

উত্তরাপথঃ দাঁত একবার গেলে আর ফেরে না। ছোটবেলার দাঁতের জায়গায় বড়দের দাঁত একবার উঠে গেলে সেটা সারা জীবন সঙ্গী হয়। আগে যেখানে দাঁত টিকতো ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত, এখন আমাদের দাঁত টিকিয়ে রাখতে হয় ৯০-১০০ বছর পর্যন্ত! তাই দাঁতের যত্নে একটু সচেতন হওয়াটা খুবই জরুরি।
১. দাঁত মাজার পর কুলি করবেন না!
আমরা অনেকেই দাঁত মেজে সঙ্গে সঙ্গে কুলি করে ফেলি। কিন্তু দাঁতের বিশেষজ্ঞ ডা. ম্যাথিউ মেসিনা বলছেন, এটা ঠিক নয়। দাঁত মাজার পর শুধু থুতু ফেলে দিন, কুলি করবেন না। কারণ, ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দাঁতে থেকে কাজ করতে সময় পায় না যদি কুলি করে ফেলেন।
যদি কুলিই করতে হয়, সেটা ব্রাশ করার আগে করুন — যেমন ফ্লসিংয়ের সময়।
২. দাঁত দিয়ে কাজ নয়, শুধু খাওয়া!
দাঁত দিয়ে বোতল খোলা, সুতা কাটার মতো কাজ অনেকে করে থাকেন। কিন্তু এসব অভ্যাসে দাঁতে চিড় বা ফাটল ধরতে পারে। দাঁতের কাজ শুধু খাওয়া, কিছু খোলা বা টানাটানি করা নয়।
৩. তেল টানা (অয়েল পুলিং) কি সত্যিই দরকারি?
অনেকে নারকেল তেল বা সরিষার তেল মুখে ঘুরিয়ে “অয়েল পুলিং” করেন। এটি আয়ুর্বেদিক পুরনো পদ্ধতি। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কার্যকারিতা নিয়ে এখনও পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। দাঁতে ব্যথা বা মুখে সংক্রমণ থাকলে এই অভ্যাসে সমস্যা হতে পারে।
৪. কাঠকয়লা দিয়ে দাঁত মাজা বিপজ্জনক!
সুন্দর সাদা দাঁতের আশায় অনেকে চারকোল টুথপেস্ট ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে বিপদ বাড়ে!
“চারকোল আসলে একধরনের ঘষা-মাখা জাতীয় পদার্থ, যেটা দাঁতের এনামেল ধ্বংস করে দেয়।” এনামেল একবার নষ্ট হলে আর ফেরে না। ফলে দাঁত দুর্বল হয়ে যায়।
৫. দাঁত মাজা কি ডায়েট কন্ট্রোল করে?
অনেকেই বলেন, দাঁত মাজলে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। এটা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। দাঁত মাজার পরে খাবার খেলে মুখে তেতো লাগে, তাই খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। তবে এটি ওজন কমানোর উপায় নয়।
৬. সারা দিন টুকটাক খাওয়ার বদলে একসঙ্গে খান
খাবার খেলে মুখের ব্যাকটেরিয়া চিনি খেয়ে অ্যাসিড তৈরি করে, যা দাঁত ক্ষয় করে।
দিনভর বারবার খেলে দাঁত সব সময় অ্যাসিডে ডুবে থাকে। তাই দিনের খাবারগুলো একত্রে খাওয়া ভালো — যেমন মিষ্টি খেতে হলে খাওয়ার পরেই খান, আলাদা করে না।
৭. দাঁতের ৪টি নিয়ম মানলেই সেরা আপনি!
- দিনে দুইবার ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজার অভ্যাস করুন
- প্রতিদিন ফ্লস বা দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করুন
- নিয়মিত দাঁতের ডাক্তার দেখান
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান
এই চারটি সহজ অভ্যাস মানলেই আপনি নিজের চেয়ে ১% ভালো থাকবেন! দাঁতের যত্ন মানেই জীবনের বিনিয়োগ।
একটা কথা মনে রাখবেন — দাঁত একবার নষ্ট হলে আর ফিরে আসে না। কাজেই ছোট ভুলে বড় ক্ষতির আগেই সতর্ক হন। দাঁত সুস্থ তো জীবন মিষ্টি!
আরও পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি। ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি। এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে। এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন