বন্ধ হতে চলেছে স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতিধন্য লন্ডনের ইন্ডিয়া ক্লাব

লন্ডনের ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া ক্লাব; সংগৃহীত-ছবি টুইটার

উত্তরাপথঃ বন্ধ হতে চলেছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতিজড়ানো লন্ডনের ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া ক্লাব। সেই সাথে সমাপ্তি হতে চলেছে ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতিজড়ানো এক অধ্যায়ের। এককালে ঐতিহাসিক এই ইন্ডিয়া ক্লাব জাতীয়তাবাদী বিপ্লবীদের আখড়া ছিল। খাওয়া-দাওয়া, আড্ডার পাশাপাশি চলত রাজনীতি, দেশকে স্বাধীন করার পরিকল্পনা নিয়ে মতের আদানপ্রদান। এই নামী রেস্তরাঁয় নিয়মিত যাতায়াত ছিল স্বাধীন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, পরবর্তীকালে ব্রিটেনে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রদূতের পদ অলঙ্কৃত করা কৃষ্ণ মেননেরও।

রেস্তরাঁর মালিক ইয়ডগার মার্কার ও ফিরোজা জানিয়েছেন, “দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি আগামী মাসে ঝাঁপ পড়ছে ইন্ডিয়া ক্লাবের। ১৭ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো জনসাধারণের জন্য খোলা থাকবে তার দরজা।” সাদামাঠা রেস্তরাঁর দেওয়ালে এখনও জ্বলজ্বল করছে ভারতের বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী নেতার ছবি। তবে মাত্র আর মাত্র কটা দিন এরপরই আর থাকবে না ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতিজড়ানো এই ক্লাবটির অস্তিত্ব। ক্লাব সম্পর্কে কথা বলার সময়, ফিরোজা উল্লেখ করেছেন, “70 বছরেরও বেশি সময় আগে খোলার পর থেকে, ইন্ডিয়া ক্লাব ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের জন্য বাড়ি থেকে দূরে, সেইসাথে ভারত-এর জন্য একটি কমিউনিটি স্থান ছিল।”

ইতিহাসের স্মৃতি বিজড়িত লন্ডনের ইন্ডিয়া ক্লাব ভেঙে ফেলার চেষ্টা বহুদিনের। রেস্তরাঁর জমির মালিক মারস্টন প্রপার্টিজ সেখানে নতুন হোটেল নির্মাণের জন্য রেস্তরাঁ আংশিক ভেঙে ফেলতে ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলে আবেদন করে। যদিও ২০১৮র আগস্টে লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে ওই রেস্তরাঁর গুরুত্ব স্বীকার করে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কাউন্সিল। জয় হয় রেস্তরাঁর মালিক ইয়ডগার মার্কার ও তাঁর মেয়ে ফিরোজার। তাঁদের ‘সেভ ইন্ডিয়া ক্লাব’ উদ্যোগ সফল হয়। কিন্তু এবার তাঁরা সেটি আর রক্ষা করতে পারছেন না। মারস্টন প্রপার্টিজ তাঁদের নোটিশ দিয়ে জানিয়েছে, সেখানে রেস্তরাঁ উঠে গিয়ে হবে অত্যাধুনিক হোটেল। তাই রেস্তরাঁ খালি করে দিতে হবে। প্রসঙ্গত ১৯৫১ সালে লন্ডনের স্ট্র্যান্ডে তৈরি হয় এই ইন্ডিয়া ক্লাব। যার উদ্যোক্তা ছিল ইন্ডিয়া লিগ নামে ভারতের স্বাধীনতাকামী একটি ব্রিটিশ সংগঠন। ১৯২৮ সালে মেননের নেতৃত্বেই ওই সংগঠন তৈরি হয়। লিগের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন বড়লাট লর্ড মাউন্টব্যাটন-পত্নী লেডি এডুইনা মাউন্টব্যাটেন।

প্রসঙ্গত ১৯৫১ সালে লন্ডনে তৈরি হয় ইন্ডিয়া ক্লাব যার উদ্যোক্তা ছিল ইন্ডিয়া লিগ নামে ভারতের স্বাধীনতাকামী একটি ব্রিটিশ সংগঠন। ১৯২৮ সালে মেননের নেতৃত্বেই ওই সংগঠন তৈরি হয়। লিগের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন বড়লাট লর্ড মাউন্টব্যাটন-পত্নী লেডি এডুইনা মাউন্টব্যাটেন।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ওসাকা ক্যাসেল – ঐতিহাসিক এক দুর্গ ভ্রমণ

ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী, টোকিও, জাপান: কেল্লা বা দুর্গ এই নাম শুনলেই কল্পনায় ঐতিহাসিক ঘটনায় মোড়া রোমাঞ্চকর এক ভ্রমণক্ষেত্রের দৃশ্য ভেসে ওঠে। জাপানে এমন শতাধিক দুর্গ আছে যার সৌন্দর্য আজও যেমন বিমুগ্ধকর ঠিক তেমনি তার অতীতের সাদা কালো দিনের গল্প দর্শনার্থীকে অবাক করে। প্রাচীনকাল থেকেই জাপানে দুর্গ তৈরি হয়ে আসছে, তবে ইতিহাস বলছে দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন ও গৃহ যুদ্ধের কারণে ১৫ শতকের গোড়া থেকে দুর্গের বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়। সামন্ত যুগে, জাপান বেশ কিছু ছোট ছোট স্বাধীন রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল, যারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রায়ই যুদ্ধ ঘোষণা করত এবং .....বিস্তারিত পড়ুন

২০২৩ নির্বাচন কি সত্যি ২০২৪ এর সেমিফাইনাল ?

উত্তরাপথ: ২০২৩ নির্বাচন কি সত্যি ২০২৪ এর সেমিফাইনাল ? না  কি কংগ্রেসের কাছে আবার একটু - একটু  করে ঘুরে দাঁড়াবার প্রচেষ্টা এবং বিজেপির কাছে মোদী ম্যাজিক যে এখনও অব্যাহত সেটা প্রমান করা। বিজেপির এখন প্রচারের একমাত্র মুখ নরেন্দ্র মোদী। সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক নির্বাচনের পুরো প্রচার হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই নিজেও প্রধানমন্ত্রী মোদির নামে ভোট চাইলেন। তার  উপরে, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে .....বিস্তারিত পড়ুন

বেতন, মাসে ৩০,০০০ আর সম্পত্তির মালিকানা ৭ কোটির বেশী

উত্তরাপথ: এ এক দুর্নীতির অনন্য নজির যা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি কে লজ্জায় ফেলবে । দুর্নীতির এই অভিযোগটি উঠেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ হেমা মীনার বিরুদ্ধে।মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পর হেমা মীনা প্রচার মাধ্যমের নজরে আসে । এখন প্রশ্ন কে এই হেমা মীনা ? মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ যিনি মাসে ৩০,০০০ টাকা আয় করেন । দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার বাড়ি থেকে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ি, ২০,০০০ বর্গফুট .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top