রাহুল গান্ধীর ভারত জোড় ন্যায় যাত্রা নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হতে চলেছে

উত্তরাপথঃ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগেই প্রচার শুরু করেছে দেশের সব রাজনৈতিক দল। এরই ধারাবাহিকতায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত জোড় ন্যায় যাত্রা শুরু করেছে। এই যাত্রা ১৬ ফেব্রুয়ারি চান্দাউলির নওবতপুর থেকে উত্তরপ্রদেশের সীমান্তে প্রবেশ করবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি বারাণসী পৌঁছাবে। এই সময়ে, রাহুল গান্ধী দর্শনের জন্য কাশী বিশ্বনাথ ধামেও পৌঁছাতে পারেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে বোর্ড পরীক্ষার কারণে ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রার সময় কমানো হয়েছে। এখন উত্তরপ্রদেশে এই যাত্রা ১১ দিনের পরিবর্তে ৬ দিন চলবে। কংগ্রেসের উত্তর প্রদেশ ইউনিটের পক্ষ থেকে সোমবার একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে যে রাহুল গান্ধী ইউপি বোর্ড পরীক্ষা এবং ছাত্রদের স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে তার ভারত জোড় ন্যায় যাত্রার সময় কমিয়েছেন। এর আগে এই যাত্রা উত্তরপ্রদেশে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তবে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া উত্তরপ্রদেশ বোর্ড পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে এখন এটি কেবল ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাত্রা এই রাজ্যে থাকবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে সংবেদনশীলতার উদাহরণ স্থাপন করে রাহুল গান্ধী অনেক অনুষ্ঠানে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। এর আগেও তিনি করোনার সময় জনগণের উদ্বেগের কারণে বাংলায় তার সমাবেশ বাতিল করেছিলেন।

কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, রাহুল গান্ধীর সফরের জন্য পুরো দল সফর সংক্রান্ত কর্মসূচিতে সময় দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় পাচ্ছে না। নির্বাচনের পাশাপাশি প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বৈঠক ও পর্যালোচনা করতে হবে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির কর্মকর্তারা এতে সময় দিতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্যও সময় পাচ্ছেন না রাহুল গান্ধী।ইউপি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২২শে ফেব্রুয়ারি বোর্ড পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে যাত্রাপথে পড়া স্কুল-কলেজে আবাসনের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। যে জায়গাগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো ভ্রমণের পথ থেকে অনেক দূরে।

ইন্ডিয়া জোটে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে বিবেচিত বিহারের নীতিশ কুমার হঠাৎ করেই ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে এনডিএ জোটে যোগ দিয়েছে এরফলে ইন্ডিয়া জোট ক্ষতির মুখে পরছে ।অন্যদিকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসাবে বিবেচিত রাষ্ট্রীয় লোকদলও ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আরএলডি প্রধান জয়ন্ত চৌধুরী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি এনডিএ-র সঙ্গে জোটে যাচ্ছেন। বিহারের পর উত্তরপ্রদেশেও ইন্ডিয়া জোট দুর্বল হয়ে যাওয়ায় আসন ভাগাভাগির সিদ্ধান্তও জটিল হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রার সময়, যা আগে মার্চ পর্যন্ত ছিল, এখন কমানো হয়েছে।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণার জন্য এখন মাত্র এক মাস বাকি। এই কারণেও রাহুল গান্ধীর ভ্রমণের সময় কমানো হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের দলগুলি অন্ধ্রপ্রদেশ সফর করেছে এবং সেখানকার নির্বাচনী প্রস্তুতির খতিয়ে দেখেছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, কমিশনের দলগুলি মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত রাজ্যে প্রস্তুতি পরীক্ষা করবে। এরপর মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার অন্তত ২৮ দিন পরই নির্বাচন শুরু হতে পারে।

আরএলডির জাতীয় সহ-সভাপতি শাহিদ সিদ্দিকী বিজেপি নেতাদের কংগ্রেস নেতাদের থেকে বেশি পেশাদার বলছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,জোটে নেতৃত্বের অভাব রয়েছে।সেই কারণে জোটের ছোট দলগুলো দিশেহারা হয়ে পড়ছে। শহীদ সিদ্দিকী ২৮শে জানুয়ারী তার এক্স  হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন যে কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় শত্রু হল এর নেতৃত্বের অহংকার। গান্ধী পরিবারের কথা ভুলে যান, এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সারির নেতারা এতটাই অহংকারী যে তাদের কাছে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, বিজেপিতে কোনও অহং নেই, এরা তার সবচেয়ে বড় শত্রুদের সাথে আপস করতে দেরি করে না।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


জলবায়ু পরিবর্তন আমাজনের রেইনফরেস্টের কিছু অংশকে সাভানাতে রূপান্তরিত করতে পারে

উত্তরাপথঃ আমাজন রেইনফরেস্ট, যাকে "পৃথিবীর ফুসফুস" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুত্তন্ত্র যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সম্প্রতি প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একটি নতুন তত্তের বর্ণনা করা হয়েছে ,সেখানে বলা হয়েছে কীভাবে বর্ষার মৌসুমে বিকল্প বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে খরা, যাকে ডবল-স্ট্রেস বলা হয়, বন প্রতিষ্ঠাকে সীমিত করছে।উদ্বেগজনক গবেষণাতে আরও বলা হচ্ছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন-প্ররোচিত খরা আমাজন রেইনফরেস্টের কিছু অংশকে সাভানাতে রূপান্তরিত করতে পারে, যা জীববৈচিত্র্য এবং সামগ্রিকভাবে গ্রহের জন্য সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি আনতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

লোকসংস্কৃতির আলোকে মালদার শতাব্দী প্রাচীন গম্ভীরা  

মৈত্রেয়ী চৌধুরীঃ পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের একটি জেলা মালদা। আমের জন্য এই জেলাটি পরিচিতি লাভ করলেও এই জেলা আর ও একটি কারণে বিখ্যাত, তা হল গম্ভীরা । মালদার নিজস্ব লোকসংস্কৃতি।গম্ভীরা শব্দটি প্রকোষ্ট, গৃহ বা মন্দির অর্থের সঙ্গে আভিধানিক মিল থাকলেও এই অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত আকাশের নিচে বা কোথাও চাঁদোয়া বা ত্রিপল  দিয়ে ঢেকে অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলেন স্বয়ং দেবাদিদেব। এই উৎসবের তিনি 'নানা' নামে পরিচিত।একজন শিবের সাজে থাকেন, আর দেবাদিদেবের চেলার মতো কিছু সংখ্যক সেই নানার ভক্ত হয়ে খোল, করতাল হাতে উনার সঙ্গী হন। বাস্তব জগতের এবং পারিপার্শ্বিক যা মা সমস্যা থাকে তা  চেলার নানার কাছে অভিযোগ জানান, যেন নানা সেই অভিযোগ শুনে তার সমাধান করেন।শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ভিড় করে জমায়েত .....বিস্তারিত পড়ুন

সু-স্বাস্থের জন্য ক্যালোরি গ্রহণ প্রয়োজন,কিন্তু সমস্ত খাবারে ক্যালোরির মাত্রা সমান থাকে না

উত্তরাপথঃসু-স্বাস্থের জন্য ক্যালোরি গ্রহণ প্রয়োজন ,কিন্তু কিভাবে একজন ব্যক্তি তার সঠিক ওজন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যর মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারে । অনেক লোক বিশ্বাস করে যে ক্যালোরি গণনা সাফল্যের চাবিকাঠি। এক্ষেত্রে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তা হল সঠিক মাপে ক্যালোরি গ্রহণ , কিন্তু সমস্ত খাবারে ক্যালোরির মাত্রা সমান থাকে না।আমরা যে খাবার গ্রহণ করি তা আমাদের শরীর প্রক্রিয়া করে সেটিকে ক্যালোরিতে রুপান্তরিত করে । পরে আমরা সেই ক্যালোরিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করে থাকি।এই বিষয়ে কথা বলার জন্য, আমরা একজন নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ানের কাছে প্রশ্ন রাখি  আমরা যে ধরনের খাবার খাই তা আমাদের শরীরের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ। .....বিস্তারিত পড়ুন

ছৌশিল্পী পদ্মশ্রী নেপাল মাহতো ও বিশ্ব মঞ্চে ভারতের লোকনৃত্য

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতোঃ আমাদের চারিদিকে বিশ্ব দ্রুত বিকশিত হচ্ছে,পরিবর্তিত হচ্ছে শিল্প সাধনার প্রকৃতি। এই পরিবর্তিত শিল্প সাধনার যুগে আমাদের সেই সমস্ত ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়া এবং সম্মান করা অপরিহার্য যারা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এমনই একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন ছৌশিল্পী পদ্মশ্রী নেপাল মাহতো। নেপাল মাহাতো, যার ছৌনৃত্যের জগতে  দেশে ও বিদেশে অতুলনীয় অবদান তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী´এনে দিয়েছে। নেপাল মাহতোর জন্ম ১৭ জুন ১৯৫৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বরাবাজার থানার আদাবনা নামে একটি ছোট গ্রামে। তার পিতা স্বর্গীয় নগেন্দ্রনাথ মাহাতো ও মাতা তুষ্ট মাহাতো। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top