

উত্তরাপথঃ আমরা সকলেই এই হৃদয়বিদারক মুহূর্তটি পেয়েছি যখন আমাদের ফোন আমাদের হাত থেকে পড়ে যায়, এবং আমরা অসহায়ভাবে দেখতে থাকি স্ক্রীনটি এক মিনিটে টুকরো হয়ে গেল। বর্তমানে মোবাইল ফোন নিয়ে আমাদের এই দুঃস্বপ্ন খুব তাড়াতাড়ি অতীতের বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে।সম্প্রতি তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন,তারা আরও শক্তিশালী এবং দীর্ঘদিন চলবে এমন কাঁচ তৈরি করেছেন।তাদের এই অত্যাশ্চর্য গবেষণার ফলে স্মার্টফোন থেকে নির্মাণ শিল্প ,অর্থাৎ কাঁচের উপর নির্ভরশীল বিভিন্ন শিল্পে আসাধারন পরিবর্তন আসতে চলেছে।


শক্তিশালী কাঁচের পিছনে বিজ্ঞান
২রা ডিসেম্বর,২০২৪-এ (Acta Materialia ) অ্যাক্টা মেটেরিয়ালিয়া জার্নালে প্রকাশিত, একটি সাম্প্রতিক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন যে কাঁচ সাধারণত শক্তিশালী হলেও খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করা হলে এটি ভেঙে যায়, কিন্তু এই নতুন আবিস্কৃত, কাচের মধ্যে পরমাণু এবং অণুগুলি যেভাবে চলে তা চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে যার ফলে আগে যেখানে সহজে কাঁচে ভাঙ্গন দেখা যেত , বর্তমান আবিস্কারে সেই সম্ভাবনা আর নেই।
তোহোকু ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মাকিনা সাইতো বলেন, “আমরা জানি যে কিছু পরমাণু আশেপাশের খালি জায়গায় চলে আসে, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি কীভাবে এই প্রক্রিয়া চাপ কমাতে সাহায্য করে ।”
যখন কাচের কিছু পরমাণু আশেপাশের খালি জায়গায় হঠাৎ করে এসে যায় , তখন এটি আশেপাশের পরমাণুগুলিকে প্রবেশ করতে এবং সেই ফাঁকগুলি পূরণ করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়া শুধুমাত্র স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে না, এটি কাঁচের ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনাও কম করে।
কিভাবে তারা আবিষ্কার করেছে
তাদের আবিষ্কার করার জন্য, সাইতো এবং তার দল উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে সিঙ্ক্রোট্রন বিকিরণ পরীক্ষা এবং কম্পিউটার সিমুলেশন রয়েছে। তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন কিভাবে কাঁচের পরমাণুগুলি ন্যানোসেকেন্ড থেকে মাইক্রোসেকেন্ডে খুব ছোট টাইমস্কেলে চলে।
তারা দেখতে পান যে যখন নির্দিষ্ট পরমাণুগুলি খালি জায়গায় চলে আসে, তখন অন্যান্য কাছাকাছি পরমাণুগুলিও সেই ফাঁকগুলি পূরণ করতে একসাথে চলে আসে। এই প্রক্রিয়া গ্লাসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাপ কমাতে সাহায্য করে, চাপ প্রয়োগ করা হলে এটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কম করে।
বিভিন্ন শিল্পের উপর প্রভাব
সাইতো উল্লেখ করেছেন যে এই আবিষ্কারটি কাঁচের উপর নির্ভরশীল শিল্পগুলিতে একটি বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন ইলেকট্রনিক্স, নির্মাণ এবং স্বয়ংচালিত উৎপাদন শিল্পে। আগামীর দিকে তাকিয়ে, গবেষণা দলটি এমন এক ধরনের কাঁচ তৈরির পরিকল্পনা করেছে যা পারিপার্শ্বিক প্রভাবগুলিকে আরও ভালভাবে সহ্য করতে পারে, এবং যেসব ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত কাঁচ ব্যবহার করি সেই সব ক্ষেত্রে এই ব্যবহারকে আরও সহজ করতে পারে।এই উত্তেজনাপূর্ণ গবেষণার জন্য ধন্যবাদ, আমরা শীঘ্রই ফাটলযুক্ত পর্দা এবং ভঙ্গুর কাচের পণ্যগুলিকে বিদায় জানাতে সক্ষম হতে পারি!
সূত্র: “Discovery of collective nonjumping motions leading to Johari–Goldstein process of stress relaxation in model ionic glass” by Makina Saito, Takeaki Araki, Yohei Onodera, Koji Ohara, Makoto Seto, Yoshitaka Yoda and Yusuke Wakabayashi, 4 November 2024, Acta Materialia.
DOI: 10.1016/j.actamat.2024.120536
আরও পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন