এবারের কৃষক আন্দোলন কতটা আলাদা, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কী দাবি কৃষকদের

উত্তরাপথঃ উত্তরাপথঃ নিজেদের দাবি নিয়ে আবারও রাজপথে নেমেছে কৃষক।  শম্ভু সীমান্তে কৃষকদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  পুলিশের অভিযোগ আন্দোলনকারীরা অনেক ব্যারিকেড নস্ট করে দিয়েছে।  এ কারণে অনেক আন্দোলনকারীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।  পরিস্থিতি দেখে মনে হয় না কৃষকরা ফিরে যাবেন।  এবার কৃষকরা তাদের বিভিন্ন দাবিতে অনড়।কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃষকদের দাবি ঠিক কি?

 ১. কৃষক নেতারা ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (MSP) আইনের দাবি করছেন।তাদের দাবী ২০২০ সালে কৃষির ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও, সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। এবারও কৃষকদের দাবিগুলির মধ্যে কৃষি সহায়ক মূল্য নির্ধারণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে ।

২. দিল্লিতে মোর্চার সময় কেন্দ্রীয় সরকার যে দাবিগুলি আশ্বাস দিয়েছিল তা অবিলম্বে পূরণের দাবি করেছে কৃষকরা।

৩.২০২১- ২২ সালের কৃষকদের আন্দোলনের সময় যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা বাতিলের দাবি রয়েছে। চার বছর আগে আন্দোলনের সময় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল মামলা। মামলাগুলি প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিলেও, সরকার কথা রাখেনি বলে দাবি। মামলা প্রত্যাহারের জন্যও সরব হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।

৪. এই আন্দোলনে, কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি করছে যে আগের আন্দোলনে মারা যাওয়া কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত এবং পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়া উচিত।

৫। কৃষক নেতাদের দাবী কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির শাস্তিরও দাবি করেছে কৃষক সংগঠনগুলি। এরই পাশপাশি মৃত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতেও সরব হয়েছে তারা।

৬।এবার দিল্লিতে মিছিল করা কৃষক নেতারা সরকারের কাছে দাবি করছেন যে সমস্ত কৃষকের সরকারি ও বেসরকারি ঋণ যেন মকুব করা হয়।

 ৭. ৬০ বছরের বেশি বয়সী কৃষকদের ১০,০০০ টাকা পেনশন দেওয়ার দাবিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

 ৮. কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য, ফলমূল, শাকসবজি ও মাংসের আমদানি শুল্ক কমাতে ভাতা বাড়ানোর দাবিও রয়েছে ।

৯. কৃষক নেতারাও স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি করছেন।

 ১০. কৃষকরা কীটনাশক, বীজ এবং সার আইন সংশোধন করে তুলা সহ সমস্ত ফসলের বীজের গুণমান উন্নত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি করছেন।

তবে এবারের কৃষক আন্দোলন ইউনাইটেড কিষাণ মোর্চার ব্যানারে হচ্ছে না।এবারের এই আন্দোলনকে ২০২১ সালের আন্দোলনের সাথেও যুক্ত করা হচ্ছে, তবে এবারের আন্দোলনে সব কৃষক সংগঠনের সমর্থন নেই।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top