মৈয়েত্রী আগরওয়ালা
নববর্ষ মানে আমদের মনে আনে এক আনন্দের জোয়ার। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মনেই একটি নতুন আশা তৈরী হয়। বিশেষ করে আমাদের বাঙালিদের, সে যতোই প্রবাসী বাঙালী হোক না কেন, এই বিশেষ দিনটি এলেই বঙ্গ-বাঙালিদের থেকেও যারা বাংলার বাইরে দেশের অন্য প্রান্তে রয়েছেন বা বিদেশে রয়েছেন তাদের সকলের অন্তর এই বিশেষ দিনটিতে যেন নীরবে নিভৃতে কাঁদে নিজের মাতৃভূমির জন্য।
নববর্ষ বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিন, যা মহা সমারোহে পালিত হয়। নাচ, গান বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা তথা সকল বাঙালি আমাদের প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের ও সুরের মাধ্যমেই বরণ করি এই দিনটিকে। এছাড়াও কবি নজরুল, কবি জীবনানন্দ, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের মতো কবিরা যে বর্ষ বরণের মঞ্চে থাকেন না তা একদম নয়। গুরুদেব আপামর বাঙালির হৃদয়ে তথা অন্তরে ঠাঁই করেছেন তাই উনার নাম সর্বাগ্রে বললাম।
এবার আসি আমাদের মনে সবসময় যে প্রশ্ন থাকে সেই প্রসঙ্গে বিশেষ করে এই দিনটি এলেই মনে হয় কবে থেকে এই নববর্ষ প্রথম উদযাপন করা হয়? নববর্ষ কে প্রথম পালন করেন? বাংলা ক্যালেন্ডারে আমরা যে মাসগুলোর নাম দেখতে পাই, সে মাসের নামগুলো কে কোথা থেকে নিয়ে রেখেছেন? ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই না?
বাংলা বর্ষের প্রথম দিবস হলো পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষ। প্রশ্ন হলো এই বাংলা বর্ষ বা বাংলা পঞ্জিকা কিভাবে এলো?
ইতিহাসের পাতা উল্টোলে দেখা যায় প্রাচীন কাল থেকেই সৌর পঞ্জি অনুযায়ী বাংলা মাস পালিত হতো। এবার প্রশ্ন আসে নববর্ষের ইতিহাসে বারো মাস কিভাবে এলো?
বাংলা সনের প্রবর্তন নিয়ে সম্রাট আকবর বেশি আলোচিত হলেও বাংলা পঞ্জির উদ্ভাবক ধরা হয় সপ্তম শতকের রাজা শশাঙ্ক কে। কথিত আছে পরবর্তী কালে সম্রাট আকবর রাজস্ব বা খাজনা আদায়ের জন্য আকবরের পঞ্জিকা বা তারিখ-এ-এলাহী প্রবর্তন করেন। সেই সঙ্গে পঞ্জিকায় মাসগুলোর নাম দেন আর্বাদিন,কাদিন,বিসুয়া, তীর এমন নামে। তবে কবে থেকে বাংলা বর্ষে মাসের নাম বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ হলো তার সঠিক ভাবে জানা যায় নি।তবে ধারণা করা হয় এই বারো মাস নামকরণ করা হয়েছে নক্ষত্রের নাম অনুসারে, যেমন বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ,জয়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য,শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ ।
বাংলা নববর্ষের গোড়াপত্তনের খোঁজে ফিরে যেতে হবে অনেক আগে অবাংলা অধ্যুষিত এলাকায়। খ্রীষ্টপূর্ব ৫৭ অব্দে রাজা বিক্রমাদিত্যের নামানুসারে হিন্দু বিক্রমী পঞ্জিকা প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই পঞ্জি অনুসারে ভারতের পূর্বাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও নেপালের বিভিন্ন অংশে বসবাসরত গ্রামীণ বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে নিছক একটি ঋতু উৎসব হিসেবে প্রচলিত ছিল পহেলা বৈশাখ।
সম্রাট আকবরের সময় সন প্রবর্তনের সাথে সাথে হালখাতা প্রথা প্রচলিত হয়েছিল, কারণ পুরনো বছরের হিসাব গুটিয়ে নতুন হিসাব খোলার খাতকে নাম দেওয়া হয় হালখাতা। ১৬১০ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীরের নির্দেশে তৎকালীন ঢাকার সুবেদার ইসলাম খান চিশতি নিজ বাসভবনের সামনে প্রজাদের মিষ্টি বিতরণ করতেন। পরবর্তী তে ব্রিটিশ আমলে ঢাকার ফরাশগঞ্জের রূপলাল হাউস, কাচারিবাড়ি, পাটুয়াটুলীর সামনে প্রতিবছর পয়লা বৈশাখে এরকম আয়োজন হতো, মা পুণ্যাহ নামে পরিচিত ছিল।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ মূলতঃ ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হতো তার মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। প্রত্যেককে এই বিশেষ দিনটিতে সকল খাজনা, মাশুল বা শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। জমির তথা ভূমির মালিকরা নিজ নিজ এলাকার অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন, আর এই উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসব আয়োজন করা হতো।
এইসব থেকেই আজও আপামর বাঙালিদের মধ্যে মহা সমারোহে পালিত হচ্ছে নববর্ষ।
আরও পড়ুন
WORLD CUP 2023: আফগানিস্তান ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করল,অধিনায়কত্ব করবেন হশমতুল্লাহ শাহিদি
উত্তরাপথঃ আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ২০২৩-এর জন্য একটি শক্তিশালী ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে,এই দলে ফিরেছেন নবীন-উল-হক। ৫ অক্টোবর থেকে ভারতে শুরু হতে চলেছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ,চলবে১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। এই বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের দলে ফিরেছেন নবীন-উল-হক, যিনি এশিয়া কাপে দলের অংশ ছিলেন না।১৫ সদস্যের আফগান দলের অধিনায়কত্ব করবেন হশমতুল্লাহ শাহিদি ।একই সময়ে, ২৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার আজমতুল্লাহ ওমরজাই, যিনি এশিয়া কাপের দলে ছিলেন না, তিনিও বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
বিজ্ঞানীদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে কিছু মাছের প্রজাতি সঙ্কুচিত হচ্ছে
উত্তরাপথঃ আমাদের গ্রহে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা আমাদের পরিবেশের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করছে।সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে কিছু মাছের প্রজাতি সঙ্কুচিত হচ্ছে এর প্রভাবে। বিজ্ঞানীদের করা এই গবেষণাটি আমাদের মহাসাগরের উষ্ণায়নের প্রত্যক্ষ পরিণতি বলে মনে করা হচ্ছে। গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল দ্বারা পরিচালিা সাম্প্রতিক এই গবেষণায় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছের জনসংখ্যা পরীক্ষা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে কড এবং হ্যাডকের মতো বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সহ অসংখ্য প্রজাতির আকার গত কয়েক দশক ধরে হ্রাস পাচ্ছে। আকারের এই হ্রাস সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং মৎস শিল্প উভয় ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে উদ্বেগের কারণ হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
নেটফ্লিক্স-এ হিট নাটক 'অভয়ারণ্য' সুমো জগতের আভাস দেয়
স্যাংচুয়ারি”, একটি নেটফ্লিক্সের মূল নাটকের সিরিজ, একটি সুমো কুস্তিগীর থেকে একজন উত্তেজিত যুবকের পরিবর্তনকে দেখানো হয়েছে, যিনি ঐতিহ্যবাহী জাপানি কুস্তির জগতে খ্যাতি অর্জন করেছেন।আট-পর্বের নাটকটি একটি আন্ডারডগ গল্প যা স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের চরিত্রগুলিকে সমন্বিত করে, সুমো জগতের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। “এটি এমন একটি নাটক যেখানে অভিনেতারা তাদের গল্প প্রকাশ করার জন্য তাদের শারীরিকতা ব্যবহার করেছে ;এটি এমন একটি গল্প যা আগে কখনো বলা হয়নি,” বলেছেন সিরিজের পরিচালক কান এগুচি। .....বিস্তারিত পড়ুন
রেলওয়ে ইউনিয়নের নতুন সূচনা, গান গেয়ে মানসিক চাপ দূর করছেন রেলের কর্মচারীরা
উত্তরাপথঃ আপনি যদি সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করেন, তাহলে এই খবর আপনাকে স্বস্তি দেবে।কারণ ভারতীয় রেলওয়ের বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন অল ইন্ডিয়া রেলওয়েম্যানস ফেডারেশন (এআইআরএফ) এবং নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে এক অনন্য উদ্যোগ শুরু করেছে।তারা তাদের কর্মীদের গান গেয়ে তাদের মানসিক চাপ দূর করতে পরামর্শ দিচ্ছে। এআইআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক শিব গোপাল মিশ্র এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুকেশ মাথুরের নির্দেশে, জয়পুর এবং অন্যান্য শহরের কর্মচারীরা একটি মাঠে জড়ো হয় এবং সেখানে তারা গান গায় এবং আন্তাক্ষিরি খেলে। .....বিস্তারিত পড়ুন