

উত্তরাপথঃ বয়সের সাথে সাথে আপনার মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ রাখতে চান? এর জন্য আপনাকে জিমে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করতে হবে না — দিনে মাত্র পাঁচ মিনিটের দ্রুত হাঁটার কৌশলটি এই কাজটি করতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাডভেন্টহেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে দিনে মাত্র পাঁচ মিনিট দ্রুত হাঁটা, জলের অ্যারোবিক্স বা হালকা জগিং আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে।এক্ষেত্রে মাঝারি থেকে জোরালো ব্যায়াম আপনার হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে,এটি বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত চিন্তাভাবনা, স্মৃতিশক্তি উন্নত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা উন্নত করার সাথে সম্পর্কিত।
গবেষণায় ৬৫ থেকে ৮০ বছর বয়সী ৫৮৫ জন বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। এতে তারা তাদের ২৪ ঘন্টা কীভাবে ঘুমাচ্ছেন, আরাম করছেন বা সক্রিয় আছেন তা ট্র্যাক করা হয়েছে। দেখা গেছে যে যারা তাদের দৈনন্দিন রুটিনে দিনে সামান্য বেশী শারীরিক পরিশ্রম করেছেন তাদের চিন্তাভাবনা দ্রুত, মনোযোগ আরও তীক্ষ্ণ এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে, মস্তিষ্কের অবস্থার উন্নতিতে সবচেয়ে বড় সুবিধা দেখা গেছে তাদের মধ্যে যারা খুব কম করে হলেও দিনে মাত্র পাঁচ মিনিটের ছোট্ট একটা ওয়ার্কআউট করেছেন। এটি একটি ছোট পরিবর্তনের জন্য বড় জয়।
কেন এটি কাজ করে
গবেষকরা বলছেন যে এর সবকিছুই নির্ভর করে আমরা প্রতিদিন আমাদের সময় কীভাবে ব্যবহার করি তার উপর। ঘুমানো, বসা এবং নড়াচড়া করার জন্য আমাদের ২৪ ঘন্টা সময় আছে – এবং আমরা যত বেশি নড়াচড়া করি, বিশেষ করে উচ্চ তীব্রতায়, আমাদের মস্তিষ্ক তত ভাল কাজ করে ।যা আমাদের জীবনের সোনালী বছরগুলিকে তীক্ষ্ণ রাখার জন্য আপনার গোপন অস্ত্র হতে পারে।
“ছোট পরিবর্তনও একটি বড় পার্থক্য আনতে পারে,” গবেষণার প্রধান গবেষক ডঃ ম্যাডিসন মেলো বলেছেন। “শুধুমাত্র একটু বেশি শারীরিক কার্যকলাপ আপনার মস্তিষ্ককে দ্রুত চিন্তা করতে এবং আরও ভালভাবে কাজ করতে সাহায্য করতে পারে। এক্ষেত্রে কুকুরকে নিয়ে বাইরে হাঁটাতে যাওয়া, দ্রুত জলে সাঁতার কাটা , অথবা বাড়ির চারপাশে দ্রুত জগিং, এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলি আপনার মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন যে সক্রিয় থাকা আপনার স্বাস্থ্যের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করতে পারে, যেমন ঘুম এবং শক্তির মাত্রাকে। সক্রিয় থাকা আপনার মনকে ভালো রেখে ঘুমের ব্যাপারে সাহায্য করে এবং ভালো ঘুম আপনাকে পরের দিন আরও সক্রিয় হতে সাহায্য করতে পারে।যদিও এই ফলাফলগুলি আশাব্যঞ্জক, গবেষকরা জোর দিয়ে বলেন যে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলি সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট: দিনে সামান্য ঘাম কিন্তু আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য একটি গেম-চেঞ্জার হতে পারে।
তাই, আপনার স্নিকার্স বেঁধে নিন, দ্রুত হাঁটা শুরু করুন এবং আপনার মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করুন – মাত্র পাঁচ মিনিটই আপনার জীবনে এই পার্থক্য নিয়ে আসতে পারে!
সূত্রঃ “24-Hour time use and cognitive performance in late adulthood: results from the Investigating Gains in Neurocognition in an Intervention Trial of Exercise (IGNITE) study” by Audrey M Collins, Maddison L Mellow, Ashleigh E Smith, Lu Wan, Neha P Gothe, Jason Fanning, John M Jakicic, Chaeryon Kang, George Grove, Haiqing Huang, Lauren E Oberlin, Jairo H Migueles, M Ilyas Kamboh, Arthur F Kramer, Charles H Hillman, Eric D Vidoni, Jeffrey M Burns, Edward McAuley and Kirk I Erickson, 4 April 2025, Age and Ageing.
DOI: 10.1093/ageing/afaf072
আরও পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন