সরফের করা অনুরোধের মধ্যে কলেজিয়াম কোন যোগ্যতা খুঁজে পায় নি, তাই, তাকে এলাহাবাদের হাইকোর্ট অফ জুডিকেচারে স্থানান্তর করার জন্য ৩ আগস্ট ২০২৩ দিনটিকে নির্ধারণ করা হয়েছিল।  

আবার আরেক বিচারপতি লপিতা ব্যানার্জী ৮ আগস্ট পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্টে বদলে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হতে তার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।সেই সাথে তিনি তার বদলির প্রস্তাব পুনর্বিবেচনারও অনুরোধ করেছিলেন,কিন্তু কলেজিয়াম তার অনুরোধের কোন যোগ্যতা খুঁজে পায়নি তাই, তাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্টে স্থানান্তর করার জন্য ৩ আগস্ট ২০২৩ দিনটিকে নির্ধারণ করা হয়েছিল।  

কলকাতা হাইকোর্ট থেকে একসঙ্গে তিন বিচারপতিকে বদলির সুপারিশ আইনজীবী মহলের কাছে অন্যতম আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। দেশজুড়ে ২৫ জন বিচারপতিকে একসঙ্গে সরানোর সুপারিশ নিয়ে চর্চা চলছে আইনজীবী মহলে।কলকাতা হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতিকে একসঙ্গে বদলির সুপারিশ প্রায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা। যদিও একেকজনের বদলির সুপারিশের পিছনে এক এক রকম কারণ নিয়ে আলোচনা চলছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top