I.N.D.I.A.জোট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য তথাগত রায়ের

উত্তরাপথ: সম্প্রতি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো সারা বিশ্বে স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ইউনেস্কো জানিয়েছে, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে, সেই সঙ্গে শিক্ষাগত পারফরম্যান্স কমে যায়।মোবাইলের সামনে শিশু দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে শিশুদের মানসিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব পড়ে।  I.N.D.I.A.জোট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়।তিনি  N.D.A. বিরোধী I.N.D.I.A. জোটকে একটি ‘চিরিয়া ঘর’ বলেছেন। তার কথায় “লালুর মতো একজন দোষী সাব্যস্ত চোর, সিপিআই(এম)-এর মতো একগুচ্ছ স্টালিনবাদী গণহত্যাকারী ….. মমতার মতো মোল্লা-পূজারী একনিষ্ঠ শিষ্য, একজন কেজরিওয়াল যিনি জানেন না তিনি ডান না বাম- কী চিড়িয়াখানা!”। অন্যদিকে বিরোধী শিবির ব্রিজভূশন চরণ সিং ,মনিপুর সমস্যা ,অজিত পাওয়ার সহ একাধিক ইস্যু তে বিজেপিকে আক্রমণ করছে। সরকার এবং বিরোধী পক্ষের আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে একটা জিনিষ স্পষ্ট আমাদের সরকার এবং বিরোধী উভয় রাজনৈতিক দলগুলিতে বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উপস্থিতি রয়েছে যা উদ্বেগের বিষয়।রাজনৈতিক দলগুলি জেনেবুঝে এই সব ব্যক্তিদের আশ্রয় দেয় ।

এটা সত্য যে N.D.A. ও I.N.D.I.A .জোট উভয় ক্ষেত্রেই অপরাধমূলক রেকর্ডের বহু সদস্য রয়েছে। এই সব বিতর্কিত লোকেদের প্রার্থী করায় রাজনৈতিক দলগুলোর সততা ও নৈতিক মান নিয়ে প্রশ্ন উঠা সত্বেও রাজনৈতিক দলগুলি এই সমস্ত সদস্যকে নির্বাচনে  প্রার্থী করে। তবে একথাও সত্য যে কোনও দলেরই সকল সদস্যের অপরাধমূলক পটভূমি নেই ,তাই রাজনৈতিক দলের সদস্য মানেই অপরাধী এই সরলীকরণ এড়ানো উচিত।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে কোনও কোনও স্থানে  দুর্বল পার্টি কাঠামোর কারণে দলগুলি নির্বাচনে জেতার জন্য সম্পদ এবং প্রভাবসম্পন্ন ব্যক্তিদের  তাদের অপরাধমূলক ইতিহাস জানা সত্বেও তাদের নির্বাচনে পার্টির টিকিট দেয়। এই সমস্ত ব্যক্তিরা তাদের সম্পদ ,পেশী শক্তি এবং ভোটার সংঘবদ্ধকরণের ক্ষেত্রে সুবিধা কারণে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে খুব সহজেই নির্বাচনে জয়লাভ করে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে, ভোটাররা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের শক্তিশালী নেতা হিসাবে মনে করে এবং তাদের সমস্যার প্রতিকারের আশায় এমন ব্যক্তিদের তারা নির্বাচিত করে ।

 তাছাড়া ভারতীয় আইনি ব্যবস্থা “দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ” নীতির অধীনে কাজ করে। এর মানে হল যে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিরা যতদিন না দোষী সাব্যস্ত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য। এই আইনি বিধান ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও খুব সহজেই রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।আবার অনেক সময় ভোটররা রাজনীতিবিদদের অপরাধমূলক রেকর্ড সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না ,আমাদের দেশের বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ভোটাররা নির্বাচনী প্রার্থী পছন্দ করার সময় অন্যান্য কারণ যেমন জাত, ধর্ম বা দলীয় সদস্যতাকে বেশী অগ্রাধিকার দেয়।

আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত N.D.A. ও I.N.D.I.A.জোট নিয়ে বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য চলতে থাকবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top