ড. জীবনকুমার সরকার


ছবি সংগৃহীত
জসীমউদ্দীন বাংলা কবিতার জগতে এক অনন্যধারার কবি। ভিন্ন মাত্রার জনপ্রিয় কবি। তাঁর কবিতার মধ্যে এক ধরনের মায়া ও মমতা আছে। যার ফলে আকষর্ণের শেষ নেই। তাঁর কবিতার মূলকেন্দ্র কিন্তু মাটি ও মানুষ। মানুষ বলতে এখানে সাধারণ মানুষ, যাদের বসবাস গ্রামে। কৃষিজীবী-শ্রমজীবী মানুষদের জীবন আর গ্রাম্য সহজ-সরল-স্বাচ্ছন্দ্য জীবনের ছবি তিনি তুলে ধরেছেন বেশি করে। যেমন ‘চাষির ছেলে’ কবিতায় আছে এমন জীবনের অনাবিল ছবি:
“এই গাঁয়ের এক চাষির ছেলে, লম্বা মাথার চুল; কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কীসের রঙিন ফুল।
কাঁচা ধানের পাতার মতো কচি মুখের মায়া,
তার সাথে সে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া!
জালি লাউয়ের ডগার মতো বাহু দুখান সরু;
গা খানি তার শাওন মাসের যেমন তমাল তরু ! বাদল-ধোঁয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল, বিজলি-মেয়ে লাজে লুকায় ভুলিয়ে আলোর খেল! কচি ধানের তুলতে চারা হয়তো কোনো চাষি
মুখে তাহার ছড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি।
কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি,
কালো দ’তের কালি দিয়েই কেতাব- কোরান লেখি। জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভুবনময়;
চাষিদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়।”
এমন করে গ্রাম, গ্রামের প্রকৃতি ও গ্রামের কৃষকদের নিয়ে ছড়া-কবিতা লেখার প্রচেষ্টা আমরা জসীমউদ্দীন ছাড়া অন্য কবিদের ভেতরে পাইনি। শিশু-কিশোররা আজকাল যে ধরনের ছড়া-কবিতা পড়ে বড়ো হচ্ছে তার চেয়ে এই ছড়াটি কিন্তু একেবারেই আলাদা। বিশেষত নগর শহর সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের সামনে এই কছ ছড়াটির বিষয় ও ভাষা অন্য এক ভুবনের সন্ধান দেয়।
জসীমউদ্দীন যে সময়ের কবি সে সময় তাঁর পাশাপাশি কবিরা হলেন নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬), জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪), সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৬০), অমিয় চক্রবর্তী (১৯০১-১৯৮৬), প্রেমেন্দ্র মিত্র (১৯০৪-১৯৮৮), বুদ্ধদেব বসু (১৯০৮-১৯৭৪), বিষ্ণু দে (১৯০৯-১৯৮২) প্রমুখরা। প্রত্যেকেই বাংলা কবিতার সম্পদ। তবু জসীমউদ্দীন (১৯০৩ – ১৯৭৬) ছিলেন একেবারেই স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্রতার মূল বৈশিষ্ট্য হলো— সহজ-সরল ভাষায় গ্রামের ছবি এঁকেছেন। গ্রাম ও গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতি এত মুগ্ধতা আর কোনো কবিতা পরে জাগে না। সে জন্যে তাঁকে ‘পল্লিকবি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
‘চিঠি’ নামে তাঁর একটি কবিতা আছে। চিঠি বলতে সাধারণত যে মনোভাব ফুটে ওঠে, তাঁর সঙ্গে যে আবার গ্রাম প্রকৃতি গাছপালা সমস্ত মিশিয়ে চিঠি লেখা যায় এমন অপরূপ; তা সত্যিই আমাদের আশ্চর্য করে দেয়:
” চিঠি পেলুম লাল মোরগের ভোর-জাগানোর সুর-ভরা
পাখার গায়ে শিশু-ঊষার রঙন হাসি রঙিন করা।
চিঠি পেলুম চখাচখির বালুচরের ঝিকিমিকি,
ঢেউ-এ ঢেউ-এ বর্ষা সেথা লিখে গেছে কত কী কী!
