এককধাপে একটি কার্বন পরমাণুর সাথে চারটি নতুন বন্ধন: একটি আকস্মিক আবিষ্কার

ড. সঞ্জিত কুমার মাহাতো*, উদয়পুর, রাজস্থান

কঠোর পরিশ্রম আর সততার মধ্য দিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি ও প্রযুক্তিতে জায়গা করে নিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগর এর পশ্চিমের ৬৮০০ টি দ্বীপ নিয়ে তৈরি এই ছোট্ট দেশ জাপান। আর এই সব কিছুর উপর মূলে রয়েছে তাদের মৌলিক গবেষণা খাতে ব্যায়। যার সুদূরপ্রসারী ও চমকপ্রদ ফলাফল লক্ষ্য যাচ্ছে। তাই তো এই বছরের শুরুর দিকে জাপান সরকার $75-বিলিয়ন এন্ডোমেন্ট তহবিলের (Nature 2023, 615, S84) সাথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি নির্বাচিত গ্রুপে নতুনকরে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা তাদের বিশ্বমানের গবেষণা তৈরি করতে আরো উদ্দীপনার সাথে এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা করার অনুমতি দেবে। এই দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে, টোকিও, কিয়োটো, ওসাকা, হক্কাইডো ও নাগোয়া অগ্রগণ্য। এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলো একের পর এক চমকপ্রদ আবিস্কার করে চলেছে যা কি না দেশের প্রযুক্তি উন্নয়ন এর চাবিকাঠি।

সম্প্রতি ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক মামোরু টোবিসু (জৈব রসায়ন) এবং তার সহকর্মীরা এমন  এক আশ্চর্য আবিস্কার করেছেন যা জৈব রসায়ন-এ এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তার এই নতুন গবেষণা বিখ্যাত সায়েন্স (Science 2023, 379, 484) পত্রিকা তে প্রকাশিত হয়েছে এই পদ্ধতি একক ধাপে একটি কার্বন পরমাণুর সাথে চারটি নতুন বন্ধন তৈরী করে নজির সৃষ্টি করেছেন। ইহা রসায়নের গবেষণায় বিরল আবিষ্কার এবং এই নতুন পদ্ধতি জৈব সংশ্লেষণের প্রধান লক্ষ্যগুলির মধ্যে একটি হল জটিল অণু যেমন ওষুধ বা নতুন উপকরণে তৈরি করা যা কার্যকর হতে পারে। কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O) এবং অন্যান্য উপাদানগুলি একে অপরের হাত ধরে বন্ধন গঠন করে স্থিতিশীল জৈবযৌগ (Organic molecule) তৈরি করে যা আমাদের শরীরে এবং রাসায়নিক শিল্প উভয় ক্ষেত্রেই বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। C এর চারটি হাত (handle) রয়েছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু যা C এর পাশে complex skeletal তৈরি করতে পারে। আর যত বেশি খালি হাত থাকে, সংশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত পদার্থ তত বেশি হাত নতুনভাবে একত্রিত করা যায় এবং আরও জটিল পদার্থ তৈরি করা যায়। এখন পর্যন্ত, 3টি শূন্যপদ সহ C ব্যবহার করে সংশ্লেষণ পদ্ধতি ছিল। এটি মূলত পারমাণবিক কার্বনের চরম অস্থিরতার এবং নিয়মিত পরীক্ষাগার অবস্থায় তৈরি করার সহজ উপায় না থাকায় টোবিসুর পরীক্ষাগারে N-Heterocyclic Carbenes নামে পরিচিত এক শ্রেণীর অনুকে ‘মুখোশযুক্ত পারমাণবিক কার্বন’ (Masked Atomic Carbon) হিসেবে ব্যবহার করেছেন। যা অতীতের রাসায়নিক বিক্রিয়াতে বিপুলভাবে অনুঘটক এর সঙ্গে Ligand হিসেবে প্রচলন হয়ে এসেছে। কিন্তু প্রায় কোনোটিতেই শুধুমাত্র একটি কার্বন পরমাণু যোগ করা হয় না। এই প্রথম উচ্চ তাপমাত্রায় অ্যামাইড যৌগের মধ্যে শুধুমাত্র একটি কার্বন পরমাণু বসাতে সফল হয়েছে যা γ-ল্যাকটাম (চক্রীয় অণু যা অ্যান্টিবায়োটিকগুলিতে সাধারণ) যৌগ সংশ্লেষণ করতে সক্ষম৷ যেটি ভবিষতে ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

