Satyaprem Ki Katha চলচিত্রটিতে দর্শকদের বিনোদনের সাথে সামাজিক বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে

Satyaprem Ki Katha এই চলচিত্রটিতে দর্শকদের বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। তবে বিনোদন ও সামাজিক বার্তা কীভাবে ভারসাম্যপূর্ণ হবে তা নির্ভর করে পরিচালকের ওপর। কিছু পরিচালক হাসতে এবং গান গাওয়ার সময় গভীরভাবে কথা বলেন, আবার অন্যরা একই গুরুত্ব সহকারে সংবেদনশীল বিষয়গুলিকে সম্বোধন করতে বিশ্বাস করেন। সত্যপ্রেমের কথা চলচ্চিত্রটি একটি উদাহরণ যেখানে পরিচালক বিনোদনের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়ার সৎ চেষ্টা করেছেন।

Satyaprem Ki Katha য় আহমেদাবাদের বাসিন্দা সত্যপ্রেম ওরফে সত্তু (কার্তিক আরিয়ান), একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে এসেছেন।  আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষায় ফেল করেছে সত্যপ্রেম । তার না কোনও চাকরি আছে, না বন্ধু। সারাদিন মা আর বোন তাকে কটু কথা শোনায়। তবু মুখের হাসি ফিকে হতে দেয় না সত্তু। বাবাই (গজরাজ রাও) তার একমাত্র বন্ধু। এভাবেই চলছিল জীবন। আচমকা সত্তুর জীবনে আসে কথা (কিয়ারা আডবাণী)। প্রথম দেখায় তার প্রেমে পড়ে যায় সে। কিন্তু, কথা সবেতেই পারফেক্ট। ফলে তার সঙ্গে যে সে জীবন কাটাবে না, এটা বুঝে যায় সত্তু। এরপর সে জানতে পারে, কথার আগে থেকেই প্রেমিক আছে। যে বিরাট ধনী। এটা জানার পর দূর থেকেই তাকে ভালোবাসার সিদ্ধান্ত নেয় সত্যপ্রেম।

আচমকা সত্তুর বাবা (গসিপের জন্য যাকে এলাকার পঞ্চায়েতি কাকা বলা হয়) কথার ব্রেক আপের খবর নিয়ে আসে। সত্তু বুঝে যায়, ভালোবাসা প্রকাশ করার এটাই সুযোগ। তাই কথাকে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কেন তার ব্রেকআপ হয়েছে, সেটা জিজ্ঞেসও করে না সে। কথার বড় একটা সিক্রেট অজানাই থেকে যায়। এরপরেই নয়া বাঁক নেয় ছবির গল্প।

স্পয়লার ছাড়া Satyaprem Ki Katha ছবির গল্প প্রসঙ্গে আর কিছুই বলা যাবে না। ফলত এটা বলে রাখা ভালো যে ট্রেলারের সঙ্গে এই সিনেমার চিত্রনাট্যের বিশেষ মিল নেই। হালকা মেজাজের ছবি নয় Satyaprem Ki Katha। বরং এই গল্পের মাধ্যমে বড় বার্তা দিয়েছেন পরিচালক সমীর বিধ্বংস। বাস্তবের সমাজচিত্র দেখিয়েছেন তিনি।

যদিও স্ক্রিনপ্লেতে মাত খেয়েছে Satyaprem Ki Katha এই সিনেমা। ছবিটির সবচেয়ে দুর্বল দিক হল এর অত্যধিক দৈর্ঘ্য। অনেক খোঁড়া দৃশ্য এবং অপ্রয়োজনীয় গান ছিল । সেই কারণে বেশ কিছু সিকোয়েন্স রিপিট হয়েছে। যা দর্শকের বিরক্তিকর বলে মনে হতে পারে। কিছু দৃশ্যকে অযথা বাড়ানো হয়েছে।তবে ছবির অভিনেতারা দুর্দান্ত। কার্তিক আরিয়ানের উপর বাজি ধরে ভুল করেননি পরিচালক। নিজের ভুবন ভোলানো হাসির মাধ্যমে এবারও দর্শকের মনে দাগ কেটেছেন অভিনেতা। এখনও নিজের নেক্সট ডোর বয় ইমেজ ধরে রেখেছেন কার্তিক। এই সিনেমার ক্ষেত্রে সেটাই তাঁর হাতিয়ার। গুজরাটি অ্যাকসেন্ট এবং ক্যাবলা বাচনভঙ্গিতে সত্তুকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন তিনি।

এদিকে কিয়ারা চরিত্রে বেশ কিছু শেড ছিল। এই চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলাটা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেক কথা না বলেও বুঝিয়ে দেয় তাঁর চরিত্র। কিন্তু, কিয়ারা সুচারু কায়দায় কাজটা করে ফেলেছেন। চরিত্রের এসেন্স ধরতে পেরেছিলেন তিনি। বলা যায়, কেরিয়ারের সেরা চরিত্রে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন কিয়ারা। কাজটা সুন্দরভাবে করেছেন অভিনেত্রী।

গজরাজ রাও, সুপ্রিয়া পাঠক, সিদ্ধার্থ রানদেরিয়ার মতো সিজনড অভিনেতারাও নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন এই সিনেমায়। রাজপাল যাদবকে ক্যামিও চরিত্রে ব্যবহার না করে কমিক রিলিফ হিসেবে ছবিতে আনা যেত। অভিনেতাকে প্রতিভা প্রদর্শন করতেই দেওয়া হয়নি। এই সিনেমায় সমীর বিধ্বংস ব্যতিক্রমী গুজরাটি পরিবারের চিত্র দেখিয়েছেন। অহমেদাবাদের এই পরিবার মাতৃতন্ত্রে বিশ্বাসী। বলিষ্ঠ মহিলাদের দেখানো হয়েছে গল্পে। তবে এই ছবিতেই গজরাজ রাওকে কার্তিক বলেছেন, ‘আপ পে শ বেয়রিয়া কুরবান।’ ফলে ডায়ালগে পরস্পরবিরোধী বার্তা আছে। যা বিভ্রান্তিকর।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top