গাজায় ইজরায়েলের সামান্য ত্রাণ অনুমতি যথেষ্ট নয়: জাতিসংঘ

প্রীতি গুপ্তাঃ জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইজরায়েল গাজায় আরও ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দিলেও সেটিকে “সমুদ্রের একটি বিন্দু” বলেই মনে করছে তারা। কারণ, কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে প্রাণ বাঁচানোর জন্য জরুরি সাহায্য পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে, গাজায় খাদ্যের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর ইজরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়েছে, যাতে অন্তত একজন মারা গেছেন ও অনেকেই আহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টিতে আরও ১৪ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে।

ইজরায়েলি সাংবাদিক ড্যান পেরি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক চাপই ইজরায়েলকে কিছুটা ত্রাণ পাঠাতে বাধ্য করেছে। তার মতে, ইজরায়েলের কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই—একবার ত্রাণ দেয়, আবার কমিয়ে দেয়। তবে এখন দেশটি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কিছুটা নমনীয় হয়েছে।

তবে ইজরায়েলের জনগণের মধ্যেও এ নিয়ে মতবিরোধ আছে। কেউ কেউ মনে করেন, যুদ্ধ চলাকালীন ত্রাণ না দেওয়া স্বাভাবিক। আবার অনেকে মনে করেন, এই মানবিক অবহেলা ভবিষ্যতে দেশের জন্য নৈতিক ও আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে।

  • গাজার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুধু আজই (সকালের পর থেকে) ৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৯ জন ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
  • অপুষ্টিতে গত একদিনেই আরও ১৪ জন মারা গেছেন।
  • গাজায় শিশুদের জন্য দুধের (ইনফ্যান্ট ফর্মুলা) বড় সংকট দেখা দিয়েছে। ৪০,০০০-র বেশি শিশুর জীবন ঝুঁকির মুখে।

ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল গাজায় ১২০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, যা জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা বিতরণ করেছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, এখনো অনেক বিধিনিষেধ থাকায় প্রকৃত সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

ইজরায়েল গাজা সিটিতে ১০ ঘণ্টার জন্য হামলা বন্ধ রাখার কথা বললেও বাস্তবে বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের খ্রিস্টান অধ্যুষিত তায়বেহ গ্রামে ইজরায়েলি বসতির লোকেরা রাত ২টার সময় হামলা চালায়। তারা গাড়িতে আগুন লাগায় এবং ঘরবাড়িতে হিব্রু ভাষায় ঘৃণামূলক বার্তা লেখে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “যারা নিজেদের ধর্মের নামে এই কাজ করছে, তারা অপরাধী, কোনো ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না।”

ফ্রান্স ও সৌদি আরব নিউ ইয়র্কে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে, যেখানে দুই-রাষ্ট্র সমাধান (ইজরায়েল-ফিলিস্তিন আলাদা রাষ্ট্র গঠন) নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA) আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরান সফরে যাবে। ইরান একটি নতুন পারমাণবিক তত্ত্বাবধান কাঠামো প্রস্তাব দেবে বলে জানিয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top