

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, প্রযুক্তির অগ্রগতি বিভিন্ন শিল্পে প্রবেশ করেছে এবং কৃষিও এর ব্যতিক্রম নয়।সুইডেনের লিঙ্কপিং ইউনিভার্সিটির গবেষণাগার থেকে কৃষি প্রযুক্তিতে একটি যুগান্তকারী উন্নয়ন আবিস্কৃত হয়েছে।সুইডিশ বিজ্ঞানীরা বৈদ্যুতিক পরিবাহী মাটি (Electronic soil) তৈরি করেছেন, যা প্রাকৃতিক মাটির চেয়ে বেশি উর্বর।বিজ্ঞানীদের দাবি এই মাটিতে ১৫ দিনে বার্লি গাছ ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এই উদ্ভাবনী মৃত্তিকাহীন চাষ পদ্ধতিটি ‘হাইড্রোপনিক্স’ নামে পরিচিত। এতে, একটি রুট সিস্টেম ব্যবহার করা হয় । গবেষকদের মতে , বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং জলবায়ু পরিবর্তন বড় আকার ধারণ করছে। এটা স্পষ্ট যে শুধুমাত্র বিদ্যমান কৃষি পদ্ধতিই আমাদের গ্রহের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। হাইড্রোপনিক্সের সাহায্যে, সাবধানে নিয়ন্ত্রিত অবস্থার অধীনে শহরের সীমিত পরিসরে খাদ্য চাষের সম্ভাবনা এখন একটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে।গবেষক দলটি, হাইড্রোপনিক চাষের জন্য একটি বৈদ্যুতিক পরিবাহী চাষের সাবস্ট্রেট তৈরি করেছে যার নাম eSoil।
‘হাইড্রোপনিক’ চাষে, মাটি ছাড়াই গাছপালা বেড়ে ওঠে।এই পদ্ধতিতে চাষে যা দরকার তা হল জল, পুষ্টি এবং একটি স্তর যা তাদের শিকড় সংযুক্ত করতে পারে। মৃত্তিকাহীন অভিনব চাষের এই পদ্ধতির মাধ্যমে সক্রিয় একটি অত্যাধুনিক রুট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।এই পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত পশুখাদ্যের মতো শস্য চাষ করা হয়নি। তবে গবেষকদের মতে, ভবিষ্যতে এই পদ্ধতি শস্যের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে।বর্তমানে এই পদ্ধতি বার্লি চাষের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। গবেষণা চলাকালীন, এটি পাওয়া গেছে যে বৈদ্যুতিক অনুঘটকের সাহায্যে বার্লি গাছের বৃদ্ধির হার একেবারে অনেকটা বেড়ে গেছে।
ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সম্মানিত জার্নাল প্রসিডিংস-এ প্রকাশিত, তাদের যুগান্তকারী গবেষণায় বার্লি চারা বৃদ্ধির অসাধারণ ত্বরণকে ১৫দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দেখানো হয়েছে যখন তাদের শিকড়গুলি বৈদ্যুতিকভাবে উদ্দীপিত হয়েছিল।হাইড্রোপনিক চাষে, গাছগুলি মাটি ছাড়াই বৃদ্ধি পায়, শুধুমাত্র জল, পুষ্টির উপর নির্ভর করে এবং মূল সংযুক্তির জন্য একটি সহায়ক স্তর দ্বারা। এই আবদ্ধ সিস্টেমটি জল পুনর্ব্যবহারকে সহজ করে, প্রতিটি চারাকে সুনির্দিষ্ট পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করে। ফলস্বরূপ, লেটুস, ভেষজ এবং বাছাই করা শাকসবজির মতো ফসল ইতিমধ্যেই সফলভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষ করা হয়েছে।
যদিও এই হাইড্রোপনিক কৃষির অপার সম্ভাবনা রয়েছে, তবু এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা মোকাবেলা করা দরকার। প্রথমত, এই ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক বিনিয়োগ ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য একটি বাধা হতে পারে। দ্বিতীয়ত,এই পদ্ধতি কার্যকরভাবে ব্যাখ্যা এবং ব্যবহার করার জন্য প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এই চ্যালেঞ্জগুলি থাকলেও নতুন এই কৃষি পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক পরিবাহী মাটি (Electronic soil) ব্যবহার করে দ্রুত অধিক পরিমাণে ফসল চাষের সুবিধাকেও উপেক্ষা করা যায় না। এই প্রযুক্তির বিকাশ কৃষিকে আরও দক্ষ, দীর্ঘমেয়াদী এবং উৎপাদনশীল শিল্পে রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতি রাখে।
আরও পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন