কর্ণাটক কার হতে চলেছে ?

উত্তরাপথ

আগামী ১০ তারিখ কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচন । এই নির্বাচনের ফলাফল কার দিকে যাবে এখনই নিশ্চয় করে কিছু বলা যাচ্ছেনা । কারন নির্বাচনে  দুটি  প্রধান দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কর্ণাটক রাজ্যে ব্যাপক দলীয় বিদ্রোহ এবং বড় বড়  নেতাদের দলত্যাগের মত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তেমন  কংগ্রেসও দলের মধ্যে ফাটলের সাথে মোকাবিলা করছে।  বিজেপির কিছু হেভিওয়েট নির্বাচনী টিকিট প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু এখনও ইয়েদিউরপ্পা এবং সিএম বাসভরাজ বোমাইয়ের সমর্থন করছে  । এদিকে, কংগ্রেস  কর্ণাটকে তার লিঙ্গায়েত ভোটের ব্যাঙ্ক  বাড়ানোর  সুযোগ পেতে পারে দুই বিশিষ্ট বিজেপি নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করে।  কিন্তু লিঙ্গায়ত ভোট পর্যাপ্ত নয়।  বিশ্লেষকদের মতে, একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে জয়ের জন্য সব জাতি এমনকি উপজাতির সমর্থন সমান গুরুত্বপূর্ণ। আবার  জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) কিংমেকার হিসাবে আবির্ভূত হবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে।

যদিও কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন যে কংগ্রেসের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, অন্য কেউ বিশ্বাস করেন যে বিজেপি তার নির্বাচনী কৌশলে পরিবর্তন ঘটিয়ে ঠিক ক্ষমতা ধরে রাখবে।  রাজ্যের রাজনৈতিক মেজাজের বিশ্লেষণ অব্যাহত থাকলেও, আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি এবং কংগ্রেসের পক্ষে কী প্রবণতা রয়েছে তা একবার দেখে নেওয়া যাক ।

 লিঙ্গায়েত ফ্যাক্টর

কর্ণাটকে জাফরান দলটিকে “লিঙ্গায়ত দল” হিসাবে দেখা হয়। এই ধারণাটি মাথায় রেখে, বিজেপি বিএস ইয়েদুরাপ্পার সমর্থন ধরে রাখতে কোনও কসুর করেনি ।  ইয়েদিউরপ্পা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সাথে যুক্ত একজন বড় লিঙ্গায়ত নেতা।বিজেপিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আরও একজন লিঙ্গায়ত নেতা বোমাই রয়েছেন।  এছাড়াও, কেএস ঈশ্বরাপ্পার পরিবারের পরিবর্তে লিঙ্গায়ত নেতা চন্নাবাসাপ্পাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।

দুই লিঙ্গায়ত নেতা – প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাদি বিজেপি থেকে কংগ্রেসে চলে যাওয়ায় কংগ্রেসে আশার সঞ্চার হয়েছে৷  কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া বলেছেন যে শেট্টারের অন্তর্ভুক্তি দলকে “বুস্ট” দেবে।সেই সাথে কংগ্রেসও বিজেপিকে “লিঙ্গায়ত বিরোধী” দল হিসেবে প্রজেক্ট শুরু করেছে।

 উপ-প্রজাতি সমর্থন

এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, “বিজেপি উপ-জাতি (এসটি, এসসি, ওবিসি) এবং বিশেষ করে মুসলমানদের নিয়ে মাথা ঘামায় না”।  এর প্রভাব পড়তে পারে আগামী নির্বাচনে ভোটের বাক্সে । সেইসাথে হিজাব, হালাল এবং মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ করা চার শতাংশ সংরক্ষণ অপসারণ প্রভৃতি বিষয় মুসলিম ভোটকে প্রভাবিত করতে পারে আসন্ন নির্বাচনে ।

মুসলিম অধিকার এবং স্বাধীনতার বিষয়গুলি এবং বিজেপি কীভাবে সম্প্রদায়ের বিশ্বাসের অপব্যবহার করেছে তা নিয়ে কংগ্রেস প্রচার করছে । এক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে তিনটি বিষয় মুসলিমদের কংগ্রেসকে ভোট দিতে বাধ্য করবে। ১ , চার শতাংশ মুসলিম সংরক্ষণ বাতিল করা এবং হিন্দুদের অন্তর্গত দুটি প্রধান সম্প্রদায় – লিঙ্গায়ত এবং ভোক্কালিগাসকে দেওয়া। ২, গোহত্যা নিষিদ্ধ করা, যা মুসলমানদের মতে, তাদের খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের উপর সরাসরি আক্রমণ। ৩, হল হিজাব ইস্যু যা হাজার হাজার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছে, বিশেষ করে উপকূলীয় কর্ণাটকে,

কিন্তু ,এটা প্রত্যাশিত যে বিজেপি রাজ্যে তাদের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কংগ্রেসকে পাল্টা আঘাত করবে।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে তারকা প্রচারক হিসেবে ধরে রাখার বিজেপির পদক্ষেপ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে।  প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের দুর্নীতির রেকর্ড এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে কংগ্রেসের ব্যর্থতার বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।তবে শেষ হাসি কে হাসবে তার জন্য আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


 সম্পাদকীয়

পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন

SAFF Final: কুয়েতকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত

উত্তরাপথ: SAFF Final (সাফ) ফুটবলের শিরোপা হাতছাড়া করেনি এবারও ভারত। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে শিরোপা নিজেদের কাছেই রেখে দিল Blue Tigers -রা। এই নিয়ে রেকর্ড ৯ম বার এই শিরোপা নিজেদের কাছে রাখল সুনিল ছেত্রীরা। টাইব্রেকারে তারা কুয়েতকে হারিয়েছে ৫-৪ ব্যবধানে । তবে এই জয় খুব সহজে পায়নি সুনিল ছেত্রীরা। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে শিরোপা দখলে নিল ভারত। নির্ধারিত সময়, অতিরিক্ত সময় অতঃপর টাইব্রেকার; তবুও নিষ্পত্তি হয়নি শিরোপার। অবশেষে ভারত শিরোপা বুঝে পায় সাডেন ডেথে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top