

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল।
পরিস্থিতি এখন এমন এক পর্যায়ে এসেছে যেখানে ফ্রী গিফট এর বিষয়টি এক নির্বাচনী সংস্কৃতির পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি এই ফ্রী গিফট (Free gift in politics) সংস্কৃতিকে ব্যাপক ভাবে অনুসরণ করছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলি ফ্রী গিফটকে শুধুমাত্র নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখেনি, তারা ভোটারদের প্ররোচিত করার জন্য নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থাকতেই দান খয়রাতি শুরু করে দেয়।কি নেই সেই দানে ফ্রী মোবাইল থেকে ফ্রী রেশন কিছুই বাদ নেই।কয়েক বছর আগে সুপ্রিম কোর্টকে এক সময় বলতে হয়েছিল নির্বাচনের আগে বিনামূল্যের প্রতিশ্রুতি একটি গুরুতর বিষয়।কিন্তু এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, প্রতিযোগিতামূলক পপুলিজমের বাজারে রাজনৈতিক দলগুলো আগামী নির্বাচনের বাইরে তাকাচ্ছে না। তাদের কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল, ক্ষমতায় আসা বা যেকোনো মূল্যে তা ধরে রাখা।


সামনেই মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থান , ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে।নির্বাচনী প্রচার প্রায় শেষ পর্যায়ে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে নির্বাচনের কয়েকমাস আগে থাকতেই বিনাপসায় আগামীতে জনগনকে কিছু পাইয়ে দিতে মরিয়া। আর জনগণও নতুন প্রাপ্তির নেশায় মত্ত। বিগত ৫ বছরে কে কি পেল না পেল সেই প্রশ্ন এখন অবান্তর।আগামী দিনে তারা বিনামূল্যে আর কি কি গিফট (Free gift in politics) পেতে চলেছে সেই হিসাবে মশগুল।
আমাদের স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৫ বর্ষ উত্তীর্ণ। এই ৭৫ বছরে কম – বেশী সমস্ত রাজনৈতিক দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশ শাসন করেছে। কিন্তু দেশ থেকে এখনো দারিদ্র্য দূর হয়নি। ১৯৭১ সাল থেকে রাজনৈতিক দলগুলো গরিবী হঠাও এর স্লোগান দিয়ে আসছে। সেই সাথে দারিদ্র দূরীকরনের জন্য একাধিক পদক্ষেপ বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। জাতীয় খাদ্য কর্মসূচি,গ্রাম স্ব-রোজগার যোজনা, গ্রামীণ আবাসন যোজনা, গ্রামোদয় যোজনা সহ একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।এই সব প্রকল্পের উপকারিতা যে নেই তা নয়, কিন্তু এই প্রকল্পগুলি নেওয়ার পরও দরিদ্রের সংখ্যা কম হওয়ার জায়গাই বেড়ছে।২০০৯ সালে তালুকদার কমিটির রিপোর্টে প্রকাশ ২১.৯% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে রয়েছে।২০১৪ সালে রঙ্গরাজন কমিটির রিপোর্টে ২৯.৫% মানুষ দরিদ্রসীমার নীচে বাস করার কথা বলা হয়েছে।
আমাদের দেশে যেখানে রাজনীতি শেষ কথা বলে সেখানে শাসক দল মানুষের দীর্ঘমেয়াদী উপকারে লাগবে,মানুষের স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পাবে এমন নীতি কেন গ্রহণ করেন না? এর কোনো সদুত্তর নেই, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর বিশ্বাস ভোটের আগে ৫০০/ ১০০০ টাকা , সস্তা গ্যাস, বিনা পযসায় বিদ্যুৎ,মোবাইল সহ একাধিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের নীতি শাসকদলকে ক্ষমতাই টিকে থাকতে সাহায্য করবে ,তাই সেই নীতিই তারা গ্রহণ করে । রাজনৈতিক দলগুলো এমন কোনো নীতি গ্রহণ বা কার্যকর করবে না যা তাদের ভোট পেতে অসুবিধার সৃষ্টি করবে।এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতি ঘোষণার প্রবণতার মুখে সুপ্রীম কোর্টকে দ্রুত কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুন
Gond Tribe: মধ্য প্রদেশে গোন্ড উপজাতির সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো: গোন্ড উপজাতি(Gond tribe) বিশ্বের বৃহত্তম উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি। এটি ভারতের বৃহত্তম উপজাতি । এদের গায়ের রং কালো, চুল কালো, ঠোঁট মোটা, নাক বড় ও ছড়ানো। তারা অলিখিত ভাষা গোন্ডি ভাষাতে কথা বলে, যা দ্রাবিড় ভাষার সাথে সম্পর্কিত। গোন্ড উপজাতির একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, বিশ্বাস করা হয় যে তাদের শিকড় প্রাক-আর্য যুগে্র । গোন্ডদের সবচেয়ে গৌরবময় রাজা ছিলেন সংগ্রাম শাহ এবং দলগত শাহ, যারা ম্ধ্যপ্রদেশের গন্ডয়ানা রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকগুলি দুর্গ তৈরি করেছিলেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে দলগত .....বিস্তারিত পড়ুন
Rinku Singh: আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে বৃন্দাবনে গেলেন
উত্তরাপথ: উত্তর প্রদেশ ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটার রিঙ্কু সিংকে (Rinku Singh)নিয়ে জল্পনা, খুব শীঘ্র তাকে দেশের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যাবে। তার মাঝেই বৃন্দাবনে গেলেন রিঙ্কু। সেখানে বাঁকেবিহারীর মন্দিরে পুজোও দেন তিনি। সেখানে রিঙ্কুর সঙ্গে তাঁর কয়েক জন বন্ধুও ছিলেন। এবারের আইপিএলে কেকেআরের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন রিঙ্কু। তাঁর খেলা নজর কেড়েছিল বর্তমান .....বিস্তারিত পড়ুন
রাজ্যসভার মনোনয়নপত্র জমা অনন্ত মহারাজের
উত্তরাপথ: বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থী হচ্ছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত মহারাজ।আগামী ২৪ জুলাই ভোট। তৃণমূল ইতিমধ্যেই নিজেদের ৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থী কে হবেন তাই নিয়ে চলছিল বিস্তর জল্পনা।নাম উঠে এসেছিল সৌরভ গাঙ্গুলি, ডোনা গাঙ্গুলি, অনির্বাণ গাঙ্গুলি সহ অনেকে । গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান .....বিস্তারিত পড়ুন
আদি-নব্য লড়াই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপিতে প্রকাশ্যে
উত্তরাপথ: আদি-নব্য লড়াই ২০২৩ পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির খারাপ ফলের পেছনে একাধিক কারনের মধ্যে অন্যতম ভূমিকা গ্রহণ করেছে সন্দেহ নাই । বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের গ্রাম কুলিয়ানা। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের এই গ্রামের ২৫ নম্বর বুথে ভোট দেন দিলীপ অথচ তাঁর গ্রামে, তিনি যে বুথে ভোট দেন, সেই বুথেই জিতে গেলেন এক তৃণমূল প্রার্থী। যা শুনে দিলীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা তো লড়াইয়েই ছিলাম না।‘স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন আসে তাহলে কি আবার শুরু হল বিজেপিতে আদি-নব্য লড়াই। .....বিস্তারিত পড়ুন