ফিরে দেখা : আলো-অন্ধকারের এক কালো মেয়ে

ড. সিদ্ধার্থ মজুমদার*, কলকাতা

২৯ ফেব্রুয়ারি। ‘লিপ-ইয়ার’ যা চার বছর পর পর আসে – এসব কথা সকলেই জানি। কিন্তু ২৯ ফেব্রুয়ারি যে আরও একটি বিশেষ দিন, তা আমরা কেউই জানি না। শুনিওনি কখনও। সত্যিই কি আমরা শুনেছি – ‘অ্যালিস ব্যল ডে’ বলে কোনও দিন-এর কথা? – এক ব্যতিক্রমী মেয়ের নামে যে দিনটি? তাঁরই সম্মানে প্রত্যেক চার বছর অন্তর এই দিনটি পালিত হয়। 

‘অ্যালিস ব্যল ডে’ — যে দিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একজন কালো মেয়ের নাম। A Woman who changed the world! Unsung black Chemist! যে কালো মেয়েটির নাম চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনার সঙ্গে, কুষ্ঠরোগ চিকিৎসায় ওষুধ আবিষ্কারের অগ্রপথিক হিসেবে জড়িয়ে আছে। প্রথম আলো দেখানো সেই কালো মেয়েটির কথা বলব এখানে।

এলিস অগাস্টা ব্যল (ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

কুষ্ঠ রোগ বা লেপ্রোসি একটি প্রাচীন রোগ। এই রোগের অস্তিত্বের কথা অনেক কাল আগে থেকেই জানা ছিল। তবে তখন এ রোগ কী করে হয় তা জানা ছিল না। যে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের জন্যে এই রোগ হয়ে থাকে, তা ১৮৭৩ সালে জানা গেল। চিকিৎসাবিদ্যায় এই রোগ ‘হ্যানস্যেন-ডিজিজ’ নামে পরিচিত। সংক্রমক এবং দুরারোগ্য এ রোগ নিরাময়ের কোনো চিকিৎসা ছিল না তখন। এই বীজাণু সংক্রমণের ফলে রোগীদের চামড়া, স্নায়ু এবং মিউকাস-মেমব্রেন মারাত্বক ভাবে আক্রান্ত হয়। হাত, পা , শরীরের নানা অংশ এবং মুখমন্ডলে ক্ষতচিহ্ন আর ভয়াবহ বিকৃতি ঘটে। দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করে একদিন  মৃত্যু নেমে আসে। প্রাচীন কাল থেকেই এই রোগীদের কলঙ্কিত হিসেবে দেগে দেওয়া হত। মনে করা হত , এ রোগ যেন ওদের পাপের ফল ভোগ। কুষ্ঠ রোগীদের জায়গা হত ঘরের বাইরে, সমাজের বাইরে।

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ‘চৌমাগ্রা’ নামের একটি গাছের বীজ থেকে তৈরি করা তেল দিয়ে আংশিক হলেও ভাল থাকত অনেক রোগী। কিন্তু এই চিকিৎসায় সব ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হত না। তাছাড়া অপরিশুদ্ধ তেল প্রয়োগে রোগীদের শরীরে সব ক্ষেত্রেই বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জটিলতাও ছিল। চীন এবং ভারতবর্ষ সহ অন্যান্য বেশ কিছু দেশের কুষ্ঠরোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হত এই ওষুধি গাছের তেল।

মেয়েটির নাম – এলিস অগাস্টা ব্যল। ওয়াশিংটনের শিয়াটেলে হাওয়াই নামের একটি জায়গায় জন্ম। ১৮৯২ সালে। এলিসের দাদু ছিলেন একজন নামকরা ফোটোগ্রাফার। ইউরোপ এবং আমেরিকাতে স্টুডিও ছিল তাঁর। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে ফার্মাসিউটিকেল-কেমিস্ট্রি এবং পরে ফার্মাসি নিয়ে পড়াশোনা করেন এলিস। পরে ‘কলেজ অফ হাওয়াই’ থেকে (বর্তমানে যা হাওয়াই ইউনিভার্সিটি) কেমিস্ট্রি নিয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিই প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান মহিলা,যে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করেছেন।

এলিস যখন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাজুয়েশন করছেন সেসময়  শিয়াটেলে মোট জন সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লক্ষের মতন, যার মধ্যে আফ্রিকান-আমেরিকানের সংখ্যা মাত্র বাইশ -শোর আশেপাশে ছিল। যাদের অধিকাংশই সাদা চামড়া মানুষদের বাড়িতে গৃহভৃত্য, হোটেলের কাপ-ডিশ পরিষ্কার করা কিংবা কেউ লিফট-অ্যাটেন্ডেন্টের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অনুমান করতে অসুবিধা হয় না কী প্রতিকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে পড়াশোনা করতে হয়েছে এলিসকে। যেখানে কালো মানুষদের ওপর সাদাদের ছিল পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গী এবং নিকৃষ্ট বুদ্ধির মানুষ হিসেবে ধারণা করা হত, সেই পরিবেশের মধ্যে একজন কালো মেয়ে কলেজে কেমিস্ট্রি পড়ছে! কলেজে পড়াকালীন কেমিস্ট্রির নামজাদা ‘জার্নাল অফ আমেরিকান কেমিকেল সোসাইটি’ গবেষণাপত্রে এলিসের নামে প্রকাশিত হচ্ছে গবেষণার কাজ। মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্যে বার্কলের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’ এবং ‘ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই’ – এই দু জায়গা থেকে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্যে নির্বাচিত হচ্ছে।
   

হাওয়াই থেকে সসম্মানে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই ইন্সট্রাক্টারের পদে নিযুক্ত হলেন এলিস। তিনিই প্রথম মহিলা যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি ইন্সট্রাক্টার হয়েছেন। বলা বাহুল্য হায়ার-অ্যাকাডেমিকসের জগতে ঢোকা অত সহজ ছিল না এলিসের পক্ষে। ইন্সট্রাক্টার কেন , সে সময়  মেয়েদের পড়াশোনা করারই অনুমোদন ছিল না সব জায়গায়। মনে রাখতে হবে সে সময়  মহিলাদের ভোটাধিকারও ছিল না।

তিনি মেডিসিনেল কেমিস্ট্রির ওপর গবেষণা করেন। সে সময়ের ল্যাবরেটরিতে না ছিল কোনো উচ্চ মানের আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণ।  না ছিল কোনো আধুনিক সেন্ট্রিফিউজ অথবা গ্যাস-ক্রোমাটোগ্রাফি যন্ত্র।  এই রকম অবস্থার মধ্যে গবেষণাগারে কাজ চালিয়ে গেছেন এলিস। বিভিন্ন মেডিসিনেল প্ল্যান্ট থেকে অ্যাক্টিভ-ইনগ্রেডিয়েন্ট (কার্যকোরী রাসায়নিক উপাদান) সংশ্লেষ করেছেন।  বিশেষ একটি ওষুধি গাছ থেকে তেল সংশ্লেষ করে সেটি পরিশুদ্ধ করেন। শুধু তাই নয়। এই ওষুধ ইঞ্জেক্টেবল অবস্থায় তৈরি করতেও সফল হলেন। হাওয়াই এলাকায় কুষ্ঠ রোগের প্রকোপ ছিল মারাত্বক রকমের। কুষ্ঠ রোগীদের থাকার জন্যে সমাজের বাইরে বিশেষ শিবির তৈরি করে রাখা হত। এলিসের আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসকরা পেলেন কুষ্ঠ রোগের এক কার্যকরী ওষুধ। যা ব্যবহার করে কুষ্ঠ রোগীরা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারল। ম্যাজিকের মতন কাজ করতে লাগল এলিস আবিষ্কৃত ওষুধ। রোগীদের যন্ত্রণা এবং সাইড-ইফেক্টগুলিও দূর হল ওই ওষুধে। এলিস উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি ‘ব্যল মেথোড’ হিসেবে পরিচিত হল। এই কাজেও এলিসই প্রথম। তিনিই প্রথম ওষুধি গাছ থেকে সংশ্লেষ করে  বিশুদ্ধ রাসায়নিক তৈরি করতে সফল হলেন যা কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় নতুন দিশা দেখাল।

চোমগরা প্লান্ট (ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

এলিস আবিষ্কৃত এই ওষুধ তারপর সফল ভাবে কুড়ি বছর ব্যবহার হয়েছে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায়। যতদিন পর্যন্ত না উন্নততর ওষুধ সালফোনামাইডের প্রচলন হয়েছে। পরবর্তীতে সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক আসার পরে এবং তা ব্যবহার করে এই রোগের সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে আজ । তবে এখনও কুষ্ঠরোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই।

তবে এলিস নিজে তাঁর উদ্ভাবিত ওষুধের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। কেন না তাঁর আবিষ্কারের এক বছর পরেই অকালে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান এলিস। দিনটি ছিল ১৯১৬-র  একত্রিশে ডিসেম্বর। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে নেমে আসে এলিসের শেষ দিন। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সেই নিভে গেল এক প্রতিভাময়ী রসায়নবিদের জীবন প্রদীপ। এইভাবে অকালে তাঁর প্রয়াণ না হলে, তাঁর আরও নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীর মানুষ কত উপকৃত হত, এ কথা বলা বাহুল্য।

কালো মহিলা। তারপর আবার এত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের কৃতিত্ব! তাই অকাল প্রয়াণ হলেও তাঁর প্রতি উপেক্ষা ও অবিচারের কমতি হল না। এলিসের কৃতিত্বের ওপর থাবা বসানোর চেষ্টা হল। এলিসের নাম চিরতরে বিস্মৃতির অতলে মুছে দেবার চেষ্টা হল। প্রয়াত এলিসের সাফল্যের কৃতিত্ব  নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে নিতে সফল হলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রেসিডেন্ট ড. আর্থার ডীন। এলিসের কৃতিত্ব এবং তাঁর আবিষ্কৃত প্রক্রিয়া নিজের নামে প্রতিষ্ঠা করে নিলেন সুচতুর ড. ডীন । এলিস উদ্ভাবিত ‘ব্যল মেথোড’ হিসেবে যা পরিচিত হয়েছিল ,তা হয়ে গেল তদানীন্তন প্রেসিডেন্টের নামে – ‘ডীন মেথোড’।

এলিসের মৃত্যুর ছ’বছর পরে ওখানকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক, যিনি এলিসের সঙ্গে এই গবেষণা এবং চিকিৎসায় কোলাবোরেটর ছিলেন, তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি যথাযোগ্য প্রাপ্য ক্রেডিট দিলেন এলিসকে। তিনি উল্লেখ করেন এই গবেষণার ফসল অগাস্টা এলিস ব্যলের। বস্তুত এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত না হলে ইতিহাসের পাতা থেকে সম্পূর্ণ ভাবে মুছে যেত এলিসের নাম। যেরকম ভাবে আরও বহু প্রতিভাময়ী কালো মেয়ের নাম বিস্মৃতির অন্ধকারে হারিয়ে গেছে।

অতি সম্প্রতি সেখানকার একজন স্কলার, হাওয়াই-এর আফ্রিকান-আমেরিকানদের ওপর গবেষণা করে অনেক অজানা তথ্য তুলে এনেছেন। সেই স্কলারের গবেষণা থেকেই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া প্রতিভাময়ী এলিসের সম্মন্ধে জানা সম্ভব হয়েছে অনেক সত্য। এলিসের মৃত্যুর অনেক অনেক পরে, ২০০০ সালে, হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে এলিসের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি ব্রোঞ্জের ফলক বসানো হয়েছে। অতি সম্প্রতি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কে এলিস-এর স্ট্যাচু বসান হয়েছে। সেখানকার পূর্বতন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের উদ্যোগে ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখকে ‘এলিস ব্যল ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।  চালু হয়েছে এলিসের নামে এন্ডাওমেন্ট স্কলারশিপ।

কিন্তু কী করে মৃত্যু হয়েছিল এলিসের? ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় কোনোভাবে দূর্ঘটনা ঘটে এবং ক্লোরিন গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে যাওয়ায় এলিসের অকাল মৃত্যু হয়। অথচ পরবর্তী সময়ে এলিসের ডেথ-সার্টিফিকেট উদ্ধার হলে সেখান থেকে জানতে পারা যায় – সার্টিফিকেটে পরিবর্তন করে এলিসের মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে ‘টিউবারকিউলিসিস’! মৃত্যুর কারণ নিয়েও এই মিথ্যাচারের পেছনে রয়েছে যে সুচতুর কৌশল তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। আর এভাবেই এলিসের মৃত্যুর কারণ যেন ইউনিভার্সিটির কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে যাতে না-যায়, তারই চেষ্টা।

তাঁর যুগান্তকারী ওই কাজের নব্বই বছর পরে হলেও স্বীকৃতি পেয়েছেন এলিস অগাস্টা ব্যল – এটুকুই যা সান্ত্বনা। এলিসের জীবন অনুপ্রেরণার আলোকবর্তিকা হয়ে পৃথিবীর সমস্ত মেয়েদের পথ দেখাক। উজ্জীবিত করুক। যেভাবে তিনি সে সময়ের পুরুষ আধিপত্য চিকিৎসাবিদ্যা এবং বিজ্ঞান জগতের হাজার বৈষম্যের বাধা সরিয়ে নিজের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ক’দিন আগেই আন্তর্জাতিক নারীদিবস পেরিয়ে এসেছি আমরা। প্রতিভাময়ী নারী এলিস অগাস্টা ব্যলের স্মৃতির উদ্দেশে আমাদের সবার প্রণাম লেখা থাক ।

*লেখক CSIR-Indian Institute of Chemical Biology- র অবসরপ্রাপ্ত গবেষক এবং হায়ার একাডেমিকস (গবেষণা ও উন্নয়ন) প্রশাসক। E-Mail: siddharthamajumdariicb@gmail.com

                    

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


 সম্পাদকীয়

পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top