

উত্তরাপথঃ সম্প্রতি পাহাড়ি মুরগির (Chickadees )উপর বিজ্ঞানীদের এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে উন্নত চিন্তা করার দক্ষতা পাহাড়ি মুরগিদের দীর্ঘজীবী হতে এবং আরও বাচ্চা জন্ম দিতে সাহায করে।ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ক্যারি ব্রাঞ্চের নেতৃত্বে দশ বছর ধরে এই গবেষণা চলে, তাতে নেভাদা ইউনিভার্সিটি, রেনো এবং ওকলাহোমা ইউনিভার্সিটির গবেষকরা অংশ নেয়। তারা ২২৭ টি পাহাড়ি মুরগির উপর তাদের গবেষণাটি করেন। তারা দেখেছে যে মুরগিরা ভাল স্মৃতিশক্তি এবং শেখার দক্ষতা সম্পন্ন তারা বেশি দিন বাঁচে অর্থাৎ পৃথিবীতে “যোগ্যতমের বেঁচে থাকার” ধারণাটি প্রকৃতিতে সাধারণ একটি সত্য হলেও, এই গবেষণাটি দেখায় যে বেঁচে থাকার জন্য স্মার্ট হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
সায়েন্স (Science ) জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি নিশ্চিত করে যে বুদ্ধিমান পাখিদের দীর্ঘজীবী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। সায়েন্স জার্নালে ব্যাখ্যা করেছে যে প্রাণীরা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে এবং পুনরুত্পাদন করতে চায়, স্মার্ট হওয়া তাদের উভয় ক্ষেত্রেই সাহায্য করে। পাহাড়ি মুরগির(Chickadees) জন্য, এর অর্থ হল খাবার কোথায় পাওয়া যাবে তা জানা, সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং তারা কোথায় রেখেছে তা মনে রাখা যাতে তারা পরে খেতে পারে।
জ্ঞানীয় দক্ষতা বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অনেক গবেষণা মস্তিষ্কের আকারের মতো পরোক্ষ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করেছে। Chickadees ছোট মস্তিষ্কের ছোট পাখি, তবুও তারা সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালায় তাদের চিন্তা করার ক্ষমতা মূল্যায়ন করার জন্য নির্ধারিত পরীক্ষায় ভাল পারফর্ম করেছে।সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে মুরগির বুদ্ধিমত্তা তাদের সামাজিক আচরণের সাথে যুক্ত হতে পারে, তবে এই ধারণাটি নিয়ে এখনও অন্বেষণ করা হচ্ছে। তবে যা স্পষ্ট তা হল যে মুরগিগুলি তাদের ব্যবহারিক জ্ঞানকে লুকিয়ে রাখা খাবার খুঁজে বের করার জন্য ব্যবহার করে এবং যারা এটিতে ভাল তারা বেশি দিন বাঁচার প্রবণতা রাখে।মুরগিগুলি ( Chickadees) উত্তর আমেরিকায় সাধারণ এবং শীতকালে খাওয়ার জন্য ৮০,০০০ পর্যন্ত বীজ লুকিয়ে রাখতে পারে। গবেষকরা বিশেষ ফিডার ব্যবহার করে পাখিদের জ্ঞানীয় দক্ষতা পরীক্ষা করেছেন।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তথ্য সংগ্রহ করার পর, গবেষণায় দেখা গেছে যে উন্নত জ্ঞানীয় দক্ষতা সম্পন্ন মুরগিরা কম জ্ঞানীয় দক্ষতা সম্পন্ন মুরগিদের তুলনায় গড়ে দুই বছর বেশি বাঁচে। মুরগি বছরে একবার প্রজনন করে, সাধারণত প্রায় সাতটি ডিম দেয়। যাদের স্মৃতিশক্তি ভালো তাদের সন্তানের সংখ্যা কম জ্ঞানীয় ক্ষমতা সম্পন্ন মুরগিদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। গবেষণায় আরও দেখানো হয়েছে যে মহিলা মুরগির বুদ্ধিমান পুরুষদের সাথে সঙ্গম করলে তাদের বাচ্চা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে উন্নত চিন্তার দক্ষতা সহ পর্বত মুরগিদের দীর্ঘকাল বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। এই দক্ষতাগুলি তাদের খাদ্য খুঁজে পেতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চরম আবহাওয়া পরিবর্তন সহ কঠিন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।
সূত্রঃ “Spatial cognitive ability is associated with longevity in food-caching chickadees” by Joseph F. Welklin, Benjamin R. Sonnenberg, Carrie L. Branch, Virginia K. Heinen, Angela M. Pitera, Lauren M. Benedict, Lauren E. Whitenack, Eli S. Bridge and Vladimir V. Pravosudov, 5 September 2024, Science.
DOI: 10.1126/science.adn5633
আরও পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন