

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনধারায় মাত্র তিনটি পরিবর্তনের মাধ্যমে টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৩১% কমানো সম্ভব।হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (PREDIMED-Plus) পরিচালনা করেন। ছয় বছরের পর্যবেক্ষণে তারা দেখেছেন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ এবং পেশাদারদের সহায়তায় ওজন নিয়ন্ত্রণ—এই তিনটি পরিবর্তন একত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
গবেষণার বর্ণনা
- অংশগ্রহণকারী সংখ্যা: ৪,৭৪৬ জন
- বয়স সীমা: ৫৫ থেকে ৭৫ বছর
- অবস্থা: সবাই অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলকায় ছিলেন এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন, তবে শুরুতে কারও টাইপ–২ ডায়াবেটিস ছিল না।
অংশগ্রহণকারীদের দুই দলে ভাগ করা হয়—
- ইন্টারভেনশন গ্রুপ
- ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস (Mediterranean diet) মেনে চলা।
- প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ক্যালোরির কম খাদ্য গ্রহণমাঝারি মাত্রার ব্যায়াম (দ্রুত হাঁটা, হালকা শক্তি ও ভারসাম্যের ব্যায়াম)
- পেশাদার সহায়তায় ওজন নিয়ন্ত্রণ
- কন্ট্রোল গ্রুপ:
- কেবল ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস, তবে ক্যালোরি সীমাবদ্ধতা বা ব্যায়ামের নির্দেশনা ছিল না।
ফলাফল
- ডায়াবেটিস ঝুঁকি হ্রাস: ইন্টারভেনশন গ্রুপের অংশগ্রহণকারীদের টাইপ–২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩১% কমে যায়।
- ওজন পরিবর্তন: গড়ে ৩.৩ কেজি কমে, যেখানে কন্ট্রোল গ্রুপে কেবল ০.৬ কেজি কমেছে।
- পেটের মেদ হ্রাস: কোমরের মাপ গড়ে ৩.৬ সেন্টিমিটার কমেছে (কন্ট্রোল গ্রুপে মাত্র ০.৩ সেন্টিমিটার)।
কেন কাজ করে এই পদ্ধতি?
ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাসে থাকে—
- প্রচুর ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য
- অলিভ অয়েলসহ স্বাস্থ্যকর চর্বি
- সীমিত পরিমাণে দুধজাত খাদ্য ও চর্বিহীন প্রোটিন
- প্রায় নেই বললেই চলে লাল মাংস
এই ধরনের খাদ্য ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায় ও শরীরে প্রদাহ কমায়। যখন এর সঙ্গে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক কার্যকলাপ যোগ হয়, তখন শরীরের ওজন এবং রক্তে শর্করা দুই-ই আরও ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বাস্তবে এই পরিবর্তনের ফলে প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে প্রায় ৩ জন ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পায়। বিশ্বের ডায়াবেটিস–মহামারির প্রেক্ষিতে এটি একটি বড় সাফল্য।
আরও পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন