

উত্তরাপথঃ আমরা সবাই জানি, সোডা, আইসক্রিম, ক্যান্ডি বা মিষ্টি খাবারগুলোর মূল আকর্ষণ হলো চিনি। স্বাদের জন্য এটি অপরিহার্য হলেও, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার সাথে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং হৃদরোগের মতো সমস্যার গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪০ থেকে ১৯৫৩ পর্যন্ত) ব্রিটেনে নানা খাবারের পাশাপাশি চিনির উপরও রেশন চালু ছিল। সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ সালে এই রেশন শেষ হওয়ার পর বাজারে হঠাৎ করেই চিনিযুক্ত খাবারের পরিমাণ বেড়ে যায়। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, যুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া এবং শৈশবে সীমিত চিনি খাওয়া প্রজন্ম বড় হয়ে পরবর্তী জীবনে তুলনামূলকভাবে সুস্থ থেকেছেন। বিশেষত, যারা জন্মের পর প্রথম দুই বছরে চিনি কম খেয়েছেন, তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কম পাওয়া গেছে।
শিশুরা জীবনের প্রথম কয়েক বছরে যে ধরনের খাবার খায়, তা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যের ভিত্তি তৈরি করে। যখন শরীরের হরমোন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়া গড়ে উঠছে, তখন অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ শরীরে চর্বি জমতে সহায়তা করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর ফলস্বরূপ প্রাপ্তবয়স্ক বয়সে ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ দ্রুত দেখা দেয়।
ভারতে আজ শিশুদের মধ্যে চিনি খাওয়ার প্রবণতা অত্যন্ত বেশি। উৎসবের মিষ্টি, ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত জুস এবং কোমল পানীয় শিশুর দৈনন্দিন খাদ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতে শিশুদের স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। এর বড় কারণ হলো অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ।
সমাধান
১। শিশুদের ছোট থেকেই ফল, শাকসবজি ও স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি অভ্যাস গড়ে তোলা।
২। কোমল পানীয় ও কৃত্রিম জুসের পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি লেবুর শরবত বা ডাবের জল দেওয়া।
৩। প্যাকেটজাত খাবারের লেবেল পড়ে চিনির পরিমাণ বোঝা।
৪। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের খাবারের তালিকায় পরিমাণমতো চিনি রাখা, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় মিষ্টিজাত খাবার এড়ানো।
শৈশবেই যদি চিনি খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে সুস্থ জীবনযাপন অনেকাংশে সম্ভব। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিল রোগ এড়ানো যাবে এবং জীবনযাত্রার মান বাড়বে। অর্থাৎ, আজ শিশুর থালায় যত কম চিনি, আগামী দিনে তত বেশি স্বাস্থ্য ও শক্তি।
আরও পড়ুন
Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি
উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন