

উত্তরাপথঃ ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম দেখা দিতে শুরু করেছে। গ্রীষ্মের মরসুম আমাদের শরীরে অনেক সমস্যা নিয়ে আসে যা একটু অসাবধানতায় মারাত্মক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এই ঋতুতে সব বয়সের মানুষকেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে যারা এই গরমে দুপুরে ঘরের বাইরে বের হন, তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। একটু সতর্কতা আমাদের অনেক সমস্যার শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে। সবচেয়ে ভাল বিষয় হল এই সতর্কতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সহজেই গ্রহণ করা যেতে পারে।
কিভাবে তাপপ্রবাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন
গ্রীষ্মকাল সবার জন্যই চ্যালেঞ্জিং। আবহাওয়ার কারণে আপনি আপনার কাজ বন্ধ করতে পারবেন না, তবে এই সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি রোগ থেকে বাঁচতে পারেন।
নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন
গ্রীষ্মের মৌসুমে নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তৃষ্ণা না লাগলেও সারাদিন নিয়মিত জল পান করুন। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এবং ওয়ার্কআউটের সময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে আরও মনোযোগ দিন। একবারে এক নিশ্বাসে জল পান করবেন না, এক গ্লাসে জল নিয়ে চুমুক দিয়ে পান করুন। এর পাশাপাশি রসালো ফল ও সবজি যেমন তরমুজ, শসা, তরমুজ, কমলা খেতে ভুলবেন না।
শরীর ঠান্ডা রাখুন
এই গরমে আপনার বাড়ি এবং অফিসের পাশাপাশি নিজেকে ঠান্ডা রাখার দিকে মনোযোগ দিন। খুব টাইট পোশাক পরবেন না।সুতি, লিনেন, মসলিন ইত্যাদির মতো ঢিলেঢালা কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক সবসময় পরুন। এগুলো পরলে ঘাম কম হবে,কারণ এই জামাকাপড়গুলি সহজে ঘাম শুষে নেয়। এটি আপনার ত্বককে বাতাসের সংস্পর্শে রাখবে, এবং গরমে ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস করবে।
সূর্য থেকে রক্ষা করুন
এটা সত্য যে সূর্যের আলোর কারণে আমরা আমাদের কাজ বন্ধ করতে পারি না, তবে আমাদের অবশ্যই সূর্যের তাপ থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। সেই কারণে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রোদে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরুন। টুপি, সানগ্লাস, স্কার্ফ পরুন। অন্তত ৩০ এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। বিকালে বাড়ি থেকে বের হলে সাথে একটি ভেজা কাপড় রাখুন।
আপনার ঘর ঠান্ডা রাখুন
নিজেকে ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি ঘর ঠাণ্ডা রাখার দিকেও নজর দিন। সকালে এবং সন্ধ্যায় জানালা খুলুন, যাতে তাজা বাতাস ঘরে আসতে পারে। এই ঋতুতে, ঘরে সঠিক বায়ুচলাচল থাকা জরুরি। এর পাশাপাশি ফ্যান, কুলার ও এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। ঘরে গাছ লাগান, তাপ কমায়। কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রাখলেও উপকার হবে।
ডায়েটে মনোযোগ দিন
তাপপ্রবাহ যে কাউকে এর শিকার করতে পারে, তাই এর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা ভালো। বাড়িতে সর্বদা একটি জরুরি কিট রাখুন। ওআরএস সলিউশন এবং গ্লুকোজ ঘরে থাকা উচিত। এছাড়াও লেবু শিকাঞ্জি ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখুন। দই, বাটার মিল্ক ইত্যাদি নিয়মিত খান। পেঁয়াজ আপনাকে হিটস্ট্রোক এবং তাপ থেকেও রক্ষা করবে। বেশি করে রসালো ফল ও শাকসবজি খান। বেশি তৈলাক্ত খাবার খাবেন না।
চা, কফি, অ্যালকোহলের মতো জিনিস থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, আপনি যদি তাপপ্রবাহ এড়াতে চান তবে আপনার জীবনধারা থেকে সেই জিনিসগুলি বাদ দিন, যা আপনাকে আরও অসুস্থ করে তুলতে পারে। প্রধানত, এই প্রচণ্ড গরমে চা, কফি, অ্যালকোহল এবং কার্বনেটেড কোল্ড ড্রিঙ্কস সেবন করবেন না, কারণ এই ধরনের পানীয় আপনার শরীরের অনেক ক্ষতি করতে পারে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রক বাসি খাবার এবং বেশি পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়াও নিষিদ্ধ করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, আপনি যদি তাপপ্রবাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান তবে প্রতিদিন যতটা সম্ভব জল পান করুন। জল পান করলে শরীর ভালোভাবে হাইড্রেটেড থাকে। এতে শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়া অনেক ধরনের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও কমে। এছাড়া এই প্রচণ্ড গরমে বেশিক্ষণ রান্না করা এড়িয়ে চলুন।যখনই ঘরে খাবার রান্না করবেন, ঘরের দরজা-জানালা খোলা রাখুন।
আরও পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন