রোজেনবার্গ দম্পতি, ছবিঃ সংগৃহীত
রবি রায়ঃ ১৯৫৩ সালের ১৯শে জুন সূর্যাস্তের আগে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে রোজেনবার্গ দম্পতির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। সেদিনই ছিল তাদের ১৪তম বিবাহবার্ষিকী।
দুজনের মৃত্যুদন্ড আলাদাভাবে কার্যকর করা হয়েছিলো। প্রথমে চেয়ারে বসানো হয় জুলিয়াস রোজেনবার্গ। প্রথম ইলেকট্রিক শকেই মারা যান তিনি। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যায় ইথেলের বেলায়। প্রথম শকে তিনি মারা যাননি। নিয়ম মোতাবেক তিনবার শক দেয়ার পরও ডাক্তাররা পরীক্ষা করে তার হৃদস্পন্দন খুঁজে পান! তখন বাধ্য হয়ে আরো দু’বার শক দেয়া হয় তাঁকে। এরপরই মারা যান ইথেল রোজেনবার্গ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, তখন ইথেলের মাথা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছিলো!
তাদের অপরাধ- তারা নিজেদের আন্তর্জাতিকতাবাদী বলতেন৷ দুনিয়ায় যেখানেই শোষণ বঞ্চনা, তার প্রতিবাদে মুখর হতেন৷ কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক’এ উপস্থিত থাকতেন৷ নিজের দেশের শাসকের শোষণের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠতেন৷ আমেরিকা সরকার এই কমিউনিস্ট দম্পতিকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়েছিল৷ পারমানবিক বোমা তৈরীর প্রযুক্তি ভীনদেশে সরবরাহের আছিলায় তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছিল৷
আমেরিকার অনেকেই মনে করতেন যে, তারা নির্দোষ। নানা দিক থেকে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ধিক্কার উঠেছিল৷ ক্রুদ্ধ জা-পল সার্ত্র মন্তব্য করেছিলেন, “এটা আইনের উছিলায় হত্যা। একটা গোটা জাতি গায়ে রক্ত মাখছে।” রোজেনবার্গ দম্পতির প্রাণভিক্ষা করে আইজেনহাওয়ারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন পোপ এবং পাবলো পিকাসো। এমনকি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, হ্যারল্ড উরের মতো নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী এবং সমাজের আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন তখন। কিন্তু ১৯৫৩ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি সবার আবেদন নাকচ করে দেন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার৷ এবং মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন৷
আর এভাবেই সমাপ্তি ঘটেছিলো রোজেনবার্গ দম্পতির জীবনের। তাদের কবর দেওয়া হয়েছিলো নিউ ইয়র্কের ওয়েলউড সিমেট্রিতে। সেদিন তাদের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে প্রায় ৫০০ লোক অংশ নিয়েছিলো। আর দাঁড়িয়েছিলো প্রায় ১০,০০০ এর মতো জনতা।
ছবিতে তাদের যে বাচ্চাদের দেখা যাচ্ছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবার সময় তারা বেশ কিছুটা বড় হয়েছে। সেদিনই সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজে তারা তাদের ম-বাবার করুণ পরিণতির কথা জানতে পারে। ঐ কাগজেই প্রকাশিত হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্য লেখা তাদের ম-বাবার শেষ চিঠি।
হ্যাঁ, এটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
তথ্য সংগৃহীত
আরও পড়ুন
Tomato দাম কমাতে উদ্যাগ কেন্দ্রের
উত্তরাপথ: প্রায় গোটা দেশে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো (Tomato)। কোথাও কোথাও কেজি প্রতি দেড়শো থেকে আড়াইশো টাকা অবধি। এই পরিস্থিতিতে আমজনতাকে স্বস্তি দিতে উদ্যোগী হল কেন্দ্রের উপভোক্তা বিষয়ক বিভাগ। তারা জাতীয় কৃষি সমবায় বিপণন ফেডারেশন এবং জাতীয় সমবায় উপভোক্তা ফেডারেশনকে নির্দেশ দিয়েছে, কৃষকদের থেকে সরাসরি টমেটো সংগ্রহ করে দেশের যে এলাকায় বেশি দামে টমেটো বিক্রি হচ্ছে, সেখানে তা বিক্রি ব্যবস্থা করতে। বাজারে জোগান বাড়লেই কমবে টমেটোর দাম, মত মোদি সরকারের। .....বিস্তারিত পড়ুন
Sustainable Energy: সূর্যের আলো এবং বায়ু,থেকে বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড-ব্রেকিং বৃদ্ধি
উত্তরাপথ: সম্প্রতি একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে তাতে সূর্যের আলো এবং বায়ু,থেকে সারা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড-ব্রেকিং বৃদ্ধি ১২% উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এই পুনর্নবীকরণযোগ্য সম্পদের ব্যবহার আমাদের অ নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারের বিকল্পের দিকে ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করছে। সৌর এবং বায়ু শক্তির ব্যবহারের দ্রুত বৃদ্ধি বিভিন্ন কারণ দ্বারা চালিত হয়েছে। প্রথমত, প্রযুক্তির অগ্রগতি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ এবং সাশ্রয়ী করে তুলেছে। সৌর প্যানেল এবং বায়ু টারবাইনগুলি এখন আগের চেয়ে আরও দক্ষতার সাথে সূর্য এবং বায়ু থেকে শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম, যার ফলে বিশ্বব্যাপী পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন বৃদ্ধি .....বিস্তারিত পড়ুন
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ভারত নবম স্থান অর্জন করেছে
উত্তরাপথ: ৬৪ তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ভারতীয় দল একটি ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে, সামগ্রিকভাবে নবম স্থানটি অধিকার করে নিয়েছে। দলটি সাথে দুটি স্বর্ণ, দুটি রৌপ্য এবং তিনটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে ৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডটি ১৩ জুলাই জাপানের চিবাতে অনুষ্ঠত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অতুল শতবর্ত নাদিগ এবং অর্জুন গুপ্ত স্বর্ণপদক জিতেছেন, তারপরে আনন্দ ভাদুড়ি এবং সিদ্ধার্থ চোপরা .....বিস্তারিত পড়ুন
World Population: উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে চলেছে বিশ্বের জনসংখ্যা
উত্তরাপথ: সারা পৃথিবীতে জাতিসংঘের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার ১১ জুন পালিত হয়েছে বিশ্ব জনসংখ্যা (World Population) দিবস। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বিভাগ জানিয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি। অর্থাৎ প্রায় এক হাজার কোটি। এই সময়ে ভারত, চীন ও নাইজেরিয়া হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তিন জনবহুল দেশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ১৯৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ২৫০ কোটি। ২০২২ সালে জনসংখ্যা হয় ৮০০ কোটি। .....বিস্তারিত পড়ুন