MP dionosaur egg:  বহু বছর ধরে যে পাথরের পুজো  হচ্ছিল তা আসলে ডাইনোসরের ডিম

উত্তরাপথঃমধ্যপ্রদেশের (MP) ধার জেলা থেকে একটি অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছে। ধার জেলার পাডাল্যা গ্রামে খননের সময় লোকেরা বৃত্তাকার পাথরের মতো জিনিস পেয়েছিল। গ্রামবাসীরা একে একে পাথরগুলিকে বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত তাদের জমিতে বিভিন্ন নাম দিয়ে পূজা করতে থাকে।গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এই বৃত্তাকার পাথরের মতো বস্তুগুলোকে কাকর অর্থাৎ মাঠের ভৈরব দেবতা হিসেবে পূজা করা হয়। এই প্রথা তাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে তাদের বাড়িতে চলে আসছে, যা গ্রামের সকলেই নিজ নিজ এলাকায় পালন করে আসছে।

গোটা ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের (MP) ধারের কুকশি তহসিলের পাদালিয়া গ্রামে। যেখানে গ্রামীণ মানুষ চাষাবাদের সময় তাদের ক্ষেতে গোল পাথর খুঁজে পায়।এরপর সেই পাথরগুলিকে গ্রামবাসীরা তাদের পারিবারিক দেবতা হিসেবে বিবেচনা করে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সেগুলিকে পূজা করতে থাকেন।শুধু তাই নয়,এই রকম একটি পাথরকে পদালিয়ায় ভিল্লাদ বাবার নাম দিয়ে একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছিল এবং এই পাথরগুলির মতো জিনিসগুলি প্যাটেলপুরাতেও পুজো করা শুরু হয়েছিল। লোকেরা তাঁর গায়ে মালা, ফুল, নারকেল ও তিলক লাগিয়ে অত্যন্ত ভক্তি সহকারে তাঁকে পূজা করতে থাকে। মানুষ ভিলাদ বাবার নামে মুরগি-ছাগলও বলি দিতে থাকে।মধ্যপ্রদেশের (MP) প্যাটেলপুরায়, এই পাথরের জিনিসগুলিকে গরুর রক্ষাকর্তা হিসাবে পূজা করা শুরু হয়েছিল। পদালিয়া ছাড়াও আশেপাশের ঘোড়া, টাকারি, ঝাবা, আখড়া, জামান্যাপুরা গ্রামের মানুষও তাঁর পূজা করতে আসতে শুরু করে।

গ্রামবাসীদের টোটেমগুলিকে ডাইনোসরের ডিম হিসাবে চিহ্নিত করার পরে,মধ্যপ্রদেশের (MP) প্রশাসন পদক্ষেপ নেয় এবং তদন্ত শুরু করেন। আসলে, নর্মদা উপত্যকার এই অঞ্চলটি লক্ষ লক্ষ বছর আগে ডাইনোসর যুগের সাথে যুক্ত ছিল। প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে এখানে ডাইনোসরের একটি এলাকা ছিল বলে বিশেষজ্ঞদের ধারনা, যার শত শত ডিম গত কয়েক বছরে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন।এরপর এই গ্রামের বিষয়টি কোনোভাবে  বিশেষজ্ঞদের কাছে পৌঁছায় এবং তারা জানতে পারে যে প্রায় ১৭ বছর আগে ডাইনোসরের ডিমের ২৫৬টি ফসিল এলাকার মানুষ খুঁজে পেয়েছিল।এরপর এলাকার মানুষ  টাইটানো-সৌরান প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্মের পূজা শুরু করেন। বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তা পরীক্ষা করলে ডাইনোসরের জীবাশ্ম হওয়ার সত্যতা বেরিয়ে আসে।

লখনউয়ের বীরবল সাহনি ইনস্টিটিউট অফ প্যালিও সায়েন্সের বিশেষজ্ঞরা এবং মধ্যপ্রদেশের (MP) বন বিভাগের কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। সেইসাথে বিশেষজ্ঞরা গ্রামবাসীদেরকে সচেতন করছেন, তারা যাকে দেবতা হিসেবে পূজা করছেন তা আসলে ডাইনোসরের ডিম। ধার জেলাকে ইউনেস্কোর দ্বারা গ্লোবাল জিও পার্ক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা এখন একটি পরিকল্পনা তৈরি করছেন। যাতে জীবাশ্ম ও ভূ-ঐতিহ্য স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করা যায়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top