মহাকাশের জঞ্জাল

ডঃ সায়ন বসু

বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ, স্পুটনিক-১ যা মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল ৪ অক্টোবর, ১৯৫৭| ছবি – নাসা

“আজ মঙ্গলবার | পাড়ার জঙ্গল সাফ করবার দিন |” সহজ পাঠের তৃতীয় পাঠের এই লাইনটি মনে নেই এমন বাঙালীর সংখ্যা বেশ কম। পাড়ার জঙ্গল সাফ করার দিন এবং মানুষজন থাকলেও মহাকাশে যে জঞ্জাল ৬০-এর দশক থেকে জমা হচ্ছে তার কি হবে ? ইউরোপিয় মহাকাশ সংস্থার (ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বা ESA) দু’বছর আগের একটি হিসেব অনুযায়ী মহাকাশে যে জঞ্জাল জমা আছে তার ওজন প্রায় ৯,৬০০ টন (১ টন = ১,০০০ কেজি)। এখন প্রশ্ন হল কে বা কারা এই জঞ্জাল সাফ করার দায়িত্ব নেবে ?

১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পাঠানো স্পুটনিক-১ কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে আমাদের মহাকাশযাত্রা শুরু কিন্তু কে জানতো এমন একটা দিন আসবে যখন পৃথিবীর কক্ষপথে ২৫,০০০-এরও বেশি জঞ্জাল ভেসে বেড়াবে! ‘স্পেস জাঙ্ক’ বা মহাকাশের আবর্জনা (বা জঞ্জাল) কাকে বলে? এক কথায় বলতে গেলে মানুষের পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে শুরু করে রকেটের ধ্বংসাবশেষ সাথে আরও নানান যন্ত্রপাতি যেগুলোর আয়ু ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে তাদেরই বলা হয় মহাকাশের আবর্জনা।  যেমন ধরা যাক আমাদের সবার প্রিয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এখন যার বয়স ৩৩ বছর এবং মনে করা হচ্ছে ২০৪০ সাল অব্দি সেটি সক্রিয় থাকবে অর্থাৎ আমাদের নতুন নতুন ছবি তুলে পাঠাবে এবং মহাবিশ্ব সম্বন্ধে আরও তথ্য জানতে সাহায্য করবে। কিন্তু ২০৪০ সালের পরে কি হবে টেলিস্কোপটির? কাজ করা থেমে গেলেও টেলিস্কোপটি কিন্তু মহাকাশেই থেকে যাবে। আজকে যেটি আমাদের কাছে এক অনন্য যন্ত্র আজ থেকে বেশ কিছু বছর পরে সেটিই হয়ে যাবে মহাকাশের আবর্জনা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিনিয়ত মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাচ্ছে নানান বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা মানবজাতির কল্যাণের স্বার্থে। এরই সাথে বেড়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতের আবর্জনার সংখ্যাও। জার্মান সংস্থা Statista-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মহাকাশে যে পরিমান আবর্জনা আছে তার সিংহভাগ রাশিয়ার দখলে (আবর্জনার সংখ্যা প্রায় ৭,০০০), দ্বিতীয় স্থানে আমেরিকা (আবর্জনার সংখ্যা প্রায় ৫,২০০) এবং তৃতীয় স্থানে চীন (আবর্জনার সংখ্যা প্রায় ৪,০০০)। ভারত এই তালিকায় আছে ষষ্ঠস্থানে (আবর্জনার সংখ্যা মাত্র ১১৫) অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে এখনও পর্যন্ত মহাকাশ বেশি অপরিষ্কার করেনি।  

মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা পরিতক্ত্য উপগ্রহ এবং রকেটের ধ্বংসাবশেষ |  ছবি – ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি

কার্যকরী সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ার পরে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি পরিতক্ত্য হয়ে যায় এবং পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতেই থাকে যা কিনা এক প্রকার ভয়ঙ্কয় প্রভাব ফেলতে পারে ভবিষ্যতে কৃত্রিম উপগ্রহ বা মহাকাশযান উৎক্ষেপণে। যেমন ধরুন, এই মুহুর্তে প্রায় ২,০০০-এর কাছাকাছি সক্রিয় কৃত্রিম উপগ্রহ ঘুরছে পৃথিবীর কক্ষপথে সাথে ঘুরছে প্রায় ৩,০০০-এর কাছাকাছি পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহ। এইভাবে যদি পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া উপগ্রহের সংখ্যা আমাদের কক্ষপথে বাড়তে থাকে তাহলে একটা সময় পরে যে কোনও উপগ্রহ বা মহাকাশযান উৎক্ষেপণে প্রবল সমস্যা দেখা দিতে বাধ্য কারণ উৎক্ষেপণের পরে মহাকাশে সংঘর্ষ ঘটার সম্ভাবনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এর ফলে হয়ত আমরা কোনও মহাকাশচারীকেও হারাতে পারি। এছাড়াও পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশের বড় টুকরোগুলো পৃথিবীতেও আছড়ে পড়তে পারে যখন তখন যা কিনা আমাদের জন্যে বেশ চিন্তার বিষয়। যেমন ধরুন ১৯৮৪ সালে পৃথিবীর নিম্নকক্ষপথে পাঠানো নাসার  Earth Radiation Budget Satellite (ERBS)। প্রায় ২,৫০০ কিলোগ্রাম ওজনের এই কৃত্রিম উপগ্রহটি ৩৮ বছর পরে ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসে আছড়ে পড়েছে পৃথিবীর বুকে। আবার এর আগের বছরই জুলাই আর নভেম্বর মাসে দু’টো রকেটের (চীনের লং মার্চ ৫-বি) ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়েছে যার ওজন কিনা প্রায় ২৩ টন! যদিও এই দুটি ঘটনাতেই কেউ আহত হননি কিন্তু কে বলতে পারে যে ভবিষ্যতে কেউ গুরুতর আঘাত পাবেন না ! 

আমেরিকার এয়ার ফোর্সের আধিকারিকরা প্রায় ২২০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি রকেটের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করছেন যা কিনা মঙ্গোলিয়াতে আছড়ে পড়েছে | ছবি – U.S Air Force

তাহলে কি এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার কোনও উপায় নেই? ইঞ্জিনিয়ার এবং বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু উপায় বা পদ্ধতি বের করেছেন মহাকাশের জঞ্জালের সংখ্যা কমানোর জন্যে। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল কোনও একটি বা অনেক পরিতক্ত্য যন্ত্রাংশকে কক্ষচ্যুত করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। এই কাজটি করার জন্যে RemoveDEBRIS নামে একটি মিশন শুরু করা হয়েছে যার তত্ত্বাবধানে আছে ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সারে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। এই মিশনের অন্তর্গত বেশ কিছু পদ্ধতি ইতিমধ্যেই সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে মহাকাশে। এই মিশনের কাজ অনেকটা পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরার মতো। প্রথমে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে বেশ বড় আকারের একটি জাল একটি পরিতক্ত্য উপগ্রহ বা অন্য কোনও যন্ত্রাংশের দিকে তাক করে ছোড়া হবে এবং সেটিকে জালবন্দী করে পৃথিবীতে ফেরত নিয়ে আসা হবে অথবা কক্ষপথ থেকে বের করে দেওয়া হবে এমন ভাবে যাতে করে সেটি পৃথিবীর কোনও মরুভূমি বা সাগরে পরে। এছাড়াও ইউরোপিয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) থেকে ClearSpace-1 নামক একটি মিশন শুরু করা হয়েছে যার মাধ্যমেও ভবিষ্যতে মহাকাশ থেকে অকেজো, পরিতক্ত্য রকেটের যন্ত্রাংশ, কৃত্রিম উপগ্রহ ইত্যাদি পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায়।

তাই আপাত দৃষ্টিতে আজকের দিনে মহাকাশকে বা বলা ভালো পৃথিবীর কক্ষপথকে জঞ্জাল মনে হলেও ভবিষ্যতে যাতে করে জঞ্জাল সাফ করা যায় সেই চেষ্টাও নিরন্তর করে চলছেন নানান দেশের বিজ্ঞানীরা।

RemoveDEBRIS মিশনের একটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতির ছবি | সৌজন্যে – বিবিসি

লেখক University of the Witwatersrand এর Centre for Astrophysics-এ কর্মরত গবেষক।

খবরটি শেয়ার করুণ

1 thought on “মহাকাশের জঞ্জাল”

  1. Pingback: Indian Astronomy: ভারতবর্ষ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা (প্রথম কিস্তি) - উত্তরাপথ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি

উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা  ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top