৫৫ বছর পর সমুদ্রগর্ভে খুঁজে পাওয়া গেল রহস্যময় একটি অস্ট্রেলিয়ার জাহাজের ধ্বংসাবশেষ

জাহাজের ধ্বংসাবশেষ

উত্তরাপথঃ ডুবে যাওয়ার ৫৫ বছর পর সমুদ্রগর্ভে খুঁজে পাওয়া গেল এমভি নুনগাহ নামের অস্ট্রেলিয়ার একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। অস্ট্রেলিয়া বিজ্ঞান সংস্থা সাগরতলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে ধ্বংসাবশেষের অবস্থানস্থলের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।সম্প্রতি এক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬৯ সালের ২৫ আগস্ট নিউ সাউথ ওয়েলস উপকূলে ঝোড়ো আবহাওয়ার কবলে পড়ে এমভি নুনগাহ। জাহাজটিতে ইস্পাত ছিল।৩১৫ কিলোমিটার এগোনোর পর জাহাজটি একটি বিপজ্জনক ঝড়ের সম্মুখীন হয়,সেইসময়   এর গতি ছিল ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার বেশি, যা জাহাজটি সামলাতে পারেনি । তার ফলে বিপদসংকেত পাওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় এটি গভীর সমুদ্রে ডুবে যায়।

জাহাজ ডুবির পর অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনী ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক অনুসন্ধান চালায়। সেনাবাহিনী বিমান, হেলিকপ্টার এবং জাহাজ নিয়ে এমভি নুনগাহ (জাহাজের ধ্বংসাবশেষ)-এর সন্ধানে বের হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জাহাজটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং ৫ ক্রু সদস্যসহ ২৬ জনকে উদ্ধার করা হয়।জাহাজটি ডুবে যাওয়ার ১২ ঘন্টা পরেও অস্ট্রেলিয়ান সেনাবাহিনী কাঠের উপর মানুষ ভাসতে দেখেছিল বলে দাবী করা হয়। এরপর পরের ১২ বছরে আলাদা দুটি লাইফ বোট থেকে দুজনের মরদেহ এবং সাগরে কাঠের তক্তায় আটকে থাকা অবস্থায় আরও তিনজনের দেহাবশেষ উদ্ধার হয়। তবে জাহাজের অন্য ক্রুদের কী অবস্থা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এমনকি জাহাজটির পরিণতি কী হয়েছে, সে বিষয়টিও এত দিন পর্যন্ত রহস্যই থেকে গিয়েছিল।

গত মাসে, কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিএসআইআরও) এর বিজ্ঞানীরা জাহাজটি সনাক্ত করার জন্য অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন। এই জন্য ওই নির্দিষ্ট স্থানে একটি উচ্চ প্রযুক্তির জাহাজ পাঠানো হয়েছিল।বিজ্ঞানীদের মতে, তারা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ মিটার নিচে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন। এই জাহাজের নকশা এবং আকৃতি MV Noongah জাহাজের সাথে মিলে যায়, যা অনেকাংশে অক্ষত রয়েছে। এখন সিডনি প্রকল্পের আওতায় জাহাজটি পরীক্ষা করা হবে।

সেই সাথে প্রকল্পের আওতায় জাহাজ ডুবির সঠিক কারণ খুঁজে বের করা হবে। সিএসআইআরও জানিয়েছে যে আজও সেই ট্র্যাজেডির স্মৃতি মানুষের মধ্যে তাজা। আমরা আশা করি জাহাজের পুনরুদ্ধারের ফলে যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে এবং অনেক আজানা রহস্যের সমাধান হবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বৈধ নথি ছাড়া প্লেনে ওঠার চেষ্টা এটি কি নিছক কৌতুহল মেটানো

উত্তরাপথঃ এটি কি নিছক কৌতুহল না কি কিশোর দুস্ক্রিয়তা। সম্প্রতি বাংলাদেশ এর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাসপোর্ট, টিকিট বা বোর্ডিং পাশ কোনও কিছু ছাড়াই জুনায়েদ নামের ১২ বছরের এক শিশু বৈধ নথি ছাড়া বিনা বাধায় কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়ে। তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও প্লেনে চড়তে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছে। এবার কৌশল পালটে বিমানবন্দরে ঢোকে শিশুটি। এ ঘটনায় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ও সিকিউরিটি বিভাগের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শাতে বলা  হয়েছে। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি। যে এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে, সেই কুয়েত এয়ারলাইন্সকেও শোকজ করা হয়েছে।  বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, ছেলেটি ব্রোকেন ফ্যামেলি .....বিস্তারিত পড়ুন

রবি কিরণে “আদিত্য”

ড. সায়ন বসুঃ বীর "বিক্রমে" চাঁদের মাটিতে পা রাখার পর এবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র (ISRO)-এর লক্ষ্য সূর্য | আমাদের ৮টি গ্রহ (প্লুটো এখন বামন গ্রহের তালিকায়) যাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে সেই সূর্যের দিকে পাড়ি দিয়েছে "আদিত্য" ২রা সেপ্টেম্বর| চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের ১০ দিনের মাথায় আদিত্যকে সূর্যের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিয়ে ISRO বাকি বিশ্বের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রগুলির কাছে যে একটি শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছে তা বলাই বাহুল্য| আদিত্য মিশনের সূচনা ২০০৮ সালের জানুয়ারী মাসে মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত একটি উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে|প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয় যে একটি ছোট এবং কম ওজনের (৪০০ কেজি) কৃত্রিম উপগ্রহকে low Earth orbit (LEO ;লিও) যে কক্ষপথের উচ্চতা ১,২০০ কিলোমিটারের থেকে কম সেখানে পাঠানো হবে এবং তার কাজ হবে সূর্যের একদম যে বাইরের স্তর যাকে আমরা সৌর-করোনা বলি তার সম্বন্ধে তথ্য পাঠানো। .....বিস্তারিত পড়ুন

ধানের সাধ ভক্ষণ : জিহুড়

ড.  নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: আশ্বিন সংক্রান্তিতে কৃষক সমাজের মধ্যে জিহুড় পার্বণ পালিত হয়। কৃষক সাধারণের মধ্যে জিহুড় পার্বণের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জিহুড় অর্থাৎ আশ্বিন সংক্রান্তির সময় বহাল জমিতে লাগানো ধান বা বড়ান ধানে থোড় আসতে শুরু করে। সুতরাং ধান গাছ গর্ভাবস্থায় থাকে। মানুষের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের আচার-সংস্কার পালন করা হয়। এই সংস্কারগুলির অন্যতম হলো " ন' মাসি " অর্থাৎ গর্ভাবস্থার নবম মাসে যে আচার -অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এর কিছুদিন পরেই সন্তানজন্মগ্রহণ করে। মানব- সমাজের গর্ভাবস্থাজনিত এই ধরনের আচার সংস্কারের সঙ্গে ধান গাছের গর্ভাবস্থার কারণে পালনীয় অনুষ্ঠান জিহুড়ের সাদৃশ্য থাকে দেখা যায়। সেই জন্য অনেকে জিহুড় অনুষ্ঠানকে ধান গাছের 'সাধভক্ষণ'  বলে থাকেন। জিহুড়-এ ধান গাছ .....বিস্তারিত পড়ুন

সুপার পটেটোর অনুসন্ধান - বিজ্ঞানীরা আলু সুপার প্যানজেনোম তৈরি করেছেন

উত্তরাপথঃ আলু বহু শতাব্দী ধরে রান্নার বহুমুখীতা এবং উচ্চ পুষ্টির মানের জন্য খাদ্যের একটি প্রধান উৎস। আলু আজ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণে উৎপাদিত হয়, যা আলুকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ফসলগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে । বছরের পর বছর ধরে, বিজ্ঞানীরা আলুর ফলন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং পুষ্টি উপাদান উন্নত করার জন্য এবং আরও ভাল আলুর জাত প্রজননের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। আলুর জিন সম্পাদনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকরা আলু সুপার প্যানজেনোম তৈরি করেছেন যা আলু গবেষণা এবং প্রজননে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত হবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা । .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top