

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা প্রকাশ করে যে একটা বড় অংশের লোক তাদের সিদ্ধান্ত এবং মতামতের উপর অত্যধিক আত্মবিশ্বাসী কারণ তারা বিশ্বাস করে যে তাদের কাছে সেই নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য আছে, এমনকি তা না থাকলেও। এটি প্রায়শই একজন ব্যক্তিকে একজন বন্ধু বা সহকর্মীর সাথে মতানৈক্যের ক্ষেত্রে নিজেকে সঠিক বলে ভাবায়। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণা দেখিয়েছে যে কেন আমরা সব সময় নিজেদের সঠিক বলে ভাবি।
ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাঙ্গাস ফ্লেচার সহ গবেষকরা দেখেছেন যে লোকেরা প্রায়শই বিবেচনা করে না যে কোনও বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাদের আরও তথ্যের প্রয়োজন হতে পারে কি না। তারা যা জানে তার ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত নেয় এবং মনে করে যে তাদের কাছে যা তথ্য রয়েছে এটি যথেষ্ট।গবেষণাটি আজ (৯ অক্টোবর) PLOS ONE জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্রে প্রকাশিত সমীক্ষায়, ১২৬১ আমেরিকান জল সমস্যার সম্মুখীন একটি কাল্পনিক স্কুল সম্পর্কে পড়ে। এরপর তারা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। ১. একটি দল জলের চাহিদার উপর ভিত্তি করে স্কুলগুলিকে একীভূত করার জন্য যুক্তিগুলি পড়ে ৷ ২. অন্য একটি দল স্কুলকে আলাদা রাখার পক্ষে যুক্তি পড়ে।৩. একটি তৃতীয় দল উভয় পক্ষের সমস্ত যুক্তি পড়ে।
ফলাফলগুলি দেখায় যে যারা যুক্তির শুধুমাত্র একটি দিক পড়েছেন তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে ছিল। তারা কোনও বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে তাদের কাছে সেই বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে এই আত্মবিশ্বাস ছিল। প্রকৃতপক্ষে, যাদের কাছে শুধুমাত্র আংশিক তথ্য রয়েছে তারা প্রায়শই তাদের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিল যাদের কাছে সমস্ত তথ্য ছিল।এমনকি যখন তারা পুরো ঘটনাটি জানত না, তারা বিশ্বাস করেছিল যে তাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।মজার বিষয় হল, কিছু অংশগ্রহণকারী যারা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র একটি পক্ষ পড়েছিল পরে অন্য পক্ষের যুক্তিগুলি বিবেচনা করেছিল এবং আরও তথ্য পাওয়ার পরে তাদের মন পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক ছিল। তবে, পুনর্বিবেচনার এই ইচ্ছা সবসময় দৃঢ় বিশ্বাস বা মতাদর্শের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে।
ফ্লেচার উল্লেখ করেছেন যে অনেক দৈনন্দিন দ্বন্দ্ব গভীর-বিশ্বাসের পরিবর্তে সাধারণ ভুল বোঝাবুঝি থেকেও আসে। অধ্যয়নটি তুলেধরে লোকেরা কীভাবে কোনও বিষয় সম্পর্কে তথ্য ভাগ করে নিতে পারে, এমনকি যদি তারা মনে করে যে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সত্য। ফ্লেচার পরামর্শ দেন যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে লোকেদের তাদের সেই নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে কি না পরীক্ষা করা উচিত। আপনি যখন কারো সাথে কোনও বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন, তখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনার কাছে থাকা তথ্যে কিছু অনুপস্থিত আছেন কিনা যা আপনাকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে। এইভাবে, আপনি পর্যাপ্ত তথ্য থাকার ভ্রম কাটিয়ে উঠতে পারেন।
Reference: “The illusion of information adequacy” by Hunter Gehlbach, Carly D. Robinson and Angus Fletcher, 9 October 2024, PLOS ONE.
DOI: 10.1371/journal.pone.0310216
আরও পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন