ভুতুড়ে খেলার মাঠ

সঞ্চয়িতা রায় চক্রবর্তী, হাওড়া

আমাদের বাড়ির পাশে একটা ফুটবল খেলার মাঠ আছে। সেখানে আমাদের পাড়ার ছেলেরা সারাদিন ফুটবল খেলে। সন্ধ্যে হলে ছেলেরা তাদের বাড়ি চলে যায়। সারারাত্রি ঘ্যাঙর- ঘ্যাঙ ব্যাঙের ডাক, ঝিঁঝিঁ পোকার  ঝিঁ ঝিঁ শব্দ  শোনা যায়। যত রাত্রি বাড়ে, বিভিন্ন ধরনের শব্দ  ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে। ধুপ্ ধাপ করে মাঠে দূর থেকে কারা যেন ঢিল ছুঁড়ে দেয়।

মাঠের পাশে রাস্তার আলো টিমটিম করে জ্বলছে। রাত্রি বারোটা, সারা পাড়া হয়ে যায় নিস্তব্ধ। কারা যেন মাঠে ফুটবল খেলা শুরু করে। দীনেশ, নরেশ মামা-ভাগ্নে এরা কখনোই কোনো কিছুতেই ভয় পায় না এসব ঘটনাকে তারা আজগুবি গল্প বলে হেসে উড়িয়ে দেয়। তাই মামা ভাগ্নে মিলে ফুটবল খেলার মাঠের পাশে অমাবস্যার রাতে, রাত বারোটার পরে এসে হাজির হয়। মাঠে বিভিন্ন ধরনের শব্দে তাদের কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম। তবু তারা রহস্যের সন্ধানে দুজনেই মাঠের ভেতরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। হঠাৎ করে নরেশ এর মাথায় একটা ফুটবল এসে পড়ে, তারপর তাদের হিড়হিড় করে টানতে টানতে কে  যেন মাঠের  ভেতরে নিয়ে যায়। চতুর্দিক লোকে ভর্তি। ফুটবল খেলোয়াড়রা মাঠের মধ্যে ফুটবল খেলছে। কে বলবে এটা অমাবস্যার রাত্রি? হাততালি তে ভরে উঠছে মাঠ।

নরেশ ও দীনেশ চোখ মুছতে মুছতে দেখল এ তো সেই রতন কাকা, দু বছর আগে মারা গেছেন। রতন কাকা ভালো ফুটবল খেলতেন। নরেশ নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে কোন খেলোয়াড়ের  ‘পা নেই’ অথচ ফুটবল খেলছে তারা। মাঠের মধ্যে ফুটবল  খেলোয়াড়রা ছুটোছুটি করছে এদিক-ওদিক। রতন কাকা বলল ‘বুঝেছিস দীনু সকালবেলা তো ফুটবল অভ্যেস করতে পারি না, তাই রাত্রিবেলা করি, দু বছর হয়ে গেল  ফুটবল খেলার অভ্যেসটা আমি ছাড়তে পারিনি।’ ব্যস্ত কায়াহীন মানুষের ছায়া অজস্র ফুটবল নিয়ে মাঠের মধ্যে দাপাদাপি শুরু করল। নিমেষেই মামা-ভাগ্নে দুজনেই জ্ঞান হারালো। ভোরবেলা জ্ঞান ফিরতেই তারা দেখল, তারা মাঠের পাশে রাস্তার ধারে পড়ে আছে, এই কায়াহীন মানুষের ফুটবল খেলা তাদের আজীবন মনে থাকবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


জলবায়ু পরিবর্তন আমাজনের রেইনফরেস্টের কিছু অংশকে সাভানাতে রূপান্তরিত করতে পারে

উত্তরাপথঃ আমাজন রেইনফরেস্ট, যাকে "পৃথিবীর ফুসফুস" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুত্তন্ত্র যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সম্প্রতি প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একটি নতুন তত্তের বর্ণনা করা হয়েছে ,সেখানে বলা হয়েছে কীভাবে বর্ষার মৌসুমে বিকল্প বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে খরা, যাকে ডবল-স্ট্রেস বলা হয়, বন প্রতিষ্ঠাকে সীমিত করছে।উদ্বেগজনক গবেষণাতে আরও বলা হচ্ছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন-প্ররোচিত খরা আমাজন রেইনফরেস্টের কিছু অংশকে সাভানাতে রূপান্তরিত করতে পারে, যা জীববৈচিত্র্য এবং সামগ্রিকভাবে গ্রহের জন্য সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি আনতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ছৌশিল্পী পদ্মশ্রী নেপাল মাহতো ও বিশ্ব মঞ্চে ভারতের লোকনৃত্য

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতোঃ আমাদের চারিদিকে বিশ্ব দ্রুত বিকশিত হচ্ছে,পরিবর্তিত হচ্ছে শিল্প সাধনার প্রকৃতি। এই পরিবর্তিত শিল্প সাধনার যুগে আমাদের সেই সমস্ত ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়া এবং সম্মান করা অপরিহার্য যারা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এমনই একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন ছৌশিল্পী পদ্মশ্রী নেপাল মাহতো। নেপাল মাহাতো, যার ছৌনৃত্যের জগতে  দেশে ও বিদেশে অতুলনীয় অবদান তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী´এনে দিয়েছে। নেপাল মাহতোর জন্ম ১৭ জুন ১৯৫৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বরাবাজার থানার আদাবনা নামে একটি ছোট গ্রামে। তার পিতা স্বর্গীয় নগেন্দ্রনাথ মাহাতো ও মাতা তুষ্ট মাহাতো। .....বিস্তারিত পড়ুন

আগামী ৩ বছরে শূন্য বর্জ্য হওয়ার পথে রাজস্থানের প্রথম গ্রাম

উত্তরাপথঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্পের আওতায় আঁধি গ্রামে এই পরিবর্তন করা হচ্ছে।জয়পুর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আন্ধি গ্রাম।আগামী তিন বছরে এই গ্রাম শূন্য বর্জ্য হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।আন্ধি গ্রামের এই সম্পূর্ণ রূপান্তরটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্পের অধীনে করা হচ্ছে।  এই প্রকল্পটি সবুজ প্রযুক্তির হস্তক্ষেপ ব্যবহার করে আন্ধি গ্রামকে জিরো ওয়েস্ট মডেলে রূপান্তরিত করার কাজ চলছে ।  এই প্রকল্পটি ২১ মার্চ ২০২২ এ শুরু হয়েছে,  প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ গ্রামের অবস্থা আগে খুবই খারাপ ছিল।আগে এই গ্রামের লোকেদের কঠিন বর্জ্য আলাদা করার কোনও ধারনা ছিল না । .....বিস্তারিত পড়ুন

আবার জেগে উঠবে চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডার,আশাবাদী ISRO

উত্তরাপথঃ চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডার বর্তমানে চাঁদে ঘুমিয়ে পড়েছে। অন্ধকার চাঁদে বিক্রম ল্যান্ডার দেখতে কেমন?  এটি জানতে চন্দ্রযান-২ অরবিটার পাঠানো হয়েছিল।চন্দ্রযান-২ অরবিটার বিক্রম ল্যান্ডারের একটি ছবি তোলেন।ISRO সেই ছবিটি প্রকাশ করেছে, যা রাতে চন্দ্রযান-3 ল্যান্ডার দেখায়।ISRO টুইট করে জানায় রোভার প্রজ্ঞানের পরে, এখন ল্যান্ডার বিক্রমও ঘুমিয়ে পড়েছে। ISRO প্রধান এস সোমনাথ এর আগে বলেছিলেন যে চন্দ্র মিশনের রোভার এবং ল্যান্ডার চান্দ্র রাতে নিষ্ক্রিয় করা হবে।  তারা ১৪ দিন পরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে যখন সেখানে ভোর হবে। 23 আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ পৃষ্ঠে অবতরণের পরে, ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান উভয় ডিভাইস তাদের কাজ খুব ভাল .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top