ধুপগুড়ি (Dhupguri) উপনির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অ্যাসিড টেস্ট  

উত্তরাপথঃ ধুপগুড়ি (Dhupguri) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। মোট বুথের সংখ্যা ২৬০। এর মধ্যে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা মাত্র ৩৮টি। মোট ভোটার প্রায় ২ লক্ষ ৪৮ হাজার। এই ২৬০ বুথে মোতায়েন থাকবেন ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। অর্থাৎ সব বুথেই সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা থাকছেন। সেই সঙ্গে থাকবে রাজ্য পুলিশও।অর্থাৎ ধূপগুড়ির জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করছে কমিশন।

আসলে কদিন আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বিস্তর জলঘলা  হয়েছে। শেষে হাই কোর্টের নির্দেশ রাজ্যজুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছিল বটে, তবে সেটা শেষ মুহূর্তে। পঞ্চায়েত নির্বাচন ছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে। আর এবারের ধুপগুড়ি বিধানসভার  উপনির্বাচন  হবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণ্ডগোল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই এবার বাহিনী মোতায়েন করে দিল কেন্দ্র নির্বাচন কমিশন।

প্রসঙ্গত গত ২৫ জুলাই প্রয়াত হন জলপাইগুড়ির জেলার ধুপগুড়ির বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়। জুলাইয়ে কলকাতায় বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA)। SSKM-হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মৃত্যু হয় বিধায়কের। সেই মৃত্যু ঘিরেও তরজা হয়েছিল। এসএসকেএম হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল চিকিৎসাতে গাফেলতি ছিল। অভিযোগ করেছিলেন খোদ বিজেপি বিধায়কের ছেলে। রাতে SSKM-এ প্রথমে  কম্বল-চাদর কিছুই দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছিলেন তাঁর ছেলে। অভিযোগ করার পরে সেগুলি মেলে। স্বাস্থ্যকর্মীও ছিলেন না বলে অভিযোগ ওঠে। মাঝরাতে স্ট্রেচার ঠেলে পরিবারের সদস্যদেরই রোগীকে উডবার্ন ব্লকে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যেতে হয় বলে সেই সময় বিষ্ণুপদ রায়ের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় ।  

 বর্তমানে বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুর পর ওই আসনে উপনির্বাচনের প্রয়োজন পড়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিষ্ণুপদবাবু তৃণমূল প্রার্থী মিতালি রায়কে (প্রায় ৪৬ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন। তাছাড়া ধূপগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গকে নিজেদের গড় হিসাবেই দাবি করে বিজেপি। কিন্তু গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেরুয়া শিবির এই এলাকায় একেবারেই ভাল ফল করতে পারেনি। এবার ধুপগুড়ি দখলে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল। আগামী ২ সেপ্টেম্বর সেখানে প্রচারে যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।

অন্যদিকে বিজেপিও নিজেদের মজবুত আসন ধরে রাখতে মরিয়া।তারা সেখানে শুরু করে দিয়েছে জোর কদমে প্রচার।এবার তারা উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছেন পুলওয়ামা হামলায় শহীদ জাওয়ান জগ্ননাথ রায়ের স্ত্রী তাপসী রায়কে । এবারের এই উপনির্বাচন বিজেপির কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনে ২০২৪এর লোকসভা নির্বাচন। উত্তরবঙ্গে ভালো ফলের আশায় বিজেপি অনন্ত মহারাজকে এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় পাঠায় । তাই এই নির্বাচনের সাফল্য একদিকে যেমন রাজ্য বিজেপি সহ অনন্ত মহারাজের অ্যাসিড টেস্ট অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের কারণ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল উত্তরবঙ্গ থেকে দারুন সাফল্য পেয়েছিল।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


২০২৩ নির্বাচন কি সত্যি ২০২৪ এর সেমিফাইনাল ?

উত্তরাপথ: ২০২৩ নির্বাচন কি সত্যি ২০২৪ এর সেমিফাইনাল ? না  কি কংগ্রেসের কাছে আবার একটু - একটু  করে ঘুরে দাঁড়াবার প্রচেষ্টা এবং বিজেপির কাছে মোদী ম্যাজিক যে এখনও অব্যাহত সেটা প্রমান করা। বিজেপির এখন প্রচারের একমাত্র মুখ নরেন্দ্র মোদী। সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক নির্বাচনের পুরো প্রচার হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই নিজেও প্রধানমন্ত্রী মোদির নামে ভোট চাইলেন। তার  উপরে, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে .....বিস্তারিত পড়ুন

ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে

উত্তরাপথ: লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এবং ইউসি বার্কলে এর সহযোগিতামূলক গবেষণায় গবেষকরা একটি অভিনব ব্যাকটেরিয়া ইঞ্জিনিয়ারড করেছেন যা জ্বালানি, ওষুধ এবং রাসায়নিক উত্পাদনের সময় উত্পন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে ডিকার্বনাইজশন এর মাধ্যমে। সম্প্রতি Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই আবিষ্কারটি । আর এটি "Carbene Transfer Chemistry in Biosynthesis" নামে পরিচিত । একটি অভিনব প্রতিক্রিয়ার সাথে প্রাকৃতিক এনজাইমেটিক বিক্রিয়াকে সংহত করতে ব্যাকটেরিয়াকে কাজে লাগায়। আর যা সাধারণত জীবাশ্ম .....বিস্তারিত পড়ুন

কতো অজানা রে

মৈত্রেয়ী চৌধুরী: ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের মনে যে সব সৌধের প্রসঙ্গ মনে আসে তারমধ্যে পার্লামেন্ট ভবন একটা অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থান। বহু পর্যটক এই ভবন দেখতে যান. কিন্তু জানেন কি, এই পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন কে বানিয়েছিলেন ? 10 জনকে জিজ্ঞেস করলে 9 জনই বলতে পারবেন না। যাঁরা খুব ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন অথবা গুগুল সার্চ করে থাকেন, তাঁরা হয়তো উত্তরটা দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন বানিয়েছিলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি এডুইন লুটিয়েন। তাঁর সহকারী ছিলেন আরেক ব্রিটিশ স্থপতি হার্বার্ট বেকার। 1927 খ্রিস্টাব্দে এই ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় এবং ব্রিটিশ .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top