১৫ ই জুন ২০২৩

মতুয়া হওয়া সহজ নয়

ড. জীবনকুমার সরকার

মতুয়া আন্দোলনের ইতিহাস দু’শ বছরের। অখন্ড ভারতের ফরিদপুর জেলার সফলডাঙা ও ওড়াকান্দি গ্রাম থেকে তৎকালীন বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো এই আন্দোলন। এই আন্দোলনের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তৎকালীন দিল্লির ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসক সোনার বাংলাকে ভেঙে দেন। ফলে বাঙালি জাতি হয়ে যায় সতীর দেহের মতো ছিন্নভিন্ন।

আমরা অনেকেই জানি না কেনো মতুয়া আন্দোলনের উদ্ভব হয়েছিলো। উদ্ভবের ইতিহাস না জানলে মোটেই বোঝা যাবে না মতুয়া কী ও কেন? মতুয়া আন্দোলনের মতো একটা বৃহৎ মানবতাবাদী আন্দোলনের ইতিহাসকে এতদিন চেপে রাখা হয়েছিলো। এই চেপে রাখার কাজটি করে এসেছেন ব্রাহ্মণ্যবাদী ইতিহাস লেখকেরা। কারণ, তারা মনে করতেন; জাতপাত বিরোধী এই আন্দোলনের কথা ইতিহাসে তুলে ধরলে জাতপাতের নামে প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা যে সুযোগ সুবিধা নির্বিচারে ভোগ করে এসেছে, তার অবসান হয়ে যাবার সম্ভবনা আছে। তাই সুকৌশলে ইতিহাসবিদরা মতুয়া আন্দোলনের ইতিহাস এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু এড়িয়ে যাবো বললেই তো আর সবকিছু এড়িয়ে যাওয়া যায় না। আজ নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণের কণ্ঠ বহুমাত্রিক আলোয় উদ্ভাসিত। ধর্মের নামে যাদের অস্পৃশ্য বানিয়ে রাখা হয়েছে; তাদের লাঙল, শাবল, গাইতি, কোদাল, করাত, হাতুড়ি আজ কলমের আকার নিয়েছে। তাই ইতিহাস নতুন করে খনন হচ্ছে। এর ফলে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা আবার একালেও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি আমাদের দেশের তথাকথিত সাম্যবাদীরাও মতুয়া বিরোধী। আরও গভীরে গিয়ে বলতে চাই, আমাদের দেশের সাম্যবাদীরা বাইরে বাইরে জাতপাত না মানলেও ভেতরে ভেতরে তারা বর্ণবাদী। তাই তফসিলি জাতি-উপজাতিদের( এরাই তো ভারতের প্রকৃত সর্বহারা) অগ্রগতি দেখলে সাম্যবাদীদেরও গাত্রাদাহন হয়। রাস্তাঘাটে এই ছবি আজও দেখার মতো।

এবারে লক্ষ করুন মতুয়া আন্দোলনের উদ্ভবের কারণ আসলে কী? আর্য আগমনের পূর্বে আমাদের দেশে জাতপাত ও বর্ণ বৈষম্যের মতো জঘন্য সমাজব্যবস্থার কথা জানা যায় না। পারস্য দেশের ঘোড়া ও লোহা ব্যবহারকারী একদল সাদা চামড়ার মানুষেরা খাইবার,বোলান প্রভৃতি গিরিপথ দিয়ে আমাদের দেশে ঢুকে পড়ে। ধীরে ধীরে প্রাচীন ভারতের প্রকৃতির উপাসক ও সরল সুন্দর সাম্যবাদী সমাজের মানুষকে পদানত করার নানা অভিসন্ধি তৈরি করতে থাকে। আর্যরা বুঝেছিলো এই বিপুল পরিমাণের জনগোষ্ঠীকে সরাসরি করায়ত্ত করা সম্ভব নয়। তাই তারা মগজ ধোলাইয়ের পথ নির্বাচন করে। যার পরিণতিতে আর্যরা নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য কৃত্রিম ধর্ম তৈরি করে এবং সেই ধর্মকে যাতে সকলেই অনুসরণ তার জন্য ভয়- ভীতি- লাভ- লালসা, স্বর্গ- নরক, আত্মা- পরমাত্মা ইত্যাদি অবৈজ্ঞানিক গালগল্প তৈরি করে বইপত্র লিখতে শুরু করে। যার যাত্রাপথ শুরু বেদ রচনা দিয়ে। আর ব্রাহ্মণ্যবাদের চূড়ান্ত নৃশংস বর্ণঘৃণা ও নির্যাতনের কুৎসিত রূপ রচিত হয়েছে মনুসংহিতায়।

কালক্রমে বহিরাগত যাযাবর ভারতে আগমনকারী আর্যরাই ব্রাহ্মণে রূপান্তরিত হয়েছে। এবং বেদ ও মনুসংহিতার বিধান অনুসারে দেশ চালিয়ে আসছিলো শতাব্দীর পর শতাব্দী। ফলে ভারতের প্রকৃত ভূমিপুত্ররা অসভ্য আর্যদের কাছে পরাজিত হয়ে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। আর্য-ব্রাহ্মণরা প্রথমেই যে কাজটি সুচারুভাবে করতে পেরেছিলো, সেটা হলো অজস্র জাতিতে ভাগ( যেমন: বর্তমানে হিন্দু ধর্মের লোকেরা ৬৭৪৩ জাতিতে বিভক্ত) করে নিজেরা সবার শীর্ষে অবস্থান পাকা করে নিয়েছেন ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে। আর কিছু মানুষকে গোলাম বানিয়েছিলেন নিজেদের প্রয়োজনে ( যেমন: ক্ষত্রিয়ও বৈশ্য। বাংলায় আছে যেমন বৈদ্য ও কায়স্থ)। বাকী সব মানুষদের শূদ্র বানিয়ে শিক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছে। শূদ্রদের জীবনযাপন কেমন হবে, তার ভয়ঙ্কর বিবরণ লেখা আছে মানুসংহিতায়।

ভারতের সভ্যতা সংস্কৃতি নির্মাণকারী এইসব ব্রাত্য-অস্পৃশ্য শূদ্রদের হিন্দু ধর্মের ব্রাহ্মণ্যবাদী কারাগার থেকে মুক্তির জন্য ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ধর্মের থেকে মানবমুক্তির আকাঙ্ক্ষায় বিভিন্ন স্বতন্ত্র ধর্মের উদ্ভব হয়। তৎকালীন ভারতবর্ষের পুব প্রান্তের সবচেয়ে বড়ো ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের নাম মতুয়া আন্দোলন। যার পথিকৃৎ হলেন হরিচাঁদ ঠাকুর (১৮১২–১৮৭৮)। মহামানব গৌতম বুদ্ধের পর যিনি সোচ্চার করে বলে গেছেন —––

“কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই

বেদবিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই।।”

( শ্রীশ্রী হরিলিলামৃত, পৃ.১৩৮)

হরিচাঁদ ঠাকুরই ভারতের আধুনিক মানুষ, যিনি বেদের বিরুদ্ধে এমন করে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। পতিত মুক্তির জন্য আরও বলেছেন –––
“জীবে দয়া নামে রুচি মানুষেতে নিষ্ঠা
ইহা ছাড়া আর যত সব ক্রিয়া ভ্রষ্টা।।”
(শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত,পৃ.২৩)
মতুয়াদের প্রধান আরাধ্য মানুষ কিন্তু ইনিই। তাহলে আমাদের বুঝতে হবে, মতুয়া হওয়া কিন্তু সহজ ওতো ব্যাপার নয়। হরিচাঁদ ঠাকুরের এইসব বাণীতে গোটা বাংলা কেঁপে উঠেছিলো।

এরপর তাঁর সুযোগ্য পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুর আরও বেগবান গতিতে হিন্দু ধর্মের ব্রাত্য অস্পৃশ্য মানুষদের মুক্তির জন্য কাজ শুরু করে দেন। এই ধর্মে ভাববাদের কোনো জায়গা নেই। চিন্তাভাবনা সব বস্তুতান্ত্রিক। তাই গুরুচাঁদ ঠাকুর তাঁর বাবার মতো আরও কঠোর অবস্থানে মতুয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। তিনি শিক্ষাকে হাতিয়ার করলেন কঠোরভাবে। ব্রাহ্মণ্যবাদের বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে বহুজন মানুষের উদ্দেশে বলেন ––––

