ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন মনু ভাকের,এক অলিম্পিকে দুটি পদক জিতে

মনু ভাকের ও সরবজোত সিং

প্যারিস অলিম্পিকে দ্বিতীয় পদক জিতেছে ভারত।  মঙ্গলবার, তিনি ১০ মিটার এয়ার পিস্তল মিশ্র ইভেন্টে সরবজোত সিংয়ের সাথে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন।  ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে ভারত দক্ষিণ কোরিয়ার ওহ ইয়ে জিন এবং লি ওয়ানহোকে ১৬-১০-এ হারিয়েছে।  ভারত মোট আট রাউন্ড জিতেছে, আর কোরিয়া জিতেছে পাঁচ রাউন্ডে।  এই প্রতিযোগিতায়, ১৬ পয়েন্ট অর্জনকারী প্রথম দলটি জয়ী হয়।  এর মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন মনু ভাকের ।  এক অলিম্পিকে দুটি পদক জিতে তিনি প্রথম ভারতীয় হয়েছেন।  নরম্যান প্রিচার্ড ১৯০০ সালে দুটি পদক জিতেছিলেন, তবে তিনি মূলত ব্রিটিশ ছিলেন।  মনু প্রথম ভারতীয়।  মনুর আগে আর কোনো ভারতীয় অ্যাথলিট এক অলিম্পিকে দুটি পদক জিতেনি।  এটিই সরবজোতের প্রথম অলিম্পিক পদক।

মঙ্গলবার পদক জয়ের ম্যাচে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। প্রথম শটেই কোরিয়ার থেকে পিছিয়ে পড়েন মনুরা । তবে দ্বিতীয় শট থেকে ভারতীয় জুটির দুরন্ত কামব্যাক। প্রথম পাঁচ শটের পর ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করে ফেলে ভারত। মাঝখানে কয়েকটা শট খারাপ হলেও লাগাতার ১০এর বেশি স্কোর করেছেন মনুরা। শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানে কোরিয়াকে হারিয়ে ভারতকে চলতি অলিম্পিকের দ্বিতীয় পদক এনে দিলেন মনু-সরবজ্যোত।

পদক জিতে অনন্য নজির গড়লেন হরিয়ানার তরুণ শুটার। স্বাধীনতার পরে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে একই অলিম্পিক থেকে দুটি পদক জেতার রেকর্ড গড়লেন মনু ভাকের। ১৯০০ সালে ভারতীয় হিসাবে এই নজির ছিল নর্ম্যান প্রিচার্ডের। সেবার অলিম্পিকে অ্যাথলেটিক্স থেকে দুটি রুপো জিতেছিলেন তিনি। তবে সেসময় ভারত ছিল ব্রিটেনের উপনিবেশ। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরে আর কোনও ভারতীয় ক্রীড়াবিদ একই অলিম্পিক থেকে জোড়া পদক নিয়ে দেশে ফিরতে পারেননি। সেই ‘অসাধ্য’ সাধন করলেন ভারতের শুটার।

চলতি অলিম্পিকে জোড়া পদক জিতে আরও এক রেকর্ডের মালিক হয়েছেন মনু। সুশীল কুমার এবং পিভি সিন্ধুর সঙ্গে একসারিতে বসলেন তিনি। স্বাধীনতার পরে কেবল এই দুই তারকাই দুটি করে পদক পেয়েছেন অলিম্পিকে। ২০০৮ সালে বেজিংয়ে ব্রোঞ্জের পর ২০১২ সালে লন্ডনে রুপো পেয়েছিলেন কুস্তিগির সুশীল কুমার। অন্যদিকে, ২০১৬ রিওতে রুপোর পরে ২০২০ টোকিওতে ব্রোঞ্জ এসেছিল সিন্ধুর ঝুলিতে। কিন্তু একই অলিম্পিকে দুটি পদক জিতে দুই পূর্বসূরিকে ছুঁয়ে ফেললেন মনু। চলতি অলিম্পিকে আবারও পদক জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। তাহলে কি ভারতের ক্রীড়াক্ষেত্রে মনুর হাতেই লেখা হবে নতুন ইতিহাস? এক অলিম্পিক থেকে তিনটি পদক নিয়ে ফিরবেন ভারতীয় শুটার?

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top