

উত্তরাপথঃ বন্ধ্যাত্ব শুধুমাত্র জৈবিক সমস্যার বিষয় নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক সমস্যা।সন্তান ধারণের আকাঙ্ক্ষা মানুষের অস্তিত্বের একটি মৌলিক দিক,সেই দিক থেকে বন্ধ্যাত্ব একটি গভীর যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ দম্পতিকে প্রভাবিত করে চলেছে। এটি এমন একটি অবস্থা যা একটি দম্পতির মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, যা প্রায়ই তাদের দুঃখ, হতাশা এবং বিচ্ছিন্নতার অনুভূতির দিকে পরিচালিত করে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বন্ধ্যাত্ব বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০-১৫ শতাংশ দম্পতিকে প্রভাবিত করেছে, এটি একটি বিশ্বব্যাপী উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করেছে,যদিও অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে,কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলি অত্যন্ত ব্যায়বহুল হওয়ায় সবাই এই আধুলিক চিকিৎসা পদ্ধতির সুবিধা ইচ্ছা থাকলেও নিতে পারেন না।
আবার অনেক ক্ষেত্রে বহু দম্পতি চিকিৎসা গ্রহণের পরও তেমন লাভবান হন নি। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, প্রজনন তন্ত্রের কাঠামোগত সমস্যা, জেনেটিক কারণ এবং ধূমপান বা স্থূলতার মতো জীবনযাত্রার কারণ সহ বন্ধ্যাত্বের অনেক কারণ থাকতে পারে যা দম্পতির কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। বন্ধ্যাত্বের মানসিক সমস্যা দম্পতিরা বিভিন্ন ভাবে অনুভব করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে: পারিবারিক দুঃখ, নিরাশা এবং হতাশার একটি বিস্তৃত অনুভূতি।সেই সাথে চিকিৎসা পদ্ধতির নিরলস চাপ, আর্থিক বোঝা এবং ফলাফলের অনিশ্চয়তা দীর্ঘস্থায়ী চাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
দম্পতিরা অনেক সময় তাদের বন্ধ্যাত্বের জন্য নিজেদের বা একে অপরকে দোষারোপ করতে পারে, যা অপরাধবোধ এবং লজ্জার অনুভূতির দিকে পরিচালিত করে, যদিও বন্ধ্যাত্ব প্রায়শই তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের কারণগুলির কারণে হয়। অনেক দম্পতি যারা বন্ধ্যাত্বের সাথে লড়াই করছেন তারা অস্বস্তিকর প্রশ্ন এড়াতে সামাজিক পরিস্থিতি থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন, যা আরও একাকীত্ব এবং হতাশার অনুভূতির দিকে নিয়ে যায়।
বন্ধ্যাত্বের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকগুলিকে যত্ন সহকারে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
• মানসিক যন্ত্রণা মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য একজন মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে পরামর্শ করুন, যেমন একজন থেরাপিস্ট বা কাউন্সেলর।
• একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা মূল্যবান মানসিক সমর্থন প্রদান করতে পারে।
• মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিক সুস্থতার উন্নতি করতে ধ্যান, যোগব্যায়াম বা ব্যায়ামের মতো স্ব-যত্নমূলক কার্যকলাপকে অগ্রাধিকার দিন।
• আপনার মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ভালো বন্ধু এবং পরিবারের সাথে সময় কাটান।
আরও পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন