

উত্তরাপথঃ আজকাল প্রোটিন নিয়ে চারদিকে হইচই—সুপারমার্কেটের তাক থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া, সর্বত্র “হাই-প্রোটিন” খাবারের ছড়াছড়ি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আসলেই কতটা প্রোটিন আমাদের শরীরের দরকার? বেশি খেলে উপকার হবে নাকি উল্টো ক্ষতি? চলুন জেনে নেওয়া যাক—
প্রোটিন কী আর কেন দরকার?
প্রোটিন হলো আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি পুষ্টি উপাদান। কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট যেখানে মূলত শক্তির জোগান দেয়, প্রোটিন কাজ করে শরীর গঠনে—
- নতুন টিস্যু তৈরি ও ক্ষত সারাতে সাহায্য করে
- হরমোন, এনজাইম ও নানা গুরুত্বপূর্ণ অণু তৈরি করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমাদের শরীর নিজে কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে, কিন্তু এটি অবশ্যই খাবার থেকে পেতে হয়। তাই প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিন থাকা জরুরি।


কতটা প্রোটিন যথেষ্ট?
সাধারণভাবে দিনে শরীরের ওজন প্রতি কেজিতে ০.৮ গ্রাম প্রোটিন দরকার।
যেমন, ৬৫ কেজি ওজনের একজন নারীর প্রয়োজন প্রায় ৫২ গ্রাম প্রোটিন।
তবে এটাই ন্যূনতম পরিমাণ।
- বয়স্ক মানুষ,
- ক্রীড়াবিদ,
- গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী মা—
তাদের আরও বেশি প্রোটিনের দরকার হয় (প্রতি কেজিতে ১.২–২ গ্রাম পর্যন্ত)।
বেশি প্রোটিন খেলে ক্ষতি হয় কি?
সাধারণভাবে সুস্থ মানুষের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন ক্ষতিকর নয়। কিডনির ক্ষতি, ক্যান্সার বা হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে একেবারে সীমাহীন খাওয়াও লাভজনক নয়।
কখন প্রোটিন খাবেন?
অনেকে মনে করেন ব্যায়ামের পর ৪৫ মিনিটের মধ্যেই প্রোটিন না খেলে মাংসপেশি নষ্ট হয়ে যাবে। আসলে এটা ভুল ধারণা। ব্যায়ামের পর কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত শরীর প্রোটিন শোষণ ও ব্যবহার করতে পারে। তাই দিনে মোট কতটা প্রোটিন খাচ্ছেন, সেটাই আসল কথা।
প্রোটিনের সেরা উৎস কী?
- প্রাণিজ উৎস: মাংস, মাছ, ডিম, দুধ
- উদ্ভিজ্জ উৎস: ডাল, সয়াবিন, বাদাম, বীজ, শস্যদানা
প্রাণিজ প্রোটিন সহজে শোষিত হয়, তবে সঠিক পরিকল্পনায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকেও সব প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া যায়। তাই প্লেটে বৈচিত্র্য রাখা জরুরি।
বাজারের “হাই-প্রোটিন” খাবার নিয়ে কী করবেন?
আজকাল প্রোটিনযুক্ত পপকর্ন, চিপস, চকলেটও বিক্রি হচ্ছে। এগুলো আসলে বেশি করে মার্কেটিংয়ের ফাঁদ। আসল উপকার পেতে চাইলে ভরসা রাখুন প্রাকৃতিক ও সুষম খাবারের ওপর।
সহজ নিয়ম
প্রতিটি প্রধান খাবারে (সকালের জলখাবার, দুপুর, রাত) প্লেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জায়গা রাখুন প্রোটিনের জন্য। সঙ্গে প্রচুর শাকসবজি, ফল, ভাত/রুটি বা অন্য শস্য রাখলে খাদ্যতালিকা সম্পূর্ণ হবে।
সারকথা হলো—প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন যথেষ্ট প্রোটিন খাওয়া দরকার, কিন্তু এটা নিয়ে অযথা আতঙ্ক বা অতিরিক্ত উন্মাদনা একেবারেই প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন