

সম্প্রতি ওড়িশার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (KIIT) এর একজন নেপালি ছাত্র এবং হরিয়ানার অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্নাতক ছাত্রের সাম্প্রতিক মর্মান্তিক আত্মহত্যা আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মানসিক স্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থার উপর স্পষ্ট আলোকপাত করেছে। এই ঘটনাগুলি বিচ্ছিন্ন নয়; এগুলি একাডেমিক চাপ, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন এবং মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ফাঁক প্রতিফলিত করে। এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে তাদের শিক্ষার্থীদের সামনে আসা ক্রমবর্ধমান সমস্যাগুলির ব্যাপারে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।
আজকের ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বৈচিত্র্যের ক্ষুদ্র জগৎ, বিভিন্ন অঞ্চল, অর্থনৈতিক পটভূমি এবং এমনকি জাতির শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করে। KIIT একাই ৪০,০০০ দেশীয় এবং ২,০০০ আন্তর্জাতিক ছাত্র ভর্তি করে, যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য নেপালি ছাত্রের দলও রয়েছে। তবুও, এই বৈচিত্র্য প্রায়শই কঠোর বাস্তবতার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে আফ্রিকা এবং প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আসা শিক্ষার্থীরা প্রায়শই বিচ্ছিন্নতা, বৈষম্য এবং সাংস্কৃতিক ভিন্নতার মুখোমুখি হয়। একজন সহকর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভের পর KIIT-এর নেপালি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের খারাপ পরিচালন ব্যবস্থাকে তুলে ধরে।
একজন শিক্ষার্থীর জীবন ক্যাম্পাসে শুধুমাত্র তার একাডেমিক কঠোরতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। অনেকের কাছে, এটি তাদের প্রথমবারের মতো বাড়ি থেকে দূরে, পরিচিত মানুষদের সাহায্য ছাড়া একা পথচলা । সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জেনেরিক কাউন্সেলিং কাঠামোর বাইরে গিয়ে সূক্ষ্ম, ব্যক্তিগতকৃত সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর আগে যখন IIT-মাদ্রাজ আত্মহত্যার ঘটনা তদন্ত করেছিল, তখন তারা একাডেমিক চাপ কমাতে ক্রীড়া কোটার মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করেছিল। এই পদক্ষেপগুলি অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়, তবে বৃহত্তর কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ।এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য যেমন ঠিক থাকবে সেইসাথে তারা তাদের ক্যাম্পাস জীবনের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করবে।
শিক্ষার্থীরা যখন বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হন তখন একটি “গ্লোবাল ক্যাম্পাস”-এর দৃষ্টিভঙ্গি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানগুলিকে সক্রিয়ভাবে এই সব ছাত্রদের মানসিক সমস্যাগুলি দূর করার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে এবং এমন জায়গা তৈরি করতে হবে যেখানে প্রতিটি কণ্ঠস্বর শোনা যায়। এর অর্থ হল নীতি নির্ধারণে ছাত্র সম্প্রদায়কে সামিল করতে হবে,সেইসাথে প্রান্তিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশস্ত করতে হবে চূড়ান্ত ক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা কেবল ট্র্যাজেডি নয় ,এটি শিক্ষা কাঠামোর দুর্বলতা। এই ব্যাপারে শিক্ষাবিদ থেকে নীতিনির্ধারক সবাইকে উদোগ নিতে হবে। একটি সহযোগিতামূলক এবং সহানুভূতিশীল ক্যাম্পাস সংস্কৃতি তৈরি করা কেবল শিক্ষার্থীদেরই উপকৃত করবে না সেইসাথে তাদের আগামী দিনের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার জন্যও প্রস্তুত করবে।
আরও পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন