মানভূমে কথিত নামযুক্ত কৃষিপ্রবাদ 

ছবি সৌজন্য – বলরাম মাহাতো

ড. নিমাইকৃষ্ণ মাহাতঃ মানুষ যখন তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ শক্তির দ্বারা কোনো বিষয়ে একটি সত্যে উপনীত হয় , তখনই সেই উপলব্ধ সত্য বিশিষ্টার্থক পদগুচ্ছ রূপে প্রকাশিত হলে তাকে প্রবাদ বলে। মানভূমে কিছু রচয়িতার নাম যুক্ত কৃষিপ্রবাদ রয়েছে ‌। যদিও আমরা জানি লোকসাহিত্যে ব্যক্তি নামের কোন মূল্য নেই । কারণ এটি মৌখিক ধারায় প্রজন্মান্তরে গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবাহিত হয় । কিন্তু খনা , ডাক , রাবণ প্রমুখের ব্যক্তি নামসহ প্রবাদগুলি লোকসমাজের দ্বারা গৃহীত , লালিত ও প্রবাহিত । যদি লোকমানস এগুলিকে না মেনে নিত তবে তারা oral tradition হয়ে বেঁচে থাকত না । কালের কষ্টিপাথরে এরা বিশুদ্ধ ও উত্তীর্ণ।

খনার বচন

খনার বচন গুলি কৃষিকেন্দ্রিক গ্রামবাংলায় দীর্ঘদিন ধরে প্রবাদ-প্রবচনের আকারে প্রচলিত রয়েছে এবং এগুলি প্রায় লোকবিশ্বাসে পরিণত হয়েছে। কৃষক -জনমানসে এগুলির প্রভাবও প্রবল। 

বস্তুত, কৃষকসমাজের সুদীর্ঘকালীন অভিজ্ঞতা খনার বচনগুলিতে বিশেষত কৃষিকেন্দ্রিক খনার বচনগুলিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই, খনার বচনগুলিতে ব্যক্ত কৃষিকেন্দ্রিক অভিজ্ঞতা বা সিদ্ধান্তগুলি যতটা না বাস্তব সত্যের কাছাকাছি , তার চেয়েও অনেক বেশি কাছাকাছি লোকবিশ্বাসের। খনার বচনে ব্যক্ত বিষয়টি ধ্রুবসত্য নাও হতে পারে , কিন্তু সেখানে লোকবিশ্বাসটিই  যে মূ্ল –  তা বুঝে নিতে অসুবিধা  না। 

মানভুমের কৃষকসমাজে কৃষিবিষয়ক অনেকগুলি খনার বচন প্রচলিত রয়েছে । এগুলি কৃষিসংক্রান্ত বিশেষ অবস্থা , ঘটনা , পরিস্থিতির বর্ণনা প্রসঙ্গে বা দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রবাদ- প্রবচন রূপে উল্লেখিত হয় । যেমন – 

 কোল পাতলা, ডাগর গুছি , 

লক্ষ্মী বলেন ঐখানে আছি।

 এটি খনার বচন । মানভূম অঞ্চলে এটি সমাধিক প্রচলিত। এখানে ধান রোপণের সময় চারাগাছ গুলির বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে । আদর্শ ধানের চারার গোছ বেশি হতে হবেকোল ফাঁকা হবে ‌‌। তবেই সে চারা থেকে ভালো ধান পাওয়া যাবে। 

উঠান ভরা লাউ শসা,

খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।

বাড়ির উঠানে লাউ, শসা চাষ করা কৃষক পরিবারের পক্ষে শুভ প্রতীক হিসাবে গণ্য হয় । খনা বলেন উঠানে লাউশসার প্রাচুর্য থাকলে কৃষকের বাড়িতে মা লক্ষ্মী বিরাজ করেন।

 কি কর শ্বশুর লেখা- জোখা ? 

মেঘেই  বুঝবে  জলের লেখা ।

কোদাল কুড়ুল মেঘের গা, 

মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা,

কৃষককে বলগে বাঁধতে আল ,

আজ, নয় বৃষ্টি হবে কাল।।

পুত্রবধূ খনা শ্বশুর মশাই বরাহ পণ্ডিতকে ( কথিত আছে বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহের পুত্র পন্ডিত মিহিরের স্ত্রী হলেন বিদূষী খনা) বলছেন যে, তিনি কী এত হিসাব- নিকাশ, লেখালেখি করছেন, মেঘ দেখেই তো বুঝা যাবে কখন বৃষ্টি হবে। মেঘ যদি  কোদাল বা কুড়ুল আকৃতির হয় এবং মাঝে মাঝে বাতাস বয়, তাহলে শীঘ্রই বৃষ্টি হবে। চাষি যেন খেতের আল বাঁধার উদ্যোগ নেন।

কোদালে মান, তিলে হাল।

কোদালে মাটি তৈরি করে মান গাছ (কচু জাতীয় গাছ ) লাগাতে হয়। এবং শুধু লাঙ্গল চালিয়ে ( মাটি সমতল না করেই ) তিল বপন করতে হয়।

ছায়ে লাউ, উঠানে ঝাল।

কর বাপু চাষার ছাওয়াল।।

এখানে চাষির ছেলেকে ছায়ায় লাউ এবং উঠানে লঙ্কা চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বামুন , বাদল , বান – দক্ষিণা পেলেই যান।

দক্ষিণা পেলেই বামুন বিদায় হন । আবার দক্ষিণ দিকের বাতাসে বাদল কেটে যায়। ফলে নদীতে বান  বা বন্যা দেখা যায় না।

ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন ।

বৃষ্টি হবে শীঘ্র জানো।।

ব্যাঙ বৃষ্টির আগমনের পূর্বাভাস সহজেই  বুঝতে পারে। তাই ব্যাঙ ঘন ঘন ডাকলে বুঝতে হবে শীঘ্রই বৃষ্টি হবে। 

দিনে রোদ , রাতে জল , 

তাতে বাড়ে ধানের বল।   

দিনের বেলা রৌদ্র এবং রাত্রে বৃষ্টির জল হলে তা ধান গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টির পক্ষে খুবই সহায়ক। এই ধরনের পরিবেশে ধান গাছ সুস্থ-সবল ও সতেজ ভাবে বেড়ে ওঠে , ফলে ফলন ভালো হয়।

শ্রাবণের পুরো ,ভাদ্রের বারো ‌।

এর মধ্যে যত পারো ।।

পুরো শ্রাবণ মাস ও ভাদ্র মাসের বারো দিন পর্যন্ত আমন ধান রোপণ করা যায়।

এরকম অজস্র খনার বচন গ্রামবাংলায় প্রচলিত রয়েছে ‌।  কৃষিকেন্দ্রিক এই খনার বচনগুলির গুরুত্ব গ্রামবাংলায় এখনো যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। 

ডাকের বচন

গ্রামবাংলায় একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে  – ‘ ডাক পুরুষের কথা ‘। এই ‘ ডাক পুরুষের কথা ‘ য় ডাকের বচন নামে পরিচিত। কয়েকটি ডাকের বচন উল্লেখ করা হল –

চৈত গর্মি  , বৈশাখ ছাড়া,

প্রথম আষাঢ়ে ভরায় গাড়া , 

ডাক বলে বর্ষা থোড়া।

চৈত্র মাসে গরম , বৈশাখ মাসে যদি শীত অনুভূত হয় এবং আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে যদি বাঁধ, পুকুর , ডোবা জলে ভর্তি হয়ে যায় তবে  ডাক – এর  মতে সে বছর বর্ষাও ভালো হয় না , চাষও ভালো হয় না।

অভুক্তা বড়ই, ভুক্ত বেল, ডাক বলে – পরাণ গেল।

অভুক্ত অবস্থায় অর্থাৎ খালি পেটে বেল খেলে উদর-পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । অনুরূপভাবে রয়েছে  – খালি পেটে কুল , ভর্তি পেটে মুলা । খালিপেটে কুল বা ভর্তি পেটে মূলা খেলে বদহজম হয় না , বরং সেগুলি হজমের পক্ষে সহায়ক । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , ভর্তি পেটে আখ খেলে তা হজমের পক্ষে সহায়ক মনে করা হয়।

মানভূম অঞ্চলের গ্রামীণসমাজে এরকম আরো কিছু ডাকের বচন প্রচলিত রয়েছে।

রাবণের বচন

খনা বা ডাক ছাড়াও রাবণ বলে কোন এক ব্যক্তির উল্লেখ গ্রাম বাংলার প্রবাদ জগতে পাওয়া যায় ।সম্ভবত রাবণ বাংলার বাইরের কোন অঞ্চলের ব্যক্তি ছিলেন , যার জন্য তাঁর কথিত প্রবাদের সরাসরি উল্লেখ খুব একটা পাওয়া যায় না। কিন্তু তাঁর নাম উল্লেখ পাওয়া যায় মানভূম অঞ্চলে প্রচলিত কয়েকটি প্রবাদে । যেমন –

রথের পরে রুয়ে কলা ,

লঙ্কায় মৈরল রাবণ শালা।

কৃষক সমাজের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে যে লঙ্কার রাজা রাবণ রথ-যাত্রার (আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি) পর কলাগাছ রোপণ করেছিলেন এবং এর ফলশ্রুতিতে সবংশে নির্মূল হয়েছিলেন। যদিও রাবণের নামে প্রচলিত একটি প্রবাদে রথের পরেই অর্থাৎ আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে কলা রোপণের কথা বলা হয়েছে। প্রবাদটি হল –

ডাক দিয়ে বলে রাবণ ,

কলা পোঁতগে আষাঢ়-শ্রাবণ।

রথযাত্রার পরে কলা রোপণ নিষিদ্ধ –  এই ধারণার প্রতি সমর্থন দেখা যায় গ্রামবাংলায় প্রচলিত একটি খনার বচনেও । খনার বচনটি হল- 

ডাক দিয়ে বলে খনা,

আষাঢ়-শ্রাবণ কলা পুঁতো না।

বস্তুত, খনা যা বলেছেন, রাবণ ঠিক তার উল্টোটি বলেছেন।

প্রবাদ ছাড়াও কৃষি সাহিত্যের অন্য ধারাতেও ব্যক্তির নামযুক্ত কৃষিপ্রবাদ সাহিত্য পাওয়া যায়। যেমন – এই অঞ্চলের একটি প্রচলিত ধাঁধায় বলাই নামক কোন ব্যক্তির নাম পাওয়া যাচ্ছে- 

ফুল খাই, তার ফল খাই

পাতে খাই কলাই,

এই কথাটি বলে গেছে –

বিষ্টুপুরের বলাই।

-মহুল ফুল,  মহুল ফল (কচড়া) ও মহুল পাতা ।

মহুল ফুল, কচড়া ফল যেমন খাওয়া হয়, সেরকম জিতা অষ্টমী ব্রতের সময় মহুল পাতার খোলায় (ঠোঙায় ) ছোলা (কলাই) খাওয়া হয়।

মানভূম অঞ্চলের কৃষিকেন্দ্রিক গ্রামীণসমাজ ব্যবস্থায় এই  কথিত নামযুক্ত কৃষিপ্রবাদগুলির প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব এখনো বর্তমান।

খবরটি শেয়ার করুণ

2 thoughts on “মানভূমে কথিত নামযুক্ত কৃষিপ্রবাদ ”

  1. I’m a fan of Dr. Mahato’s article & more interested on manbhum lokosanskriti rather than agriculture.Sir, we will be happy if you write something on manbhum loksanskriti. Thank you, sir, for your excellent writing,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top