

উত্তরাপথঃ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক বোর্ড (সি বি এস সি)পরীক্ষার ফলাফল বলছে এক নতুন কথা। এবার মেয়েরা প্রমাণ করে দিয়েছে, বিজ্ঞান আর কেবল ‘ছেলেদের বিষয়’ নয়। শিক্ষা মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ২৭.২৪ লক্ষ ছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগে পাশ করেছে। গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটল।
এই পরিবর্তন শুধু একখানা সংখ্যাই নয়, এটি এক বিশাল সামাজিক বদলের ইঙ্গিত। ২০১০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে পাশ করা ছাত্রীর সংখ্যা ছিল মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩৮.২ শতাংশ। ২০২৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫.৫ শতাংশে। আর ২০২৪ সালে মেয়েরা যেন সেই ধারাকেই ছাপিয়ে গেল—একেবারে চূড়ায় উঠে এল।
বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের অগ্রগতি: রাজ্যভিত্তিক নজর
তামিলনাড়ুতে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের পাশের হার ৯৬.৩৫ শতাংশ—অসাধারণ। ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার মতো রাজ্যেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা।
এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রকল্প—যেমন ‘বিজ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপ স্কিম’, যা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের বিজ্ঞান শিক্ষায় উৎসাহ জোগায়। এছাড়া CBSE-র ‘উদান প্রকল্প’ মেয়েদের ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য মেন্টরিং এবং আর্থিক সহায়তা দেয়।
উচ্চশিক্ষাতেও মেয়েরা এগিয়ে
ভারত সরকারের “All India Survey on Higher Education 2021-22” অনুসারে, বিজ্ঞান বিভাগে এখন উচ্চশিক্ষার (UG, PG, MPhil, PhD) মোট ৫২.১ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই মহিলা। শুধু স্নাতক স্তরে ৫১ শতাংশের বেশি ছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। মেডিসিনে ছেলেমেয়ে সমান সংখ্যায় আছে, আর ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজিতেও মেয়েদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
পরিবর্তনের বাস্তবতা
এই সংখ্যাগুলি আশা জাগায়, কিন্তু বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো অস্বীকার করা যায় না। বিশেষ করে গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া মেয়েরা এখনো নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে— এখনও আমাদের গ্রামের স্কুলগুলিতে ল্যাব বা সরঞ্জামের অভাব, একান্ত পড়াশোনার জায়গার অভাব, এমনকি স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অধিকারও অনিশ্চিত।
এই সাফল্য যেন অর্ধেক পথেই থেমে না যায়, তার জন্য চাই—
- আরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ
- নিরাপদ আবাসন ও পড়াশোনার পরিবেশ
- অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা মেন্টরিং
- মেয়েদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থানের সুযোগ
বিজ্ঞান নিয়ে মেয়েদের এই এগিয়ে আসা নিঃসন্দেহে একটি বিপ্লবের সূচনা। একটি দেশের অর্ধেক জনগণ যদি বিজ্ঞান শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তবে সেই দেশের জ্ঞান-অর্থনীতির ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল হবে, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু এই জয়ের পূর্ণতা আসবে তখনই, যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মেয়ে নির্ভয়ে নিজের পছন্দমত Science, Technology, Engineering, Mathematics নিয়ে পড়ার স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতে পারবে।
আরও পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন