Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, ‘নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।

নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন।

নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)স্কিমটি ২০১৮ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল এবং তারপর থেকে এটি বিতর্কের মধ্যে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের কথা উল্লেখ করেন। ইলেক্টোরাল বন্ড স্কিমের আগে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোকে তহবিল দেওয়ার জন্য ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট বা ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট স্কিম ব্যবহার করা হতো। এই প্রকল্পটি ইউপিএ-২ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল।

ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট বা ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট স্কিমের অধীনে কোম্পানি আইন ১৯৬৫ এর ধারা ২৫ এর অধীনে নিবন্ধিত একটি সংস্থা একটি নির্বাচনী ট্রাস্ট গঠন করতে পারে এবং যে কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি এর মাধ্যমে জাতীয় বা স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলিকে তহবিল দান করতে পারে। প্রতি অর্থ বছরে নির্বাচনী ট্রাস্টের মাধ্যমে সংগৃহীত পরিমাণের ৯৫ শতাংশ রাজনৈতিক দলগুলিকে দান করা প্রয়োজন এবং নির্বাচনী ট্রাস্টকে আর্থিক বছরে পুনর্নবীকরণ করতে হবে।

অন্যদিকে ইলেক্টোরাল বন্ড (Electoral Bond)হল ,কেউ যদি রাজনৈতিক দলকে দান করতে চায়, তাহলে সে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে তহবিল দান করতে পারে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্বাচিত শাখাগুলি থেকে কেউ ১০০০, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনতে পারেন৷ বন্ড কেনার পর, শুধুমাত্র ১৫ দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে দান করতে হবে। এর প্রস্তাবটি ২০১৭ সালে আনা হয়েছিল এবং ২০১৮ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছিল।

নির্বাচনী বন্ডে(Electoral Bond),তহবিল দানকারী ব্যক্তির পরিচয় এবং যে দলকে তহবিল দেওয়া হয়েছিল উভয়ের পরিচয় গোপন রাখা হয়। একইসঙ্গে ইলেক্টোরাল ট্রাস্টে অবদানের সময় দাতার পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট ট্রাস্টের জন্য একজন দাতা রয়েছে, যেখান থেকে কে কাকে তহবিল দিয়েছে তা জানা যায়। তবে, বিভিন্ন অবদানকারী থাকলে, কে কাকে অর্থায়ন করেছে তা জানা কঠিন হবে। ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট সম্পর্কে, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন যে এতে দাতার গোপনীয়তা বজায় রাখা হয় না, তাই লোকেরা নির্বাচনী ট্রাস্টের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করতে পছন্দ করে না।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


আগামী ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কি সলমন খানকেও দেখা যাবে কলকাতায় ?

উত্তরাপথ: একেই বলে রথ দেখা কলা বেচা। এলেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে,আর বাড়তি পাওনা হিসেবে পেয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ।  কালো টয়োটা এসইউভি ডব্লিউবি০২এএন৬৬৪৯ গাড়িতে করে বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে পৌঁছেযান মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে। অবশ্য রাস্তায় উপচে পড়া ভিড়ের জন্য দু'বার দাঁড়াতে হয়েছিল গাড়িতে থাকা সুপারস্টারকে। পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢোকে সলমন খান। আগেই নিজের টালির চালার বাড়ির সামনে আটপৌড়ে শাড়িতে অপেক্ষায় .....বিস্তারিত পড়ুন

১ কোটি টাকার মানহানির মামলা প্রাক্তন CJI রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে

উত্তরাপথ: গুয়াহাটির একটি স্থানীয় আদালতে আসাম পাবলিক ওয়ার্কসের (এপিডব্লিউ) সভাপতি অভিজিৎ শর্মার রাজ্যসভার সাংসদ এবং ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ১কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে।  অভিজিৎ শর্মার অভিযোগ রঞ্জন গগৈ তার আত্মজীবনী জাস্টিস ফর এ জাজে  তার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর এবং মানহানিকর বিবৃতি প্রকাশ করেছে । তাই তিনি প্রকাশক গগৈ এবং রুপা পাবলিকেশন্সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন  এবং কোনও বই প্রকাশ, বিতরণ বা বিক্রি করা থেকে বিরত রাখার জন্য অন্তবর্তী .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top