

অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধি এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হওয়ার দাবির মধ্যে বাস্তবতা হলো, গত বারো-তেরো বছরে মানুষের গৃহস্থালির ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। পরিসংখ্যান ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন মন্ত্রকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে গৃহস্থালীর খরচ , শহরাঞ্চলে মাথাপিছু ২০১১ – ১২ সালে যেখানে ২,৬৩০ টাকা ছিল সেটি বেড়ে ২০২২ -২৩ সালে ৬,৪৫৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে ,অর্থাৎ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে ৷ একইভাবে, গ্রামীণ এলাকায় এই খরচ ১,৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,৭৭৩ টাকা হয়েছে। এটি দেখায় যে খাদ্যবহির্ভূত ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে, যেখানে খাদ্যশস্যের ব্যয় আগের তুলনায় কমেছে। ফল, সবজি, দুধ, মাছ, ভোজ্যতেল ইত্যাদির ব্যয় বেড়েছে। একইভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, পোশাক ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য খাতে ব্যয় বেড়েছে। এর একটি কারণ বলা হয় যে, কোভিডের সময় মানুষ শহর থেকে গ্রামে ফিরে গেছে এবং কৃষি খাতের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে ওই খাতের গড় খরচ বেড়েছে। কিন্তু একই যুক্তি শহুরে ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
এই পরিসংখ্যানে দারিদ্র্যের হার পাঁচ শতাংশ কমেছে বলেও দাবি করা হয়েছে । রিপোর্টে প্রায় তেইশ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমা থেকে থেকে বেরিয়ে এসেছে বলে খবর।কিন্তু এত কিছুর মধ্যে এটাও একটা সত্য যে মাথাপিছু আয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি হয়নি।গ্রামীণ এলাকায় মাথাপিছু মাসিক আয় প্রায় মাথাপিছু মাসিক ব্যয়ের সমান। কিন্তু এখানে মাথাপিছু আয় এবং মাথাপিছু ব্যয়ের সমীকরণে ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না। বেশিরভাগ পরিবারে একজনই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, যেখানে গড়ে তিনজন মানুষ তার ওপর নির্ভরশীল।
এক্ষেত্রে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, যেহেতু এগারো বছর পর এই সমীক্ষা এসেছে, তাই এটি মাথাপিছু ব্যয়ের আগের তুলনায় অনেক বেশী দেখাচ্ছে।মূল্যস্ফীতি এবং মাথাপিছু ব্যয় বৃদ্ধি একটি সুস্থ অর্থনীতির লক্ষণ বলে মনে করা হয়। তবে এর পাশাপাশি মাথাপিছু আয়ের সমপরিমাণ বৃদ্ধির দিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এটা আশ্চর্যজনক যে মূল্যস্ফীতি এবং গৃহস্থালির ব্যয় যে অনুপাতে বাড়ছে মাথাপিছু আয় সেই অনুপাতে বাড়ছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়া এবং কোভিডের সময় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের কর্মসংস্থানে ফিরতে না পারা। এমনকি যারা কৃষির সাথে জড়িত তারাও দৈনিক মজুরি পাচ্ছেন না। কৃষি খাত নিজেই নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় ফসলের ক্ষতি এবং খরচের অনুপাতে ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এক্ষেত্রে মজুরির পরিমাণ কমেছে। এমনকি MNREGA-এর মতো কর্মসূচিতেও কাজ ১০০ দিন থেকে কমে বছরে ৬০ দিন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গৃহস্থালির খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কী অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে তা অনুমান করা কঠিন নয়।
এই সমস্যাটি মোকাবেলা করার জন্য এবং দরিদ্র পরিবারের উপর আর্থিক বোঝা কমানোর জন্য, সরকার জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করার ফলে তা কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও পরিবারের উপর চাপ কমাতে কিছুটা সাহায্য করেছে। কিন্তু , এক্ষেত্রে‘কাজের সুযোগ তৈরি ‘ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সমস্যার মূল কারণগুলিকে মোকাবেলা করতে এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের যাত্রাকে আরও দৃঢ় করবে।
আরও পড়ুন
Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি। ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি। এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে। এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন