আমাদের দেশে ১লা জুলাই দিনটিকে কেন ডাক্তার দিবস হিসাবে পালন করা হয়?

উত্তরাপথঃ ব্যক্তিগত জীবন এবং সম্প্রদায়ের জন্য চিকিৎসকদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন তারিখে জাতীয় ডাক্তার দিবস পালিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রতি বছর ৩০ শে মার্চ ডাক্তার দিবস পালন করা হয়।আমাদের দেশে ১লা জুলাই দিনটিকে ডাক্তার দিবস হিসাবে পালন করা হয়, তবে এই পালনের পিছনে অর্থবহ কারণ রয়েছে। তাঁর জন্মদিন, 1লা জুলাই, অসুস্থদের নিরাময় এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমকারী সমস্ত ডাক্তারদের সম্মান জানাতে দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল।

ভারতে ডাক্তার দিবস হিসেবে ১লা জুলাইকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই তারিখটি দেশের ইতিহাসের অন্যতম খ্যাতিমান চিকিৎসক ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মবার্ষিকী। ডঃ বি.সি. রায় শুধু একজন বিশিষ্ট ডাক্তারই ছিলেন না, একজন প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন যিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। চিকিৎসা ও জনসেবার ক্ষেত্রে তার অবদান তাকে নিঃস্বার্থ উৎসর্গ এবং মানবতাবাদের প্রতীক করে তুলেছে । তাই প্রতিবছর ১ লা জুলাই, অসুস্থদের নিরাময় এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমকারী সমস্ত ডাক্তারদের সম্মান জানানোর দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে কেন ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিনকে ডাক্তার দিবস হিসাবে নির্বাচন করা হল? ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিনটি ডাক্তার দিবসের তারিখ হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি ১৯৬২ সালে তাঁর মৃত্যুর বার্ষিকীর সাথে মিলে যায়। এই তারিখটি চিকিৎসা পেশার প্রতি তাঁর উৎসর্গ এবং ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবায় তাঁর অবদানের স্মারক হিসাবে কাজ করে। তাছাড়া, ১লা জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) বিশ্ব চিকিৎসা দিবসের কাছাকাছি, যা ৭ মে পালন করা হয়।

ডাক্তার দিবস হল চিকিৎসার মহৎ পেশায় বিশ্বব্যাপী চিকিৎসকদের নিঃস্বার্থ উৎসর্গের উদযাপন। এটি জনস্বাস্থ্যের উন্নতিতে,মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং দুর্ভোগ কমাতে ডাক্তারদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি সুযোগ। এই দিনে, চিকিৎসা পেশাদারদের তাদের কঠোর পরিশ্রম, দক্ষতা এবং মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতির জন্য সম্মানিত করা হয়।

ডাক্তার দিবস তাদের দৈনন্দিন জীবনে ডাক্তারদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি উপলক্ষও। চিকিৎসা পেশাটি অত্যন্ত শারীরিক ও মানসিক চাপ যুক্ত একটি পেশা হওয়ার কারণে, ডাক্তারদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে এবং উচ্চ-চাপের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে কাজ করতে হয়। এই দিনটি তাদের ত্যাগ এবং চ্যালেঞ্জের প্রশংসা করার জন্য একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে।এককথায় ডাক্তার দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট যা আমাদের জীবনে ডাক্তারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করে।

জনস্বাস্থ্য ও মঙ্গল বজায় রাখার জন্য তাদের উত্সর্গ, দক্ষতা এবং সহানুভূতি অপরিহার্য। এই বিশেষ দিনে, আমরা সেই সমস্ত ডাক্তারদের শ্রদ্ধা জানাই যারা অসুস্থদের নিরাময় করতে, শোকার্তদের সান্ত্বনা দিতে এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাদের ত্যাগ ও চ্যালেঞ্জকে স্বীকৃতি দিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিকিৎসা পেশাজীবীদের এই মহৎ পেশায় যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করতে পারি।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top