Prof. Tobisu তার সহকর্মীদের সাথে [Picture Curtesy: Prof. Mamoru Tobisu]

উল্লেখনীয়, আণবিক কঙ্কালের সাথে সরাসরি পরমাণু সন্নিবেশ (insertion), মুছেফেলা (elimination) বা বিনিময় (exchange) প্রতিক্রিয়া যা “কঙ্কাল-সম্পাদনা প্রতিক্রিয়া” (Skeletal-editing reactions) নামে পরিচিত এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ব্যাপক আকর্ষণ করছে। অক্সিজেন (Baeyer–Villiger oxidation) এবং নাইট্রোজেন (Schmidt reaction) পরমাণুর সন্নিবেশ প্রতিক্রিয়া কয়েক দশক বিপুলভাবে লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি, Morandi গ্রুপ (Science 2022, 377, 1104) নাইট্রোজেন পরমাণুর সন্নিবেশ দ্বারা ইন্ডোল (Indole) থেকে বেনজোপাইরিমিদিন (benzopyrimidine) তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তবে কার্বন পরমাণুর সন্নিবেশ প্রতিক্রিয়া তুলনামূলক ভাবে কম লক্ষ্য করা গেছে এবং তা কেবল মাত্র রিং সম্প্রসারণ (ring expansion) এর উপর নির্ভর করে। যেমন পাইরোল অনুর সাথে ডাইক্লোরোকারবিনের বিক্রিয়াতে পিরিডিন তৈরি যা সাইক্লোপ্রোপ্যানেশনের মাধ্যমে একটি কার্বন পরমাণু ঢোকানো (Ciamician-Dennstedt Rearrangement) অথবা ইন্ডোল (Indole) থেকে কুইনোলিন (Quinoline) তৈরি কলোরোডায়াজিন (Chlorodiazirine) বিকারক ব্যবহার করে। Prof. Tobisu-র এই Single Carbon Atom Skeletal Editing অবশ্যই জৈব রসায়ন-এ এক সেরা সংযোজন।

[Image Curtesy: Prof. Mamoru Tobisu]

এই বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক দশক ধরে অনেক বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রসায়ন বিজ্ঞানে গুর্রুতপূর্ণ গবেষণায় সম্মৃদ্ধ করেছেন যেমন Prof. Kumada (Kumada Coupling), Sonogashira (Sonogashira Coupling), Fujiwara, Moritani (Fujiwara–Moritani reaction), Murai, Chatani, (C-H Functionalization), Murahashi (Murahashi coupling) প্রমুখ। আশাকরছি Prof. Tobisu আগামী দিনের গবেষণা ওনার প্রাপ্তনদের কেও ছাড়িয়ে যাবে।

*লেখক Osaka University Alumni (2018-2022) ও বর্তমানে PI Industries Ltd., Udaipur, India এ কর্মরত। Email: chem_sanjit@rediffmail.com

খবরটি শেয়ার করুণ

2 thoughts on “এককধাপে একটি কার্বন পরমাণুর সাথে চারটি নতুন বন্ধন: একটি আকস্মিক আবিষ্কার”

    1. uttarapath_admin

      আপনার মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের হেপাজতে থাকা বেসামরিক বন্দীদের তালিকা বিনিময় করেছে

পররাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর ভারত ও পাকিস্তান সোমবার একে অপরের হেফাজতে থাকা বেসামরিক বন্দী এবং জেলেদের তালিকা বিনিময় করেছে।মন্ত্রক সূত্রে আরও বলা হয়েছে নয়াদিল্লির অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে ২০১৪ সাল থেকে ২,৬৩৯ জন ভারতীয় জেলে এবং ৭১ জন বেসামরিক বন্দিকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।কনস্যুলার অ্যাক্সেস ২০০৮ সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বিধানের অধীনে, এই ধরনের তালিকা প্রতি বছর ১ জানুয়ারি এবং ১ জুলাই বিনিময় করা হয়, MEA এক বিবৃতিতে বলেছে। ভারত ও পাকিস্তান আজ (সোমবার) নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদে একযোগে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে একে অপরের হেফাজতে থাকা বেসামরিক বন্দি এবং জেলেদের তালিকা বিনিময় করেছে,” এতে বলা হয়েছে। ভারত তার হেফাজতে থাকা ৩৬৬ বেসামরিক বন্দী এবং ৮৬ জেলেদের নাম ভাগ করেছে যারা পাকিস্তানী বা বিশ্বাস করা হয় যে পাকিস্তানি। একইভাবে, পাকিস্তান তার হেফাজতে থাকা ৪৩ জন বেসামরিক বন্দী এবং ২১১ জন জেলেদের নাম ভাগ করেছে যারা ভারতীয় বা ভারতীয় বলে বিশ্বাস করা হয়, এমইএ যোগ করেছে। ভারত সরকার পাকিস্তানের হেফাজত থেকে বেসামরিক বন্দী, জেলেদের  নৌকা এবং নিখোঁজ ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মীদের "শীঘ্র মুক্তি ও প্রত্যাবাসনের" আহ্বান জানিয়েছে বলে  মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সেইসাথে "পাকিস্তানকে ১৮৫ ভারতীয় জেলে এবং বেসামরিক বন্দীদের মুক্তি ও প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বলা হয়েছে, যারা তাদের সাজা পূর্ণ করেছে।পাকিস্তানকে অবিলম্বে ৪৭ বেসামরিক বন্দী এবং পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা জেলেদের কনস্যুলার অ্যাক্সেস প্রদান করতে বলা হয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

হরমনপ্রীতের অধিনায়কত্বে, মহিলা ক্রিকেটে ভারত প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করল

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা মহিলা ক্রিকেট দলের মধ্যে যে টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলা হয়েছিল, তাতে হরমনপ্রীতের নেতৃত্বে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০ উইকেটে পরাজিত করে।  শেফালি ভার্মার ডাবল সেঞ্চুরি এবং স্নেহ রানার ১০ উইকেটের ভিত্তিতে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই বড় জয়টি নথিভুক্ত করেছে।  হরমনপ্রীতের অধিনায়কত্বে, ভারত প্রথম তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল এবং এখন এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে এই দলটিকে ক্লিন সুইপ করেছে। স্নেহ রানা তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন।  স্নেহ রানা ভারতীয় মহিলাদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়া প্রথম মহিলা স্পিনারও হয়েছেন।  তিনি দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে মহিলাদের টেস্ট ক্রিকেটের একটি ম্যাচে ১০ উইকেট লাভ করেন।  এই ম্যাচে ভারত টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ৬০৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে।  এর পর প্রথম ইনিংসে ২৬৬ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল।  এর পরে, টিম ইন্ডিয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফলোঅন করতে বাধ্য করে এবং এই দলটি দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩৭৩ রান করতে সক্ষম হয়।  এরপর ভারত জয়ের জন্য ৩৭ রানের লক্ষ্য পায় এবং কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে ভারত ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়।  ভারতের হয়ে প্রথম ইনিংসে, শেফালি ভার্মা ১৯৭ বলে ৮ ছক্কা এবং ২৩ চারের সাহায্যে ২০৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, স্মৃতি মান্ধানাও দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন এবং একটি ছক্কা এবং ২৭ চারের সাহায্যে ১৪০ রান করেন। তৈরি করুন। এই দুজনের ইনিংসের ভিত্তিতে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৬০৩ রানের বড় স্কোর করে ভারত।  জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার দল প্রথম ইনিংসে ২৬৬ রানে সীমাবদ্ধ থাকে এবং প্রথম ইনিংসে স্নেহ রানা ২৫.৩ ওভারে ৭৭ রানে ৩ উইকেট নেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

খাদ্য প্যাকেজিং উপকরণে Per - এবং polyfluoroalkyl সাবস্ট্যান্সের উদ্বেগজনক উপস্থিতি

উত্তরাপথঃ Per- এবং polyfluoroalkyl (পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল ) সাবস্ট্যান্স (PFAS), যা ("forever chemicals") বা "চিরকালের রাসায়নিক" নামেও পরিচিত।এটি পরিবেশে তাদের অবস্থান এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত ৬৮টি ("forever chemicals")'চিরকালের রাসায়নিক' উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন। এই বিষয়ে, জুরিখ-ভিত্তিক ফুড প্যাকেজিং ফোরাম ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত পরিবেশ বিজ্ঞানীদের দ্বারা একটি নতুন সমীক্ষা চালানো হয়েছে, যার ফলাফল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (Environmental Science & Technology, )জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত পার(Per)এন্ডেড পলি-ফ্লুরো অ্যালকাইল(polyfluoroalkyl )সাবস্টেন্সেস (PFAS) মানবসৃষ্ট রাসায়নিক যৌগগুলির একটি গ্রুপ, যা পরিবেশে খুব ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। এই কারণে, এই রাসায়নিকগুলি খুব দীর্ঘ সময় ধরে পরিবেশে থাকে এই কারণে এই কেমিক্যালটি 'ফরএভার কেমিক্যালস' নামেও পরিচিত। আজ অবধি,১২,০০০ টিরও বেশি বিভিন্ন ধরণের PFAS এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। এই রাসায়নিকগুলি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি দীর্ঘ সময় ধরে এগুলির সংস্পর্শে থাকলে ক্যান্সার হতে পারে। PFAS হল কৃত্রিম রাসায়নিকের একটি গ্রুপ যার মধ্যে জল প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার কারণে এর ব্যবহার কয়েক দশক আগে শুরু হয়েছিল। এগুলি সাধারণত ননস্টিক কুকওয়্যার, খাদ্য প্যাকেজিং, ইলেকট্রনিক্স, অগ্নিনির্বাপক ফোম, কার্পেট, পোশাক, প্রসাধনীর মতো পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত হয়।সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, খাদ্য প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে PFAS-এর ব্যবহার বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে, .....বিস্তারিত পড়ুন

দুধে ইউরিয়া কিডনি এবং লিভারের জন্য নীরব ঘাতক ,জানুন দুধে ইউরিয়া সনাক্ত করার এক সহজ পদ্ধতি

উত্তরাপথঃ বিশ্বের অনেক পরিবারে দুধ একটি প্রধান খাদ্য, যা মানুষকে, বিশেষ করে শিশু এবং ছোট শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রতিটি বাড়িতে প্রতিদিন দুধ ব্যবহার করা হয়। দুধকে একটি সম্পূর্ণ খাদ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত পুষ্টি এতে উপস্থিত রয়েছে। এটি খেলে হাড় মজবুত হয় এবং শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি ও শক্তি পায়। এর নিয়মিত সেবনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যা অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদের সাহায্য করে। কিন্তু আজকাল বাজারে খাঁটি দুধ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুধে নানা ধরনের জিনিষ ভেজাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি এতে ইউরিয়ার মতো বিপজ্জনক রাসায়নিকও মেশানো হচ্ছে (Urea Contamination in Milk), যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইউরিয়া মিশ্রিত ভেজাল দুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই প্রসঙ্গে, ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (FSSAI) ভেজাল দুধ সনাক্ত করার জন্য একটি সহজ পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছে। ইউরিয়া কি? ইউরিয়া কার্বামাইড নামেও পরিচিত। এটি কার্বনিক অ্যাসিডের ডাইমাইড ফর্ম। এটি জমিতে সার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ইউরিয়ার কোন রং নেই। এটি একটি গন্ধহীন, স্বাদহীন এবং বিষাক্ত রাসায়নিক। দুধে ইউরিয়া মেশানো হয় কেন? দুধে ইউরিয়া যোগ করার প্রধান কারণ অর্থনৈতিক। এটি দুধে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়াতে যোগ করা হয়, যার কারণে দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এ কারণে দুধ বিক্রেতারা দুধে জল মিশিয়ে বিক্রি করে। তবে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top