I.N.D.I.A.জোটে তৃণমূলকে নিয়ে হাই কমান্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কৌস্তভ

উত্তরাপথ; সম্প্রতি I.N.D.I.A. জোট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী  বলেছেন, “আমরা পুকুর, বৃহত্তর জোট হল নদী। এখন পুকুর ছেড়ে নদীর দিকে যাওয়ার সময়। পুকুর নিয়ে ভেবে বসে থাকলে হবে না।” এদিন তারই পালটা দিলেন কৌস্তভ। বুঝিয়ে দিলেন হাই কমান্ড যাই বলুক না কেন, তা মেনে চোখ বুঝে নেওয়া হবে না।

সোমবার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সম্পর্ক নিয়ে কৌস্তভ লেখেন, ‘পুকুর, নদী বুঝিনা। দিল্লির স্বার্থে আর গিনিপিগ হতে রাজি না। তৃণমূল আমাদের চোখে চোর ছিল, আছে ও থাকবে। তৃণমূল আমাদের চোখে গণতন্ত্রের হত্যাকারী ছিল, আছে ও থাকবে।’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে I.N.D.I.A.  জোট তৈরি করেছে বিরোধীরা।এই জোটে বিজেপি বিরোধী প্রায় সব দলকে ‘রাজনীতির অঙ্ক মেনে সামিল কার হয়েছে । আম আদমি পার্টি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মতো প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন সোনিয়া ও রাহুল ২০২৪ এর দিল্লী দখলের উদ্দেশ্যে । এরফলে বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক স্তরে বিদ্রোহের মুখে পড়তে হচ্ছে কংগ্রেসকে

সম্প্রতি দিল্লির আমলা বিল নিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। দলের নির্দেশিকা অমান্য করে মোদি সরকারের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র তথা কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত। এবার হাই কমান্ডের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আইনজীবী তথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, I.N.D.I.A. জোট নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে বঙ্গ কংগ্রেসের একাংশের মধ্যে। কারণ, বাংলায় তৃণমূলের দাপটে কোণঠাসা শতাব্দী প্রাচীন দলটি। সাগরদিঘি মডেলও ফেল।তৃণমূলের দ্বারা সমানে চলছে দল ভাঙানো।ধীরে ধীরে প্রদেশ কংগ্রেস দলটি অস্তিত্ব হীনতার দিকে যাচ্ছে । এমত অবস্থায় বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী একমাত্র গড় আগলে রেখেছে,তাও তিনি তার গড় কতদিন আগলাতে পারবেন তা বলা যাচ্ছে না। যদিও অধীর চৌধুরীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক এখন অনেকটা ‘ভালো।

তবে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের ২০২৪ নির্বাচনে তৃণমূলের সাথে জোট করা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।জোট বিরোধী শিবিরের বক্তব্য,তৃণমূলের সাথে জোট করা মানে রাজ্যে দলের অস্তিত্ব শেষ করে দেওয়া ।জোটের নিয়ম মেনে যে দল যেখানে শক্তিশালী সে সেখানে প্রার্থী দেবে । তাই যদি হয় রাজ্যে তৃণমূল বহরমপুর ছাড়া একটি আসনও কংগ্রেসকে ছাড়বে না ।  

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top