” সবাকারে বলি আমি যদি মান’মোরে

অবিদ্বান পুত্র যেনো নাহি থাকে ঘরে।।

খাও বা না খাও তা’তে কোনো দুঃখ নাই।।

ছেলেপিলে শিক্ষা দেও এই আমি চাই।।

(শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ চরিত, পৃ.১৪৪)

এ শুধু কথার কথা নয়। তাঁর এই আহ্বান সাড়া দিলেন শত শত মানুষ। একক প্রচেষ্টায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ১৮৩৬টি বিদ্যালয়। এই নাজির ভারতে নয় কেবল, সমগ্র বিশ্বে বিরল। গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে পড়াশুনা তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে অস্পৃশ্যরা সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং এমএলএ, নেতা- মন্ত্রী সবই হতে থাকেন। একদিকে ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী মতুয়া আন্দোলনের রসদ আর একদিকে ব্রিটিশদের সহযোগিতায় বাংলার অস্পৃশ্যরা রাজ ক্ষমতার দিকে হাঁটতে লাগলো। ইতিহাস সাক্ষী বাংলার মতুয়ারাই মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের নেতৃত্বে আম্বেদকরকে নির্বাচিত করে দিল্লির কনস্টিউট অফ অ্যাসেম্ববিলিতেপাঠান। মতুয়াদের এই উত্থান দেখেই দিল্লি বাংলা ভেঙে খান খান করে।

দেশভাগের ফলে মতুয়ারা আজ

শতছিন্ন। এমন করে বাংলাকে ভাগ করা হয়েছিল যে, মতুয়া অধ্যষিত পুরো অঞ্চলগুলিকে পাকিস্তানের মধ্যে ফেলে চিরকালের মতো মতুয়াদের ভারত থেকে নির্বাসন দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা পরবর্তীকালে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মাটি ছেড়ে ভারতে পাড়ি দেয়। আজ ভারতের ১৮টি রাজ্যে মতুয়াদের বাস। সারা ভারতে মতুয়াদের সংখ্যা প্রায় এখন পাঁচ কোটি মতো। যাদের প্রাণকেন্দ্র উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর। বাংলাদেশে যেমন আছে ওড়াকান্দি। বড়ো বেদনার কথা, আজ ওড়াকান্দি এবং ঠাকুরনগর ভয়ঙ্করভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদে আক্রান্ত। মাতুরাও আজ পথভ্রষ্ট। বিভ্রান্ত। মতুয়া যে একটি স্বতন্ত্র ধর্ম ––– এই কথাটাই ভুলে গেছে মতুয়ারা। এর জন্য ওড়াকান্দি ও ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ি দায়ী। আজ যদি মতুয়া আন্দোলন পথভ্রষ্ট না হতো, তাহলে বাংলার মাটিতে কোনোদিন উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী জাতপাতের উপাসকরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো না। খুব সুকৌশলে রাজ্য এবং কেন্দ্রের ব্রাহ্মণ্যবাদীরা ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে ধরেছে শেষ করবে বলে। বিভীষণ অনেক আগেই তৈরি করে ফেলেছে দিল্লি। ফলে কোটি কোটি মতুয়ারা নতুন করে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে। গুরুচাঁদ ঠাকুরের মতো যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে মতুয়ারা আজ লক্ষ্যভ্রষ্ট। এই বাংলা যদি হিন্দুত্ববাদী শক্তি দখল নেয়, তাহলে মতুয়া ধর্ম বিলীন হতে পারে। এখনই তো মতুয়ারা হিন্দু হিন্দু করে দিনরাত মুখরিত করছে। অথচ, হিন্দু ধর্মের কারাগার থেকে মুক্তি দিতেই হরিচাঁদ ঠাকুর মতুয়া ধর্মের প্রবর্তন করেছিলেন। সুতরাং, ঠাকুরবাড়ির লোক মানেই মতুয়া নয়। মতুয়া হতে গেলে আগে হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা মেনে চলতে হবে এবং বেদ বিরোধী ও মনুবাদ বিরোধী হতে হবে সম্পূর্ণভাবে। জীবযাপন থেকে বাদ দিতে হবে ব্রাহ্মণ্যবাদী সব আচার সংস্কার। আজকের মতুয়ারা সে পথ থেকে বিচ্যুত।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়

উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে।  সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন