উত্তরাপথ
জাপানে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। জনসংখ্যা কমতে থাকার যে সমস্যা তা স্থানীয় নির্বাচনের ভোটে চরমভাবে ফুটে উঠেছে। অনেক জায়গায় প্রার্থী হওয়ার মতো লোক পাওয়া যায়নি। নির্বাচন বা ভোটে অংশগ্রহণের আগ্রহও স্থানীয় লোকেরা দেখাচ্ছে না।
জনসংখ্যা কমে যাওয়ার যে প্রভাব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পড়েছে তা নিয়ে জাপানের গণমাধ্যম নিকেই-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের ৯টি প্রদেশের গভর্নর (প্রশাসনিক অঞ্চল, যা স্থানীয়ভাবে প্রিফেকচার নামে পরিচিত), ৬টি বড় শহরের মেয়র এবং ৪১টি রাজ্য ও ১৭টি শহরে অ্যাসেম্বলি সদস্যপদে ভোট হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জেলায় হওয়া স্থানীয় নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। দেশটির ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, প্রিফেকচার নির্বাচনে প্রায় ৫৬৫ জন প্রার্থীর বিপরীতে (প্রায় ২৫ শতাংশ) কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল না। ৩৪৮ নির্বাচনী জেলায় নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।
জনসংখ্যা কমতে থাকায় নানা সমস্যায় ভুগছে জাপান। জন্মহার হ্রাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে পৃথক একটি সংস্থাও গঠন করেছে ফুমিও কিশিদার সরকার।সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জাপানের অনূর্ধ্ব ৩০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের অর্ধেকই অর্থনৈতিক উদ্বেগের কারণে সন্তান ধারণে আগ্রহী নন। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, জন্মহার কমার এ প্রবণতার কারণে জাপানি সমাজের টিকে থাকাই হুমকির মুখে পড়েছে।
দেশটিতে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়ে এক নতুন পরিসংখ্যানে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর জাপানের মোট জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে জাপানিদের সংখ্যা হচ্ছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩০ হাজার। জন্মসূত্রে নাগরিক জাপানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। তবে বিদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। জাপানে বিদেশি লোকের সংখ্যা ২৪ লাখ ৪০ হাজার, যা এক বছর আগের থেকে ২ লাখ ১১ হাজার বেশি। এই বৃদ্ধির পেছনে আছে শ্রমজীবী মানুষের জাপানে আগমন সহজ করে দেওয়া। বৃদ্ধ হয়ে আসা সমাজে শ্রমিকের ঘাটতি মেটাতে জাপান এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ভিসাব্যবস্থা সহজ করেছে । তবে জাপানের জন্য উদ্বেগজনক দিকটি হলো, ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সসীমার কর্মক্ষম জনসংখ্যা দ্রুত কমার পাশাপাশি ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ৭ কোটি, মোট জনসংখ্যার যা ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে এর ওপরে যাঁদের বয়স, তাঁদের আনুপাতিক হার হচ্ছে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ, যা হচ্ছে নতুন রেকর্ড এবং দেশের নেতৃত্বের জন্য মাথাব্যথার কারণ। এই বয়সের লোকজন হলেন পেনশনভোগী এবং এঁদের স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয় সরকারকে। ফলে করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার পরও খরচ মেটাতে সরকারকে ঋণ নিতে হচ্ছে। এসব দিক চিন্তা করে জাপানে অবসর গ্রহণের বয়স কয়েক বছর আগেই বাড়িয়ে ৬৫ বছর করা হয়। এখন সেটা বাড়িয়ে ৭০ বছর করার চিন্তাভাবনা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা।
আরও পড়ুন
কতো অজানা রে
মৈত্রেয়ী চৌধুরী: ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের মনে যে সব সৌধের প্রসঙ্গ মনে আসে তারমধ্যে পার্লামেন্ট ভবন একটা অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থান। বহু পর্যটক এই ভবন দেখতে যান. কিন্তু জানেন কি, এই পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন কে বানিয়েছিলেন ? 10 জনকে জিজ্ঞেস করলে 9 জনই বলতে পারবেন না। যাঁরা খুব ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন অথবা গুগুল সার্চ করে থাকেন, তাঁরা হয়তো উত্তরটা দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন বানিয়েছিলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি এডুইন লুটিয়েন। তাঁর সহকারী ছিলেন আরেক ব্রিটিশ স্থপতি হার্বার্ট বেকার। 1927 খ্রিস্টাব্দে এই ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় এবং ব্রিটিশ .....বিস্তারিত পড়ুন
মানভূমে প্রচলিত রাত কহনি
ড. নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: পুরুলিয়া জেলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে (মানভূম ) সন্ধ্যার ঠিক কিছু পরেই ঠাকুমা , দিদিমা, পিসিমা , মাসিমারা ছোটদের নানা রূপকথা , উপকথা শোনায় যেগুলি ' রাত কহনি ' নামে পরিচিত।এরকম রাত কহনির দু একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি: স্লিপ অ্যাপনিয়া দীর্ঘ কোভিড ঝুঁকির সাথে যুক্ত
উত্তরাপথ: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের রিকভার ইনিশিয়েটিভ এবং এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথের একটি সমীক্ষা অনুসারে কোভিড পরবর্তীকালে প্রাপ্তবয়স্কদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণগুলির জন্য ১২-৭৫% কোভিডের ঝুঁকি বেড়েছে, যা সরাসারি স্লিপ অ্যাপনিয়ার সঙ্গে যুক্ত । অথচ শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি প্রায় নেই । .....বিস্তারিত পড়ুন
ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে
উত্তরাপথ: লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এবং ইউসি বার্কলে এর সহযোগিতামূলক গবেষণায় গবেষকরা একটি অভিনব ব্যাকটেরিয়া ইঞ্জিনিয়ারড করেছেন যা জ্বালানি, ওষুধ এবং রাসায়নিক উত্পাদনের সময় উত্পন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে ডিকার্বনাইজশন এর মাধ্যমে। সম্প্রতি Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই আবিষ্কারটি । আর এটি "Carbene Transfer Chemistry in Biosynthesis" নামে পরিচিত । একটি অভিনব প্রতিক্রিয়ার সাথে প্রাকৃতিক এনজাইমেটিক বিক্রিয়াকে সংহত করতে ব্যাকটেরিয়াকে কাজে লাগায়। আর যা সাধারণত জীবাশ্ম .....বিস্তারিত পড়ুন