বাংলাদেশ : ধর্ম কারার প্রাচীরে বজ্র হানো

বাংলাদেশে আন্দোলনের এই ছবি এক্স হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া

জীবনকুমার সরকার: আগস্ট মাসে বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের সেই বীভৎস রূপ দেখে আমরা তখনই পরিষ্কার অনুমান করেছিলাম, এই আন্দোলন বাহ্যত কোটা সংস্কারের আন্দোলন হলেও এর অভ্যন্তরীণ রূপরেখা কিন্তু ভালো হবে না। মুক্তচিন্তার মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সে–সময় অনেকেই আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি। আশাকরি এখন তারা ভালো করেই বুঝে গেছেন যে, বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাজনীতি তারা কমই বোঝেন। আগস্ট মাসের কোটা আন্দোলনের মধ্যে স্পটভাবে নেপথ্যে ছিলো ইসলামী মৌলবাদী নেতাদের অন্তর্ভুক্তি। আমাদের এখানে অনেকেই মনে করলেন এটা স্বৈরাচারিতার বিপক্ষে প্রগতি ও স্বাধীনতার পক্ষে গণ–অভ্যুত্থান। এইভাবে দেখাটা মারাত্মক ভুল ছিলো। সময় এসে সেটা বুঝিয়ে দিলো।
শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের যে কোনোকিছু ভুল ছিলো না, তা আমরা বলছি না। আওয়ামী লীগ সরকারের দুটো চরম দিক ছিলো। একটি দিক ছিলো কঠোরভাবে বিরোধীদের দমন করার দিক। অন্যটি হলো, উগ্র ইসলামী শক্তির সঙ্গে নানাভাবে আপস করে দমিয়ে রাখার দিক। সব মিলিয়ে তাঁর সময়েও সে–দেশের সংখ্যালঘুরা যে খুব ভালো ছিলো, তা কিন্তু নয়। ফলে হাসিনার আমলেও সংখ্যালঘুরা বিপন্নতা সবসময়ই বোধ করেছেন। আসলে আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সারা বছরই একটা উদ্বেগের মধ্যে বাস করে, যা হাসিনার সময়ও পরিলক্ষিত হয়। তবু একথা স্বীকার করতেই হবে, হাসিনা বাংলাদেশের ইসলামী উগ্রপন্থীদের একটা বেড়াজালে কঠোর হাতে আটকে রেখেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সেইসব পাকিস্তানপন্থী মৌলবাদী শক্তির সামনে আজ আর কোনো বেড়া নেই। সীমাহীন উল্লাসে তারা আজ বাংলাদেশের রাস্তায়। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার সে রাস্তাকে আরও সুগম করে দিচ্ছে। তাই নব্য ’রাজনৈতিক ইসলাম’ জেগে উঠেছে এই সুযোগে যাতে, একটি আরব ভূখণ্ডের ন্যায় বাংলাদেশ তৈরি করা যায়। যে ভূখণ্ডে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য থাকবে না। থাকবে না লালন–রবীন্দ্র–নজরুল– রোকেয়ার উপাসক। এবং গণতন্ত্র, যুক্তিবাদ,দীপায়ন, মুক্তচিন্তা, স্বাধীনতার মতো নান্দনিক জিনিসগুলো সব ধুয়েমুছে যাবে।
এখন বাংলাদেশে মানুষের ওপর যে পীড়ন হচ্ছে, তা কেবল হিন্দুদের ওপর হচ্ছে না। বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তা বিরোধী উগ্র ইসলামী মৌলবাদী শক্তি হিন্দু ছাড়াও আক্রমণ নির্বিচারে আক্রমণ করছে বৌদ্ধ–খ্রিস্টান–সুফি ও ধর্ম নিরপেক্ষ মুসলমানদেরও। আমরা জানি, বাংলাদেশের সব মুসলমান সমান নয়। এখনও উদার সংস্কৃতিমনা ও মুক্তচিন্তার মানুষ আছেন। সব মানুষ ধর্মের অন্ধকারে নিঃশেষ হয়ে যায়নি, কিন্তু সাম্প্রতিক উগ্র ইসলামপন্থীদের বেপরোয়া চাপে তারাও আজ সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। ধর্মের বিষাক্ত কোলাহলে তাঁদের কথা আর কে শোনে? ঠিক যেনো আমাদের দেশের উত্তর ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদের মতো।
রাজনৈতিক ইসলাম আর রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ — দুটোই বড়ো ভয়ঙ্কর। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলাম মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আর রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ এপারে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিয়ে আগামীর ফসল তুলতে চাইছে। যে কোনো একদিকে একটা মাথাচাড়া দিলে অন্যদিকে আরেকটা মাথাচাড়া দেয়। আমরা যারা ধর্মের ধার ধারি না। ভয় করি ভগবান বা আল্লার বিধানকে। মাথা নোয়াই না ধর্মান্ধদের কাছে, ধর্ম বলতে শুধু মানুষ বুঝি; তারা আজ এপারে ওপারে — দুপারেই অতি সংখ্যালঘু। খেয়াল করুন, এই অতি সংখ্যালঘুরা কোথাও সাধারণ মানুষের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। বরং, পরকাললোভী ধার্মিকরা আমাদের ভারত উপমহাদেশ ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে খেয়েছে এবং আগামীতে আরও টুকরো করে খাবার অভিলাষে ধর্মান্ধতাকে কাজে লাগাচ্ছে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ববাদ আর উগ্র ইসলামী জেহাদীবাদ। প্রতিনিয়ত সোস্যাল মিডিয়ায় এই মুহূর্তে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু নেতা আর ইসলামী মৌলবাদী নেতাদের বক্তৃতা শুনলে কি মনে হয় এরা সত্যিকারের ধার্মিক? একবারের জন্যও মনে হয় না ধর্মের জন্য এসব বলছে। এদের শেষ কথা রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, ধর্ম নিছক হাতিয়ার। কারণ, মানুষকে খ্যাপানোর সবচেয়ে ভালো হাতিয়ার হলো ধর্ম। রাজনীতিতে অত্যন্ত সস্তার পুষ্টিকর খাবার হচ্ছে ধর্ম আর ধর্ম থেকে সৃষ্ট যাবতীয় কুসংস্কার।
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সাতচল্লিশের দেশভাগ যে কত বড়ো মিথ্যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো, তা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো। উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু নেতারা দিল্লির মসনদে বসে রাজক্ষমতা বংশ পরম্পরায় আজীবন ভোগ করবেন বলে বিপ্লবী বাংলাকে ভেঙে দিলেন। যাতে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি দিল্লির মসনদে না আসতে পারে। তাই বৃহৎ বাংলাকে ভেঙে তছনছ করা হলো। স্বাধীন ভারত আর পাকিস্তানে যারা হয়ে গেলো সংখ্যালঘু, তাদের ভবিষৎ কী হবে, তা একবারও ভেবে দেখেননি দেশভাগের খল নায়কেরা। ফলে আজও দেশভাগের বিষময় ফল ভোগ করতে হচ্ছে দুই পারের সংখ্যালঘুদের। লাভবান হচ্ছে ধর্মের করবারীরা। রাষ্ট্র ধর্মগুলোকে ইন্ধন দেয় বলে ধর্ম তার যাবতীয় কুসংস্কার নিয়ে টিকে আছে। আজ এই চিত্র ভারত,পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে একই ভাবে প্রবল বহমান। সুযোগ পেলেই ’রাজনৈতিক ধর্ম’ ধর্মান্ধদের সঙ্গে নিয়ে সব শক্তি দিয়ে তীব্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ–কাল–সময় দখলের কাজে। বর্তমান বাংলাদেশে তাই হচ্ছে।
বাংলাদেশের এই সাম্প্রদায়িক উত্থানের শেষ কোথায়? এটা এক কথায় বলা মুশকিল। এটা বুঝতে হলে ভারতভাগের ভাগের নামে বাংলা ভাগের গভীর ষড়যন্ত্র এবং ১৯৭৫ সালে মুজিব হত্যাকারীদের গভীর ষড়যন্ত্র। একটার পেছনে ছিলো ব্রাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্র আর একটার পেছনে ছিলো উগ্র ইসলামী মৌলবাদী শক্তি। আজ এক দশক ধরে ওপরে ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে উগ্র ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু সরকার, যারা স্বধর্মের মধ্যে বর্ণঘৃণা, উঁচু–নিচু ভেদাভেদ বজায় রেখে ব্রাত্য শূদ্রদের মুসলমান বিদ্বেষী হতে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। ভারতের বহুত্ববাদকে নস্যাৎ করা হচ্ছে। এই কৌশল দেখতে দেখতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ওৎ পেতে থাকা বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি বিরোধী, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক উগ্র ইসলামী মৌলবাদী জঙ্গীরা জমি তৈরির ফন্দি আঁটতে শুরু করে। তারপর সময় বুঝে ভারত বিরোধী জিগির তুলে হাসিনাকে উৎখাত করতে তারা সফল হয় । এখন প্রয়োজন অনুসারে তারা শুরু করেছে সংখ্যালঘু নিপীড়ন। তাদের শেষ লক্ষ্য একটি ভারত বিরোধী তালিবানী রাষ্ট্র তৈরি করা। এইভাবে বাঙালির গর্বের দেশ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সোনালি চেতনা, শত শত বাঙালি শহিদদের আত্মবলিদান আর হাজার হাজার বাঙালির রক্তে স্নাত উজ্জ্বল বাংলাদেশ নষ্টদের অধিকারে চলে যাচ্ছে।
গত কয়েক মাস যাবৎ বৌদ্ধ আর সমতলের হিন্দুরা নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় চাকরি থেকে বলপূর্বক সংখ্যালঘুদের চাকরি থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সারা বাংলাদেশ জুড়ে চলছে দোকানপাট লুট করার হিড়িক। মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে শোনা যাচ্ছে — “ যাদের হাতে লাল তাগা সাদা শাখা;/ তাদের ধরে ভারতে পাঠা।” এটাও শোনা যাচ্ছে, রাস্তায় যখন তখন সংখ্যালঘুদের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে চেক করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে ভারতের কোন্ কোন্ নাগরিকের কথা হচ্ছে? ফলে বাঙালির এই দুঃসময়ে দুই পারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে কথা বলাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছুটা। সংশয় দানা বেঁধেছে এই ভেবে যে, মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে কখন কার বিপদ কীভাবে আসে কে বলতে পারে। ইসলামী মৌলবাদীদের আক্রমণের মাত্রা একেবারে সামনে চলে এসেছে। বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তার কথা তারা আর মাথায় আনতে চাইছে না। তাই বাংলাদেশ থেকে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’র মতো জাতীয় সঙ্গীত বাদ দেবার হুমকি দিচ্ছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা ভেঙে ফেলছে পাঁচশো আগের সুফি মাজারগুলো। কণ্ঠশিল্পী রাহুল আনন্দের এক হাজারের মতো বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলা হলো।
ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ভারত বিরোধিতার মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই বিদ্বেষের অতি সাম্প্রতিক শিকার হলেন এই সময়ের অনন্য অভিনেতা এবং গায়ক চঞ্চল চৌধুরী। ভারতের সিনেমায় অভিনয় করার জন্য তিনি উগ্র ইসলামী মৌলবাদ আশ্রিত ইউনুস সরকারের রোষে পড়লেন। তাই নিউইয়র্ক যাবার পথে বিএনপি’র লোকজন আর পুলিশ তাকে মিলেমিশে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে নিয়ে এসে এখন গৃহবন্দি করে রেখেছে। তাহলে ভাবুন, ধর্মান্ধ শক্তি কোথায় নিয়ে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশকে! একাত্তরের পরে এমন বাংলাদেশ কেউ দেখেননি। এমনকি এপারে যখন হিন্দু মৌলবাদীরা বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয় তখনও ভাবা যায়নি, এসব হতে পারে। এবং তখন কোনোকিছু হয়ওনি। আজকে হঠাৎ ভারত বিরোধিতায় তারা রাস্তায় নেমে উল্লাস করছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তান নাকি তাদের বন্ধু দেশ। শত্রুদেশ এখন বন্ধুদেশের মর্যাদা পেতে চলেছে।
বাংলাদেশর এই ডামাডোল পরিস্থিতিকে সর্বশক্তি দিয়ে এপারে কাজে লাগাতে ময়দানে নেমে পড়েছে হিন্দু মৌলবাদী শক্তি। আপাতভাবে দেখে মনে হয়, এদেশের হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের মারাত্মক কষ্ট পাচ্ছে। হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে তাদের। এ আসলে কুম্ভিরাশ্র। না বুঝে এই ফাঁদে পা গলানোও ভয়ংকর বিপদ। প্রকৃত বিচারে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ধর্মান্ধ সরকার বরং উদ্বাস্তু হিন্দু বিরোধী, বাঙালি বিরোধী। ইতিমধ্যে সকলেই জানেন, ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন তৈরি করে তার ২(১)বি ধারা ও ৩(সি) ধারা অনুসারে বাঙালি উদ্বাস্তুদের বিপদ বাড়িয়ে তুলেছে। তারাই আবার ওপারের হিন্দুদের জন্য মায়াকান্না কাঁদছে। দুই পারের ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি মিলেমিশে পরিবেশ উত্তাল করে তুলেছে। এ সময় বারবার করে মনে পড়ছে রবীন্দ্রনাথের ’রবিবার’ গল্পের নায়ক অভিকের কথা, যার মুখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ গল্পের নায়িকাকে বলাচ্ছেন —”দেখো, তুমি প্রচণ্ড ন্যাশনালিস্ট। ভারতবর্ষে ঐক্য স্থাপনের স্বপ্ন দেখো। কিন্তু যে দেশে দিনরাত্রি ধর্ম নিয়ে খুনোখুনি সে দেশে সব ধর্মকে মেলাবার পুণ্যব্রত আমার মতো নাস্তিকেরই। আমিই ভারতবর্ষের ত্রাণকর্তা।” পক্ষান্তরে যে বাংলাদেশ নজরুলকে শ্রদ্ধা সহকারে তুলে নিয়ে সযত্নে রেখে জাতীয় কবির মর্যাদা দিলো, সেই বাংলাদেশও নজরুলের মতো কবি– মনীষীর কথা শুনলো না — “ মসজিদ আর মন্দির ঐ শয়তানদের মন্ত্রণাগার” ( পথের দিশা)। রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের মতো দুই মহীরুহের কথা আমরা আজও কর্ণপাত করছি না। ধর্মের মাদকতায় নষ্ট করছি দেশের মহান ঐতিহ্য ও গণতান্ত্রিক রূপ।
সুতরাং, আর দেরি না করে দু’পারের মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তচিন্তার মানুষকে নাস্তিক্যবাদ, গণতন্ত্র, যুক্তিবাদ ও অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতি চর্চাকে সঙ্গী করে পথে নামা অত্যন্ত জরুরি। নজরুলের কণ্ঠে আওয়াজ উঠুক — “ হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?/ কান্ডারী! বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র।”( কান্ডারী হুঁশিয়ার) ধর্ম বিযুক্ত মুক্তচিন্তার সকল মানুষ বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তা রক্ষা করতে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে জোট বাঁধুন। কোনো দিকের ধর্মান্ধদের আর বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় নয়। বাঙালি জাতির সামনে ভয়াবহ দুর্দিন। তাই ধর্ম কারার প্রাচীরে বজ্র হানাই আমাদের কাজ হোক।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top