প্যাসিফিক স্যামনের দুর্দশা: বেঁচে থাকার লড়াই

উত্তরাপথঃ প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্যামন এমন একটি মাছ যা অনেকেই জানেন এবং ভালোবাসেন। তারা ডিম পাড়ার জন্য উজানে সাঁতার কাটার জন্য বিখ্যাত, যাকে বলা হয় স্পনিং। এই মাছগুলি প্রশান্ত মহাসাগরে বাস করে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য নদী ও স্রোতে ভ্রমণ করে। তবে, আজ, প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্যামন সমস্যায় পড়েছে। তারা তাদের বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে এবং অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন যে পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে তারা অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে

কী কী সমস্যা হচ্ছে?

১. পরিবেশের পরিবর্তন

পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। এর ফলে নদীর জল গরম হয়ে যাচ্ছে। স্যামনের জন্য ঠান্ডা জল দরকার। গরম জলে তারা ভালোভাবে বাঁচতে পারে না। এছাড়া, বরফ গলার কারণে সমুদ্রের জলের ধরনও বদলে যাচ্ছে। এটা তাদের খাবার খুঁজে পেতে সমস্যা তৈরি করছে।

২. নদীতে বাঁধ

মানুষ বিদ্যুৎ বা জল সরবরাহের জন্য নদীতে অনেক বাঁধ তৈরি করেছে। এই বাঁধের কারণে স্যামন তাদের জন্মস্থানে ফিরতে পারছে না। ফলে তারা ডিম পাড়তে পারছে না, আর তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

৩. মাছ ধরার সমস্যা

অনেক মানুষ স্যামন মাছ ধরে। কিন্তু বেশি মাছ ধরার কারণে তাদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। এটা তাদের বংশ বাড়ানোর জন্য বড়  সমস্যা।

৪. দূষণ

নদী ও সমুদ্রে দূষণ বাড়ছে। কারখানার বর্জ্য, প্লাস্টিক আর রাসায়নিক পদার্থ জলে মিশে যাচ্ছে। এই দূষিত জল স্যামনের জন্য ক্ষতিকর। এতে তাদের শরীর খারাপ হয়, এমনকি মারাও যায়।

কেন স্যামন গুরুত্বপূর্ণ?

স্যামন শুধু সুন্দর মাছ নয়, এরা পরিবেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তারা সমুদ্র থেকে নদীতে  খাবার বয়ে আনে। এই খাবার অন্য প্রাণী, যেমন ভাল্লুক, পাখি আর ছোট মাছের জন্য উপকারী। স্যামন না থাকলে এই প্রাণীদেরও সমস্যা হবে। এছাড়া, অনেক মানুষ স্যামন মাছ খায়। এটি তাদের খাদ্যের একটি বড় অংশ।

আমরা কী করতে পারি?

স্যামনকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এখানে কিছু সহজ উপায় দেওয়া হলো:

  • নদী পরিষ্কার রাখা: আমরা নদীতে ময়লা ফেলব না। প্লাস্টিক বা ক্ষতিকর জিনিস জলে ফেলা বন্ধ করতে হবে।
  • মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণ করা: সরকারের উচিত মাছ ধরার পরিমাণ কমানো। এতে স্যামনের সংখ্যা বাড়তে পারে।
  • বাঁধে সাহায্য করা: বাঁধে এমন ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে স্যামন সহজে নদীতে যেতে পারে।
  • সচেতনতা বাড়ানো: আমরা সবাই মিলে মানুষকে স্যামনের গুরুত্ব বোঝাতে পারি।

প্যাসিফিক স্যামন আমাদের প্রকৃতির একটি অমূল্য সম্পদ। তাদের বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে এই সুন্দর মাছটি আমাদের পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারবে। আসুন, আমরা স্যামনের জন্য লড়াই করি এবং তাদের বেঁচে থাকার সুযোগ দিই।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সু-স্বাস্থের জন্য ক্যালোরি গ্রহণ প্রয়োজন,কিন্তু সমস্ত খাবারে ক্যালোরির মাত্রা সমান থাকে না

উত্তরাপথঃসু-স্বাস্থের জন্য ক্যালোরি গ্রহণ প্রয়োজন ,কিন্তু কিভাবে একজন ব্যক্তি তার সঠিক ওজন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যর মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারে । অনেক লোক বিশ্বাস করে যে ক্যালোরি গণনা সাফল্যের চাবিকাঠি। এক্ষেত্রে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তা হল সঠিক মাপে ক্যালোরি গ্রহণ , কিন্তু সমস্ত খাবারে ক্যালোরির মাত্রা সমান থাকে না।আমরা যে খাবার গ্রহণ করি তা আমাদের শরীর প্রক্রিয়া করে সেটিকে ক্যালোরিতে রুপান্তরিত করে । পরে আমরা সেই ক্যালোরিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করে থাকি।এই বিষয়ে কথা বলার জন্য, আমরা একজন নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ানের কাছে প্রশ্ন রাখি  আমরা যে ধরনের খাবার খাই তা আমাদের শরীরের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ। .....বিস্তারিত পড়ুন

ধানের সাধ ভক্ষণ : জিহুড়

ড.  নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: আশ্বিন সংক্রান্তিতে কৃষক সমাজের মধ্যে জিহুড় পার্বণ পালিত হয়। কৃষক সাধারণের মধ্যে জিহুড় পার্বণের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জিহুড় অর্থাৎ আশ্বিন সংক্রান্তির সময় বহাল জমিতে লাগানো ধান বা বড়ান ধানে থোড় আসতে শুরু করে। সুতরাং ধান গাছ গর্ভাবস্থায় থাকে। মানুষের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের আচার-সংস্কার পালন করা হয়। এই সংস্কারগুলির অন্যতম হলো " ন' মাসি " অর্থাৎ গর্ভাবস্থার নবম মাসে যে আচার -অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এর কিছুদিন পরেই সন্তানজন্মগ্রহণ করে। মানব- সমাজের গর্ভাবস্থাজনিত এই ধরনের আচার সংস্কারের সঙ্গে ধান গাছের গর্ভাবস্থার কারণে পালনীয় অনুষ্ঠান জিহুড়ের সাদৃশ্য থাকে দেখা যায়। সেই জন্য অনেকে জিহুড় অনুষ্ঠানকে ধান গাছের 'সাধভক্ষণ'  বলে থাকেন। জিহুড়-এ ধান গাছ .....বিস্তারিত পড়ুন

রাজা মহম্মদ ও সি সেল মিউজিয়াম

প্রিয়াঙ্কা দত্তঃ রাজা মহম্মদ, এমন একজন মানুষের নাম, যার ব্যাক্তিগত ইচ্ছার কাছে হেরে যায় সব বাধা। ইচ্ছার চেয়ে বলা ভালো নেশা। সামুদ্রিক প্রাণীদের খোল সংগ্রহের নেশা। যা তাঁকে ছোটবেলা থেকেই ছুটিয়ে নিয়ে বেরিয়েছে প্রায় তিরিশ বছর ধরে। আর সেই দীর্ঘ পথের শেষে , তিনি সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এশিয়ার বৃহত্তম ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাক্তিগত সংগ্রহশালা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সি সেল মিউজিয়ামটি বর্তমানে চেন্নাইয়ের মহাবলিপূরম মন্দিরের সন্নিকটে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট। রাজা মহম্মদ ছোট্ট বেলা থেকেই  সমুদ্র তট থেকে সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর দেহাংশ। কুড্ডালোর থেকে রামেশ্বরম এর সমুদ্রতট, সেখান থেকে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপিন্স প্রভৃতি দেশে গিয়েছেন ব্যাক্তিগত উদ্যোগে। সংগ্রহ করেছেন অসাধারণ সব সামুদ্রিক .....বিস্তারিত পড়ুন

চাকরি ছাড়ার পর ফেরত দিতে হলো অফিসে খাওয়া চায়ের দাম

উত্তরাপথঃ চা কে আমরা যতই বলি স্ট্রিট ফুড বলি না কেন আসলে এটি এমন একটি পানীয় যা বিশ্ব অর্থনীতির বিশ্বায়নকে চালিত করেছিল। দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্লান্তি কিংবা বিরক্তি কাজ করে, তা কাটাতেই প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি অফিসেই কম বেশি চা-কফি খাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছাড়ার পর দুই কর্মীকে অফিসে যত কাপ চা খেয়েছেন, তার বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। এই বিরল কাণ্ড ঘটেছে চীনে।ঘটনা চীনের আনহুই প্রদেশের। সেখানে দুই কর্মী চাকরি ছেড়েছিলেন। খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, আমরা অনেকেই চাকরি ছেড়ে থাকি। কিন্তু পরের ধাপে যা ঘটলো, তা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top