উত্তরাপথ


ছবি: রমেশ মাহাতো, পুরুলিয়া
পশ্চিমবঙ্গে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদার দাবিতে কুর্মি সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ আন্দোলন বারবার ব্যার্থ হচ্ছে এর দায় কার? কুর্মি সম্প্রদায়ের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী জঙ্গলমহল থেকে পাঁচটি ভিন্ন গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এবারের এই বিক্ষোভ চলছিল। হাজার হাজার কুর্মি সম্প্রদায়ভুক্ত লোক এই আন্দোলনে সামিল হচ্ছিল নিজেদের পুরানো জাতিসত্ত্বা ফেরত পাওয়ার জন্য। কিন্তু তারপরও কেন এই আন্দোলন সফলতার মুখ দেখল না? এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ত্রুটি ছিল এটি বর্তমান সময়ের সাথে কোনভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। আন্দোলনের নামে বিক্ষোভকারীরা খড়গপুর, খেমাসুলি এবং পুরুলিয়ার সমস্ত ট্রেন অবরোধ করে রাখল ৫দিন। এর জেরে বাতিল হল প্রায় এক হাজার ট্রেন। শুধু রেল লাইন নয়, পাশেই ৫ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কুড়মি সমাজ। ফলে রেল পরিষেবার পাশাপাশি সড়ক পথও বন্ধ হয়ে রইল। অবরোধের জেরে লাখ লাখ সাধারণ মানুষকে চূড়ান্ত অসুবিধার সম্মুখীন হতে হল। এরফলে এই আন্দোলন তার সহ নাগরিকদের সমর্থন হারাল। এইভাবে দিনের পর দিন বেআইনি ভাবে রেল অবরোধ করে রাখার জন্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে এই আন্দোলন তুলে দেওয়া হল। এখন প্রশ্ন এই জাতীয় বেআইনি আন্দোলন কি সমর্থন যোগ্য? এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসেও এই একই দাবী নিয়ে আন্দোলন করেছিল কুর্মিরা। শেষে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তারা সাময়িক ভাবে আন্দোলন থেকে সরে এসেছিল।
এই আন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বোঝা উচিত ছিল এই জাতীয় আন্দোলন আমাদের দেশের কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারই সমর্থন করবে না তারা প্রশাসনের মদতে আন্দোলন তুলে দেবেন। তাহলে কেন লাখ লাখ কুড়মি যুব সমাজকে বোঝানো হল তারা এই পথে তাদের হারানো জাতিসত্ত্বার পরিচয় ফেরত পাবে? এই আন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন ভবিষ্যতে এই আন্দোলনকে প্রশাসন কোনদিনও বিচ্ছিন্নতা বাদের তকমা দিতে পারে কিনা? তখন আন্দোলনকারী যুবকদের ভবিষ্যৎ কি হবে? এর দায় বা কে নেবে? যেখানে কুড়মিদের দাবী ন্যায় সঙ্গত তবু আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সাধারণ জনজীবনের কোনও ক্ষতি না করে শান্তিপূর্ণ অবস্থান আন্দোলনের পথে কেন গেলেন না? যেমনটা এস এস সি চাকুরী প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছেন এবং বিচার বাবস্থার হস্তক্ষেপে তারা তাদের ন্যায্য আধিকারও ফিরে পাচ্ছেন।


ছবি: রমেশ মাহাতো, পুরুলিয়া
প্রসংগত কুড়মিরা ব্রিটিশ শাসনকালে এই দেশে ১৯১৩ এবং ১৯৩১ পর পর দুটি সমীক্ষায় ভারতের ১৩টি আদিবাসী কোল, ভিল, মুন্ডাদের সাথে কুর্মিরাও অন্তর্গত ছিল। কিন্তু ১৯৪৯ সালে সংবিধান রচনার পর থেকে তাদের সেই জাতিসত্তা তাদের থেকে নিয়ে নেওয়া হয়। এরজন্য সেই সময় কোনও কমিশন বসেনি, কোনও সি আর আই রিপোর্টও চাওয়া হয়নি বা কোনও রকম শুনানি হয়নি। এই ক্ষেত্রে কুড়মিদের বক্তব্য ব্রিটিশদের সমীক্ষার ১৩ টি আদিবাসী তালিকা থেকে শুধুমাত্র কুর্মিদের বাদ দেওয়ার আসল কারন ছিল ছোটনাগপুর এলাকার কুর্মিদের জমি অধিগ্রহন করা।কুর্মিরা উপজাতির তালিকাভুক্ত থাকলে খনি প্রধান এলাকার জমি যা ৯০ শতাংশ কুর্মিদের রায়ত জমি ছিল তা সরকার নিতে পারতো না।


ছবি: রমেশ মাহাতো, পুরুলিয়া
আরও পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি
উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি। ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি। এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে। এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন