

ছবি – এক্স হ্যান্ডেলে নাসার অফিসিয়াল সাইট
উত্তরাপথঃমহাকাশ মানেই শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির রহস্যময় জগৎ—কিন্তু ভাবতে পারেন, সেখানেই এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নভোচারী কিছু দিন আগে ব্যস্ত ছিলেন সবজি চাষে? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। নাসার নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) নয় মাসের দীর্ঘ মিশনে অবস্থান করেছিলেন। আর সেখানেই তিনি করছেন এক চমকপ্রদ গবেষণা—মহাকাশে লেটুস চাষ!
কেন এই পরীক্ষা?
নাসার নতুন প্রকল্পের নাম Plant Habitat-07। এর উদ্দেশ্য হলো, মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে গাছপালা কীভাবে জল শোষণ করে ও বেড়ে ওঠে, তা বোঝা। ভবিষ্যতের মহাকাশ ভ্রমণ ও মঙ্গল অভিযানের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা মানুষ যদি দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকে, তবে তাদের তাজা সবজির প্রয়োজন হবেই।
এই পরীক্ষায় সুনীতা চাষ করছেন একটি বিশেষ জাতের লেটুস—“আউটরেজিয়াস রোমেইন লেটুস”, যা সাধারণত সালাদে ব্যবহৃত হয়। যদিও এই লেটুস এখন খাওয়ার জন্য নয়, তবে গবেষণার সাফল্য ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের পাতে এনে দিতে পারে টাটকা শাকসবজি। একই সঙ্গে পৃথিবীর কৃষি গবেষণাতেও নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে এই উদ্যোগ।
এবার জানা যাক লেটুস খাওয়ার ৬ টি স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে। লেটুস শুধু সালাদে রঙ বাড়ায় না, শরীরকেও দেয় অসংখ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নিই—
১। পুষ্টিগুণে ভরপুর – ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ লেটুস আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
২। জলীয় অংশে ভরপুর – লেটুসে থাকে প্রায় ৯৬% জল, যা শরীরকে রাখে সতেজ ও হাইড্রেটেড।
৩। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভান্ডার – ক্যানসার প্রতিরোধ, প্রদাহ কমানো ও দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
৪। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – সালাদের ছোট্ট অংশও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৫। হাড় ও মস্তিষ্কের জন্য ভালো – ভিটামিন কে-র প্রাচুর্য হাড়কে করে শক্তিশালী, আর স্মৃতিভ্রংশ রোধে সাহায্য করে।
৬। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক – চোখের রোগ, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশে শুধু যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেছেন তাই নয়, বরং ভবিষ্যতের মহাকাশবাসীদের জন্য নতুন দিগন্তও খুলে দিচ্ছেন। আজ যে লেটুস মহাকাশে পরীক্ষাগারে বেড়ে উঠছে, কাল তা হয়তো চাঁদ বা মঙ্গলের কোনো মানুষের প্লেটে জায়গা করে নেবে। আর পৃথিবীতে আমাদেরও মনে করিয়ে দিচ্ছে—এক মুঠো সবুজ শাক আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন