শামসুর রাহমান : বাঙালির প্রাণের কবি

ড. জীবনকুমার সরকার

বাঙালির কাব্যসংসারে শামসুর রাহমানের মতো কবি দুর্লভ। বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির প্রতি এত প্রবল দায়বদ্ধতা তাঁর সমকালীন কবিদের মধ্যে তেমন তীব্র ছিলো না, যতটা তাঁর মধ্যে দেখেছি। আমরা না বুঝে তাঁকে বাংলাদেশের কবি বানিয়েছি। এ এক হীন মূল্যবোধ আমাদের। যিনি এমন কবিতা লেখেন, তিনি কি কেবল বাংলাদেশের কবি হতে পারেন :
” বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে নিকানো উঠোনে ঝরে
রৌদ্র, বারান্দায় লাগে জ্যোাৎস্নার চন্দন। বাংলাভাষা
উচ্চারিত হলে অন্ধ বাউলের একতারা বাজে…

বাংলাভাষা উচ্চারিত হলে চোখে ভেসে ওঠে কত ছবি
চেনা ছবি; মা আমার দোলনা দুলিয়ে কাটছেন
ঘুমপাড়ানিয়া ছড়া কোন সে সুদূরে; সত্তা তাঁর
আশাবরী। নানি বিষাদ সিন্ধুর স্পন্দে দুলে
দুলে রমজানি সাঁঝে ভাজেন ডালের বড়া আর
একুশের প্রথম প্রভাতফেরি, অলৌকিক ভোর।”
(‘বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে’)

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শামসুর রাহমান সামগ্রিক ভাবে বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে জড়িত এক মহৎ কবি। এই কারণে রবীন্দ্রনাথের পর জীবিতকালে আর কোনো কবি এত জনপ্রিয়তা পাননি। চিলির ক্ষেত্রে যেমন দেখতে পাওয়া পাবলো নেরুদার অবস্থান, ঠিক তেমনি ভারত ভাগের পরেই বাঙালি জাতির নব্য উত্থান পর্বে এবং বাংলা ও বাঙালির আত্মজাগরণ মুহূর্তে শামসুর রাহমানের ভূমিকা ছিলো লক্ষ্য করার মতো। সাতচল্লিশের বাংলা ভাগের সর্বনাশ মাথায় করে দুঃখিনী বর্ণমালা পাকিস্তানে টলমল করতে থাকে। পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে উপড়ে ফেলার সমস্তরকম সরকারি চক্রান্ত হতে থাকে। পাকিস্তানের বাঙালিরা দুঃখিনী বর্ণমালার দুঃখমোচনে সংগ্রাম গড়ে তুললে সৃষ্টি হয় একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবের দিন।

অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার যে, একুশে ফেব্রুয়ারির মতো মহান ও পবিত্র মাতৃভাষার আন্দোলনকেও আমরা এপারে বসে বাংলাদেশের ঘটনা বলে দেগে দিয়ে ইতিহাস থেকে মুখ ঘুরিয়ে বসে আছি। এমন আত্মপ্রতারক জাতি খুব কম দেখা যায় বিশ্বে। মাতৃভাষার মান রাখতে ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিলো যে জাতি, সেই জাতি আজ সতীর দেহের মতো ছিন্নভিন্ন। ভাষিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ছেড়ে হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বে জর্জরিত। আত্মহননের এমন পথ আমরা বেছে নিয়েছি। আমাদের বড়ো ভালো লাগে শামসুর রাহমান বাঙালির মাতৃভাষার সংকটে ও দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন :

” হে আমার আঁখিতারা তুমি উন্মীলিত সর্বক্ষণ জাগরণে

তোমাকে উপড়ে নিলে, বলো তবে, কী থাকে আমার?
উনিশশো’ বাহান্নোর দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি
বুকে নিয়ে আছো সগৌরবে মহীয়সী।
সে ফুলের একটি পাপড়িও ছিন্ন হলে আমার সত্তার দিকে
কত নোংরা হাতের হিংস্রতা ধেয়ে আসে।
এখন তোমাকে নিয়ে খেঙরার নোংরামি,
এখন তোমাকে ঘিরে খিস্তি-খেউরের পৌষমাস!
তোমার মুখের দিকে আজ আর যায় না তাকানো,
বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা।”
( ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’)

বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় সম্মান ও অধিকার আদায়ের জন্য তৎকালীন পাকিস্তানে বাঙালিদের যে মহা সংগ্রাম সংগঠিত হয়েছিলো, তা আজ বিশ্বেও বন্দিত ও চর্চিত। কেবল অসচেতন বাঙালির হৃদয়ে তা নেই। বিশেষ করে এপার বাংলার বাঙালিদের মধ্যে। দুই বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি এক হলেও একুশের উত্তরাধিকার বহন করতে আমরা এপারে পিছিয়ে আছি অনেকটা। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে বাঙালির দাবি ছিলো পাক শাসকের কাছে ————-“রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই”। অর্থাৎ, উর্দুর পাশাপাশি পাকিস্তানে সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষারও দাবি তোলেন বাঙালিরা। বাঙালিদের এ দাবি অন্যায্য নয়। কারণ,তৎকালীন পাকিস্তানে মোট জনসংখ্যার বিচারে ভাষিক জাতিগোষ্ঠী হিসেবে বাঙালি ছিলো সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু বাঙালিদের এই গণতান্ত্রিক দাবি মানতে রাজি ছিলেন না উর্দুভাষী পাক শাসকেরা। ফলে বাহান্নর ওই “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” দাবিটা একাত্তরে গিয়ে দাঁড়ালো—————–

” বাংলাভাষার রাষ্ট্র চাই”। শুরু সশস্ত্র গণজাগরণ। তখন বাংলাভাষার জন্য একখণ্ড স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের দরকার হয়ে পড়লো। আশ্চর্য, কবি শামসুর রাহমানের মতো কবি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন :
” তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,
তোমাকে পাওয়ার জন্যে
আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?…

তুমি আসবে বলো, হে স্বাধীনতা,
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর। …

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে এক থুথ্থুরে বুড়ো
উদাস দাওয়ায় বসে আছেন —— তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্ণের
দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে চুল।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে
বসে আছে পথের ধারে।…
একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে —-
সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,
নতুন নিশানা উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা।”
(‘ তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’)

ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এমন করে দুঃসাহসিকতা আর কোনো কবি সমকালে দেখাতে পারেননি। বন্দুক হাতে করে মুক্তিযোদ্ধাদের মতো যুদ্ধের মাঠে নামতে না পারলেও কবিতায় স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছেন বাঙালির আকাশে বাতাসে। চেতনায় লালন করেছেন একুশের সুমহান ঐতিহ্য: “আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে

কেমন নিবিড় হয়ে। কখনো মিছিলে কখনো বা
একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয় —–ফুল নয়, ওরা
শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।
একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ।”
(‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’)
সময় সচেতন কবির কাছে এটা সময়ের দাবি যেন। এইজন্যে শামসুর রাহমানকে আমার সময়ের রাখাল বলতে ভালো লাগে। দাহ্য সময়ই যেন তাঁকে দিয়ে সবকিছু লিখিয়ে নিয়েছে। সময়ের নথিরক্ষক হিসেবে তিনি একটি জাতির জাতীয় ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করে গেছেন। এমন মহৎ কবিকে আমরা এখনও স্পর্শ করতে পারিনি। এ আমাদের দৈন্যতা। কারণ, এ বঙ্গে আমরা বড্ড বেশি হিন্দু- মুসলমান কোষ্ঠকাঠিন্যতায় আক্রান্ত। অবিভাজ্য বাঙালি সত্তার পুনর্নির্মাণে আমাদের কোনো প্রয়াস নেই। ওপারের ইলিশের প্রতি যত প্রেম, তার ছিটেফোঁটাও ওপারের সাহিত্য নিয়ে আগ্রহ নেই আমাদের। এপারের লিটিল ম্যাগাজিন আর বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থ নির্মাণের পরিসর দেখলে সে উদাসীনতা চোখে পড়ে।

কবিতা ছাড়া শামসুর রাহমানের বিকল্প কোনো জীবন ছিলো না। কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা যেমন সে-কথা প্রমাণ করে, তেমনি মানুষের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তার বহরও তা প্রমাণ করে। কবিতাকে তিনি জীবনযুদ্ধের হাতিয়ার মনে করতেন। আমৃত্যুকে কবিতাকেই আশ্রয় করেছিলেন। কবিতাকে অসীম ভালোবেসেছেন

” কবিতাকে খুব কাছে পেতে চেয়ে কখনও কখনও
কবিতার কাছ থেকে দূরে চলে যাই।

কবিতাকে ভালোবাসি বলে পদ্মকেশরের
উৎসব হৃদয়ে উদ্ভাসিত। কবিতার
প্রতি ভালোবাসা ডেকে আনে ভালোবাসা
হতশ্রী জীবনে, খরাদগ্ধ অবেলায় ঢালে জল,
যেমন মৃন্ময়ী চণ্ডালিকা
আনন্দের আঁজলায়।”
( চকিতে সুন্দর জাগে’)
এই কাব্যবয়ানের অন্তঃস্বর উপলব্ধি করলে তাঁর সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার হয়ে যায়। শঙ্খ ঘোষের বাচনকে ধার করে তাঁর সম্পর্কে বলা যায় ———–
“প্রতিটি মুহূর্তে তুমি কবি”।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশেও কবি শামসুর রাহমান অনন্য দায়বদ্ধতা পালন করেছেন। জাতির যে কোনো দুর্দিনে কবিতা লেখার পাশাপাশি রাস্তায় নেমে মিছিলের অগ্রভাগে থেকেছেন। একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। গণতন্ত্রের পক্ষে সরব হয়েছেন। যে কারণে, পাকিস্তানপন্থী উগ্র ধর্মান্ধরা তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। ইসলামী মৌলবাদীরা তাঁর জীবন শেষ করে দিতেও উদ্যত হয়েছেন কখনও কখনও। তবু কবি শামসুর রাহমান থেকেছেন সত্যের কাছে অবিচল, ন্যায়ের কাছে ঋজু। ঘাতকদের উদ্দেশে বলেছিলেন :

” ঘাতক তুমি সরে দাঁড়াও, এবার আমি
লাশ নেবো না।
নই তো আমি মুর্দাফরাশ। জীবন থেকে
সোনার মেডেল,
শিউলিফোটা সকাল নেবো।
ঘাতক তুমি বাদ সেধো না, এবার
আমি গোলাপ নেবো।”
(‘ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা’)

বাংলাদেশের মাটিতে একাত্তরের চেতনাকে লালন করতে গিয়ে কবিকে কম খেসারত দিতে হয়নি। বিভিন্ন সময়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন, ধর্মান্ধ শক্তি প্রতি পদে পদে বাধা দিয়েছে। তবু সবুজ বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারাননি। মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা হারাননি। নিজের প্রতিও থেকেছেন সদা সচেতন ও সতর্ক। উন্মত্ত ধর্মান্ধ আর সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি অস্ত্র উদগীরণ করেছেন এভাবে :

” কস্মিনকালেও অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই।
না ছোরা, না ভোগালি, না সড়কি না বল্লম
না তলোয়ার না বন্দুক ——
কোনো কিছুরই প্রয়োজন নেই আমার।
আমি মারমুখো কোনো লোক নই।…

কেউ তছনছ করে দিতে এসে,
নিরস্ত্র আমি নিমেষে হয়ে উঠি দুরন্ত লড়াকু।

আমার লড়াইয়ের রীতি
নদীর ফেরীর মতো; ফুল আর সুরের মতো
পবিত্র।…
না ছোরা, না ভোগালি, সড়কি না বল্লম,
না তলোয়ার না বন্দুক ——–
কিছুই নেই আমার,
এই আমি নিজেই আমার অস্ত্র।”
(‘ অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই’)
এভাবেই ১৭ আগস্ট ২০০৬ সাল পর্যন্ত লড়ে গেলেন। মাথা নত করেননি তবু। এই বিশেষ কারণে তাঁর কাছে মাথা নত হয়ে যায়। মানবতার জন্য লড়াই করতে সাধ হয়। জীবনে এমন কবিদের কাছে কত কী শেখার থেকে যায়। আজীবন তিনি আমাদের প্রেরণা দিয়ে গেছেন। শত্রুর বিরুদ্ধে মোকবিলা করার জন্য জ্বলে ওঠার মন্ত্র দিয়ে গেছেন। বাঙালি জাতির জন্য অফুরান প্রেম নিবেদন করে গেছেন।

তাঁর আর একটি অনন্য সাধারণ কবিতা আজকের এইসব দিনে কেন জানি খুব মনে পড়ে। বারবার পড়তে ইচ্ছে করে। কবিতাটির নাম ‘সুধাংশু যাবে না’। দেশত্যাগী সুশান্তকে উদ্দেশ্য করে নির্মিতি এ কবিতাটি যেন লক্ষ লক্ষ দেশান্তরিত মানুষের উদ্দেশে কবির আকুল আবেদন :

” লুণ্ঠিত মন্দির আর অগ্নিদগ্ধ বাস্তুভিটা থেকে
একটি বিবাগী স্বর সুধাংশুকে ছুঁলো ———
‘ আখেরে তুমি কি চলে যাবে?’ বেলাশেষে
সুধাংশু ভস্মের মাঝে খুঁজেৈ
বেড়ায় দলিল, ভাঙা চুড়ি, সিঁদুরের স্তব্ধ কৌটা,
স্মৃতির বিক্ষিপ্ত পুঁতিমালা।…

আকাশের নীলিমা এখনো
হয়নি ফেরারী, শুদ্ধচারী গাছপালা
আজো সবুজের
পতাকা ওড়ায়, ভরা নদী
কোমর বাঁকায় তন্বী বেদিনীর মতো।
এ পবিত্র মাটি ছেড়ে কখনো কোথাও
পরাজিত সৈনিকের মতো
সুধাংশু যাবে না।”
ওপার থেকে চোদ্দো পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে এপারে আসা কোটি সুধাংশু এখানেও ভালো নেই বিশেষ। আন্দামান থেকে সুন্দরবন, নৈনিতাল থেকে দণ্ডকারণ্য ভারতের সর্বত্রই সুধাংশুরা বিশেষ ভালো নেই। দেশভাগের করুণ পরিণাম তাদের আজও তাড়া করে বেড়ায়। দেশান্তরিত মানুষের চোখের জল আজও শুকোচ্ছে না। নানা ব্যথা-বেদনায়, বিপন্নতায় জর্জরিত তাদের জীবন। ফলে তারা আজও একটি দেশ খোঁজে। যে দেশে বাংলাদেশও নেই, আবার ভারতও নেই। যে দেশে শুধু সকাল আছে, অন্ধকার নেই। কিংবা, যে দেশে কোনো ধর্ম নেই, শুধু মানুষ আছে। আর যে দেশে শামসুর রাহমানের মতো সংবেদনশীল বাঙালি মানুষ থাকবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি

উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা  ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top