

অসীম পাঠকঃ গোটা চৌধুরী পরিবার জুড়ে হৈচৈ কান্ড। কি না নতুন বউ মাছের কাঁটা বাছতে জানে না। একান্নবর্তী পরিবারে বাড়ির বড়ো ছেলে অর্নবের বউ নিশা মাছের কাঁটা বেছে খেতে পারেনা। তা না পারার ই কথা, ডাক্তার ছেলের ইঞ্জিনিয়ার বউ। শ্বশুর বাড়িতে যেদিন প্রথম পা রাখে নিশা সেদিন অর্নবের মা নমিতা দেবী তার গালে চুমু খেয়ে আদর করে বলেছিলো, তুই আমার মেয়ের অভাব পুরন করলি, মেয়ের মতোই থাকবি। তা প্রথম দিন খেতে বসেই নতুন বউ ডাক দেয়, মা কোথায় আমাকে খাইয়ে দাও, অফিস বেরুতে হবে। এ কি আদিখ্যেতা রে বাবা। নমিতা দেবী না পারছেন কিছু বলতে না পারছেন হজম করতে, এ যে গলার কাঁটা। মনে মনে গজরাতে গজরাতে ভাবেন একি বিষফোঁড়া উঠলো রে বাবা। নিশা সব বুঝে আদুরে গলায় বলে, আমি তো আপনার মেয়ে তাই না ? নমিতা দেবী কাৎলা মাছের মত মুখ করে বলেন, অবশ্যই। নিশা।অর্নবের দিকে চোখ টিপে মুচকি হাসে। নমিতা দেবী বলেন, তা হ্যাঁ মা মাছের কাঁটা না হয় বাছতে পারো না তাই বলে কি মাংসের হাড় ও বেছে দিতে হবে । সাথে সাথেই চটপটি মেয়ের ঝটপট জবাব, ও মা আপনি জানেননা যে আমি হাড় বিহীন মাংস খাই, এখন তো বোনলেস চিকেনের যুগ তা আপনাদের হেঁসেলে তো মুরগি চলে না, কি আর করি ফিগারটা তো মেন্টেন করতে হবে, মাছই ভরসা। নতুন বউ এর কথা শুনলে নমিতা দেবীর গা জ্বলে যায়। একদিন বলেই ফেললেন একটু আধটু রান্নাঘরে যাওয়ার কথা। শুনেই নিশা বলে, তা কি করে হয় মা, আমি তো চাকরী করি, এই যে আমার শ্বশুর মশাই উনি কি রান্নাঘরে যান ? আর আপনার ছেলেকেই দেখুন এক কাপ চা অবধি বানাতে পারে না। মেজ কাকাবাবু ছোট কাকাবাবু সবাই তো সকাল সকাল ভাত খেয়ে অফিস ছোটেন। আমি রাঁধতে শিখিনি মা তবে রান্নার যোগান দিতে পারি।
সেদিন সন্ধ্যায় অফিস ফেরত নিশা বাজার থেকে দশ কিলো একটা রুই মাছ নিয়ে আসে। এতো বড়ো মাছ গোটা বাড়ি হুলুস্থুল পড়ে যায়। নমিতা দেবী আমতা আমতা করে বলেন এমা এতো বড়ো মাছ কেনো আনলে ? নিশা বলে বড়ো মাছের কাঁটা বাছতে আপনার সুবিধা হবে তাই। নমিতা দেবী আর কথা না বাড়িয়ে বলেন তুমি তোমার রুমে যাও মা আমি চা পৌঁছে দিচ্ছি। অর্নব ও সেদিন তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে ও টি সেরে বাড়ি ফেরে । দুজনে ছাদে বসে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাবার প্ল্যান বানায়। হাতে ধূমায়িত চা চোখে চোখে রোমান্সের মিষ্টি আবহ আর বসন্তের মৃদু বাতাসে বেশ মাছ ভাজার গন্ধ ভেসে আসে।
আরও পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন