তামিলনাডুর ঘটনা আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় এক প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিল

 উত্তরাপথঃ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় (Banking System) এক চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম আমরা। ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাডুর মার্কেনটাইল ব্যাঙ্কে (Tamilnad Mercantile Bank-TMএ)।ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার ভুল করে ৯ হাজার কোটি টাকা চেন্নাইয়ের এক ক্যাব চালকের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে ফেলে। চেন্নাইয়ের ওই ক্যাব চালক তামিলনাডুর পালানির বাসিন্দা। শহরে ট্যাক্সি চালান। নাম রাজকুমার। আচমকা ব্যাঙ্ক থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা ট্রান্সফারের মেসেজ পেয়ে তিনি অবাক হয়ে যান। ব্যাপারটা সত্যি কিনা আন্দাজ করতে তিনি তাঁর এক বন্ধুর অ্যাকাউন্টে ২১ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন। তার কিছুক্ষণ পর অবশ্য ব্যাঙ্ক তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকাটা ডেবিট করে নেয়। ঘটনার ৭ দিন বাদে ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সিইও এস কৃষ্ণণ এ ঘটনার জেরে ইস্তফা দেন। তবে এই ঘটনার জেরেই ব্যাঙ্কের সিইও ইস্তফা দিয়েছেন তেমনটা অবশ্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেনি।তবে কৃষ্ণণের বক্তব্য, ব্যক্তিগত কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, আমার মেয়াদের দুই তৃতীয়াংশ এখনও বাকি রয়েছে এবং কিছু ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দিচ্ছি।

প্রসঙ্গত গত বছরই ব্যাঙ্কের সিইও হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ইস্তফার পর ব্যাঙ্কের বোর্ডের বৈঠক ডাকা হয়। তার পর রেগুলেটরি ফাইলিংয়ে জানানো হয়েছে যে কৃষ্ণণের ইস্তফা গ্রহণ করে রিজার্ভ কাছের পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। যতক্ষণ না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কিছু জানাচ্ছেন ততদিন দায়িত্ব পালন করে যাবেন কৃষ্ণণ।

এখন প্রশ্ন হল আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা যেখানে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থ সুরক্ষিত রাখতে  টাকা জমা রাখেন সেখানে ব্যাঙ্কের এই জাতীয় দায়িত্বহীন কাজ ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সেইসাথে ধরনের ত্রুটিগুলি দূর করতে,সঠিক এবং নিরাপদ আর্থিক লেনদেন নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যে কতটা জরুরী তা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে।

 ভুল ক্রেডিটের ঘটনা নিঃসন্দেহে ব্যাঙ্কের সুনামকে প্রভাবিত করেছে এবং জনসাধারণের আস্থা নষ্ট করেছে। আস্থা পুনর্গঠন গ্রাহক এবং স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে  ব্যাংকের ভবিষ্যত সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।ঘটনাটি যেহেতু ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ব্যাঙ্কের দায়বদ্ধতা এবং দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করে৷ সিইও-এর পদত্যাগ,এর জবাবদিহিতার একটি  নিদর্শন হতে পারে কিন্তু এই ত্রুটির জন্য অন্যান্য কারণগুলিরও  পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের প্রয়োজন আছে।সেই সাথে ব্যাঙ্কিং প্রযুক্তির উন্নতিতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ত্রুটিগুলি এড়ান যায়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বেতন, মাসে ৩০,০০০ আর সম্পত্তির মালিকানা ৭ কোটির বেশী

উত্তরাপথ: এ এক দুর্নীতির অনন্য নজির যা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি কে লজ্জায় ফেলবে । দুর্নীতির এই অভিযোগটি উঠেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ হেমা মীনার বিরুদ্ধে।মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পর হেমা মীনা প্রচার মাধ্যমের নজরে আসে । এখন প্রশ্ন কে এই হেমা মীনা ? মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ যিনি মাসে ৩০,০০০ টাকা আয় করেন । দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার বাড়ি থেকে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ি, ২০,০০০ বর্গফুট .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top