মুম্বাই চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনের ছানার জন্ম: মারাঠি নামের দাবিতে বিজেপি!

ছবি – এক্স হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া

উত্তরাপথঃ মুম্বই শহরের রাজনীতি এমনিতেই উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু এবার রাজনীতির রং লাগল পেঙ্গুইনের গায়েও! শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি—এবার দাবি উঠেছে, মুম্বাইয়ের চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের ছানাদের নাম রাখতে হবে মারাঠি ভাষায়। তাঁদের যুক্তি? এই ‘উড়ন্ত পাখি’ নাকি মহারাষ্ট্রের আদি বাসিন্দা!

বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কার তো রীতিমতো মিছিল করে জানিয়ে দিয়েছেন —“যখন বিদেশ থেকে পেঙ্গুইন আনা হয়েছিল বীরমাতা জিজাবাই ভোঁসলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় (যাকে সবাই রানিবাগ বলে চেনে), তখন আমরা মেনে নিয়েছিলাম যে তাদের নাম ইংরেজিতে হবে। কিন্তু  সদ্যজাত এই পেঙ্গুইন এখন তো মুম্বইতেই জন্মেছে! এই ছানারা একেবারে ঘরের, এদের নাম কি ‘লুসি’ বা ‘চকো’ হবে? মারাঠি নাম দিলে মন্দ কী?”

মুম্বাই পৌরসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কর্মীদের এই প্রতিবাদ দেখে মনে হতে পারে, এটা যেন পরিচয়ের রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিএমসিকে (বৃহন্মুম্বই পৌর কর্পোরেশন) একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কানে তুলছে কে? “বাচ্চা পেঙ্গুইনের নাম ঠিক করতে এত গড়িমসি! যেন ইউনাইটেড নেশনের ভোট লাগবে!” — কটাক্ষ করেন তিনি। বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কারের মতে, মারাঠি তো এখন ক্লাসিক্যাল ভাষা। তাহলে পেঙ্গুইনের নাম ‘রোমিও’ না হয়ে ‘ভাউ’ হতে দোষ কোথায়?

প্রসঙ্গত এই নামকরণ যুদ্ধ কিন্তু শুধু মুম্বইতেই নয়, এর আগেও দেখা গেছে অন্য দেশে।
চিলিতে, একবার স্থানীয়রা দাবি করেছিলেন, অ্যান্ডিজ পর্বতের পাশে জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের নাম রাখা হোক ‘পেপে’ বা ‘পেদ্রো’—একেবারে স্থানীয় স্টাইলে।

 জাপানে তো এক চিড়িয়াখানায় পান্ডার বাচ্চার নাম রাখার জন্য জনসাধারনের মধ্যে ভোটাভুটি হয়, এরপর জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নাম রাখা হয়।

 এমনকি কানাডায় একবার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে জন্মানো পেঙ্গুইনের নাম রাখা হয় ‘ম্যাপল’—তাদের জাতীয় গাছের নামে!

তাই ভাবুন, যদি বিদেশের পেঙ্গুইনেরাও ‘দেশি’ নামে পরিচিত হতে পারে, তাহলে মুম্বইয়ের আমাদের ঘরের পেঙ্গুইন ছানারা কেন পাবে না মারাঠি নাম? তবে এটা নিশ্চিত, পেঙ্গুইন ছানারা এ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। হয়ত চিড়িয়াখানার কাঁচের  জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছে—”নাম যাই হোক, মাছটা ঠিকমতো দিলেই হল!”

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top