লিখে গেছে গাঙশালিকে গাঙের পারের মোড়ল হ’তে, জল-ধারার কল কল ভাসিয়ে আসর উজান সোতে।
চিঠি পেলুম কিচিরমিচির বাবুই পাখির বাসার থেকে, ধানের পাতায় তালের পাতায় বুনট-করা নকশা এঁকে | চিঠি পেলুম কোড়াকুড়ির বর্ষাকালের ফসল- ক্ষেতে, সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে জল-ধারায় মেতে।
আকাশ জুড়ে মেঘের কাঁদন গুরু গুরু দেয়ার ডাকে, উদাস বাতাস আছড়ে বলে কে যেন বা চাইছে কাকে।
ইহার সাথে পেলুম আজি খোকা ভাই-এর একটি চিঠি, শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি লাগছে মিঠি।
দূর আকাশের সুনীল পাতায় পাখিরা সব ঝাঁকে ঝাঁকে কত রকম ছড়ায় গড়ায়, মেঘের পাড়ায় পাড়ায় কাকে কাকে।
সেই সে পড়া হরফ-করা খোকা ভাই-এর রঙিন হাতে খুশির নূপুর ঝুমুর-ঝামুর বাজছে আমার নিরালাতে।”
শিশু সাহিত্যের বড়ো কথা, শুধু ছন্দ মিলিয়ে শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে কবিতা-ছড়া লিখলেই তা যথার্থ হয় না। সঙ্গে চাই বিষয়। বিষয় মানে,শিশু-কিশোর মনের উপযোগী বিষয়। যে বিষয় থেকে কেবল তারা ছড়া-কবিতা পড়ার আনন্দই পাবে না, সঙ্গে সঙ্গে শিশু-কিশোররা তাদের চারপাশের বস্তুর সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে আকর্ষণ বোধ করবে। তা নাহলে চারপাশে ছড়িয়ে থাকা পরিবেশের প্রতি কোনো মমত্ব জন্মাবে না। কোনো মূল্যবোধ তৈরি হবে না। শিশু-কিশোরদের মনোজগত এক আশ্চর্য জগত— যা বিস্ময়ে ভরা। এ বস্তু বিশ্বের সবকিছু সম্পর্কে তারা জানতে চায় এবং প্রশ্ন করে। তাই প্রকান্তরে শিশু-সাহিত্যিকদের নিতে হয় শিক্ষকের ভূমিকা। শিশু-সাহিত্যিকরা শিক্ষকগিরি করবে না, কিন্তু শিশু-কিশোরদের নরম মনে স্বপ্ন ও সুকুমার অনুভূতিগুলিকে নাড়িয়ে দেবে। এইসব নানাবিধ কথা ভাবলে জসীমউদ্দীনের শিশু-কিশোর উপযোগী ছড়া-কবিতাগুলির মূল্য শিশু-সাহিত্যে অপরিসীম।
শিশু-কিশোররা আজকাল অনেক ছড়া-কবিতা পড়ে বড়ো হচ্ছে। ভালো ভালো ছড়া-কবিতা সেকালেও ছিলো, একালেও আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছড়াকারদের ছড়াও পাল্টে যায়। নতুন নতুন বিষয়, নতুন নতুন ভাবনা, নতুন নতুন কথা উঠে আসে। শহর আছে, গ্রামও আছে। বই আছে, ছড়া আছে; তবু কেন জানি সবসময় মনে হয় জসীমউদ্দীনের মতো এমন ছড়া বা কবিতা নেই আমাদের আয়োপাশে:
“গড়াই নদীর তীরে,
কুটিরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে । বাতাসে হেলিয়া, আলোতে খেলিয়া সন্ধ্যা সকালে ফুটি,
উঠানের কোণে বুনো ফুলগুলি হেসে হয় কুটি কুটি। মাচানের পরে সিম-লতা আর লাউ-কুমড়ার ঝাড়, আড়া- আড়ি করি দোলায় দোলায় ফুল ফল যত যার।
তল দিয়ে তার লাল নটে শাক মেলিছে রঙের ঢেউ, লাল শাড়িখানি রোদে দিয়ে গেছে এ বাড়ির বধূ কেউ। মাঝে মাঝে সেথা এঁদো ডোবা হতে ছোটো ছোটো ছানা লয়ে,
ডাহুক মেয়েরা বেড়াইতে আসে গানে গানে কথা কয়ে। গাছের শাখায় বনের পাখিরা নির্ভয়ে গান ধরে, এখনো তাহারা বোঝেনি হেথায় মানুষ বসত করে । মটরের ডাল, মসুরের জল, কালিজিরা আর ধনে, লঙ্কা-মরিচ রোদে শুকাইছে উঠানেতে সযতনে। লংকার রং, মসুরের রং,মটরের বং আর,
জিরা ও ধনের রঙের পাশেতে আলপনা আঁকা কার ! যেন একখানি সুখের কাহিনি নানান আখরে ভরি,
এ বাড়ির যত আনন্দ হাসি আঁকা জীবন্ত করি। সাঁঝ-সকালের রঙিন মেঘেরা এখানে বেড়াতে এসে, কিছুক্ষণ যেন থামিয়া রয়েছে এ বাড়িরে ভালোবেসে।”
(‘গড়াই নদীর তীরে’)
তাঁর ছড়া কবিতার বিষয় নানামুখী হলেও গ্রাম অর্থাৎ মাটিকে তিনি ছাড়েননি। মাটি দিয়ে ঘিরে রেখেছেন সমস্ত রচনাকে । আজকের শিশু-সাহিত্যিকদের রচনায় যা দুর্লভ। এ সময় আমরা কত রকমের ছড়া পড়ছি! প্রযুক্তিবিদ্যার অভূতপূর্ব সাফল্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আজকের শিশু কিশোরদের সংস্কৃতিমুখী করা খুব কঠিন। শিশু কিশোরদের সামনে বিনোদনের এত সস্তা এবং চটুল বিষয় প্রতিনিয়ত হাজির হচ্ছে – যা থেকে সাহিত্য-সংস্কৃতির দিকে মুখ ঘোরাতে হলে জসীমউদ্দীনের মতো কবিদেরও দরকার আজকে। ছোটো ছোটো (একান্নবর্তী) পরিগুলিতে শিশু-কিশোররা এমনিতেই দমবন্ধ করা এক ধরনের পরিবেশের মধ্যে বড়ো হতে থাকে। এই ধরনের পরিবেশে বাবা-মা ছাড়া শিশু-কিশোরদের সামনে আর কেউ সাধারণত থাকে না। ফলে পরিবারের অন্যান্য সম্পর্কগুলোর উষ্ণতা তারা অনুভব করতে পারে না। দেওয়ালে বন্দি থাকতে থাকতে তাদের মনোজগত তৈরি হয় আত্মকেন্দ্রিক এবং পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়বন্ধহীন মানুষ। এইসব শিশু কিশোরদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যদি নগরকেন্দ্রিক শিশু-কিশোরদের সামনে জসীমউদ্দীনের কালজয়ী ‘কবর’ কবিতা তুলে ধরি, তবে তারা কীভাবে কবিতাটির বিষয়ের সঙ্গে একাত্ম হবে:
“এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে, তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে। এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক। এখানে ওখানে ঘুরিয়ে ফিরিত ভেবে হইতাম সারা সারা বাড়ি ভরি সোনা মোর ছড়াইয়া দিল করা। সোনালী ঊষায় সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি লাঙল লইয়া ক্ষেতে ছুটিতাম গাঁয়ের ওপথ ধরি।”
যে অনুভূতি নিয়ে এই কবিতার বিষয় বিস্তারিত হয়েছে, তা আজকের নগর সভ্যতার মধ্যে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের সামনে অন্য মাত্রা নিয়ে আসে।
আবহমান গ্রাম বাংলার শ্রেষ্ঠ রূপকার, অন্যতম লোককবি জসীমউদ্দীন সম্পর্কে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত যথার্থ ব্যাখ্যা করেছেন:
“একেবারে সাদামাটা আত্মভোলা ছেলে এই জসীমউদ্দীন। চুলে চিরুনি নেই জামায় বোতাম নেই, বেশব্যাসে বিন্যাস নাই।… সরল শ্যামলের প্রতিমূর্তি যে গ্রাম তারই পরিবেশ তার ব্যক্তিত্বে, তার উপস্থিতিতে। কবিতায় জসীমউদ্দীন প্রথম গ্রামের দিকে সংকেত, তার চাষাভুষো, তার ক্ষেত খামার, তার নদীনালার দিকে।… কোনো কারুকলার কৃত্রিমতা নেই, নেই কোনো প্রসাধনের পরিপাট্য। একেবারে সোজাসুজি মর্মস্পর্শ করবার আকুলতা।”
আজকের ছড়ার জগতে এবং শিশু-কিশোরদের মাঝে তাঁর জনপ্রিয়তা একেবারেই কম। বিশেষ করে আমাদের দেশে। এর একটা বড়ো কারণ, কলকাতা কেন্দ্রিত ছড়া-চর্চা, সাহিত্য চর্চা। কলকাতার ছড়া বলে তো কোনো ছড়া হয় না, বলতে চাই; কলকাতায় বসে যারা লেখেন তাদের গুলোই কেন শিশুরা কেবল পড়বে এবং জানবে? তাতে তো শিশুদের জানার আকাশও ছোটো হবে। তাই জমীমউদ্দীন সম্পর্কে উদাসীন থাকলে চলবে না। ছোটোদের জসীমউদ্দীন মোটেই ছোটো নয়। বিশাল এক জগত। এই জগতের কাছাকাছিও আমরা এখনও পর্যন্ত যেতে পারিনি। অথচ তিনি আমাদের খুব কাছের কবি। এ। আমাদের অনন্য আত্মজন। বাংলা সাহিত্যের ভুবনে তিনি বহুমাত্রিক আলোকস্তম্ভ।
আরও পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন