

অসীম পাঠক:দাঁড়াও মন, অনন্ত ব্রক্ষ্মান্ড মাঝে আনন্দ সভা ভবনে আজ।।
বিপুল মহিমায়ময়,গগনে মহাসনে বিরাজ করে বিশ্ব রাজ।।
সিন্ধু শৈল তটিনী মহারণ্য জলধরমালা
তপন চন্দ্র তারা গভীর মন্দ্রে গাহিছে শুন গান।
এই বিশ্ব মহোৎসব দেখি মগন হল সুখে কবিচিত্ত
ভুলি গেল সব কাজ।…..
নীলপূজা বা নীলষষ্ঠী হল বাংলার হিন্দুসমাজের এক লৌকিক উৎসব, যা মূলত শিব-দুর্গার বিবাহ বা শিবের বিয়ে নামে পরিচিত। বাঙালি গৃহিণীরা নিজের সন্তান এর মঙ্গল কামনায় নীরোগ সুস্থ জীবন কামনা করে এই ব্রত পালন করেন।
এক নতুন সুরের দ্যোতনা , এক নতুন জীবনের দ্যোতনা , এক সন্ধিক্ষণে সুমহান ধর্মীয় আদর্শের কাছে আমি নতজানু।
ভরতবর্ষ সুমহান ধর্মীয় আদর্শের পীঠস্থান ।
বিবিধের মাঝে মিলন মহান ই এখানের বৈশিষ্ট্য ।
সত্য শিব সুন্দরের উপাসনা রত মানুষ আধ্যাত্মিক আদর্শের কাছে নতজানু ।
একদিকে পবিত্র রমজান আর একদিকে নীলষষ্ঠী চড়ক পূজোর ধূম …..
চড়ক পূজা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। চৈত্রের শেষ দিনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয় , এবং বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পূজার উৎসব চলে। এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে অভিহিত।
লিঙ্গপুরাণ, বৃহদ্ধর্মপুরাণ এবং ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে চৈত্র মাসে শিবারাধনা প্রসঙ্গে নৃত্যগীতাদি উৎসবের উল্লেখ থাকলেও চড়ক পূজার উল্লেখ নেই। পূর্ণ পঞ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত গোবিন্দানন্দের বর্ষক্রিয়াকৌমুদী ও রঘুনন্দনের তিথিতত্ত্বেও এ পূজার উল্লেখ পাওয়া যায় না। তবে পাশুপত সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাচীনকালে এ উৎসব প্রচলিত ছিল। উচ্চ স্তরের লোকদের মধ্যে এ অনুষ্ঠানের প্রচলন খুব প্রাচীন নয়। জনশ্রতি রয়েছে, ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পূজা প্রথম শুরু করেন।
কথিত আছে, এই দিনে শিব-উপাসক বাণরাজা দ্বারকাধীশ কৃষ্ণের সংগে যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মহাদেবের প্রীতি উৎপাদন করে অমরত্ব লাভের আকাঙ্ক্ষায় ভক্তিসূচক নৃত্যগীতাদি ও নিজ গাত্ররক্ত দ্বারা শিবকে তুষ্ট করে অভীষ্ট সিদ্ধ করেন। সেই স্মৃতিতে শৈব সম্প্রদায় এই দিনে শিবপ্রীতির জন্য উৎসব করে থাকেন। এও বলা হয় সে সময় ঋণে জর্জরিত কৃষকদের ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে চৈত্রের শেষ দিনে বড়শিতে বেঁধে চরকে ঘুরানো হতো যা ১৮৯০ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।
=======ওঁ নমঃ শিবায়======
শ্লোক—৬৬-৭০
সর্ব্বেণ সর্ব্বদা কাৰ্য্যং ভূতিরুদ্রাক্ষধারিণম্ ।
নিত্যং শিবং শিবোক্তেন শিবভক্তিমভীপ্সতা ।। ৬৬।
অনুবাদ—
যে ব্যক্তিরা শিবভক্তির আকাঙ্খা করে , কামনা করে অর্থাৎ শিবভক্তি অভীপ্সু , তারা অবশ্যই সকল কার্যে রুদ্রাক্ষ ও বিভূতি ধারণ করবে এবং প্রতিদিন প্রতিনিয়ত শিব নাম জপ করবে।।৬৬ ।।
অন্তকালে তু রুদ্রাক্ষান্ বিভূতিং ধারয়েত্তুঃ যঃ । মহাপাপোপপাপৌঘৈরপি স্পৃষ্টো নরাধমঃ ।
সৰ্ব্বথা নো পসপন্তি তং জনং যমকিঙ্করাঃ ৷৷ ৬৭ ৷৷
অনুবাদ—
মৃত্যু সময়ে যে ব্যক্তি অঙ্গে বিভূতি ( ভস্ম ) লেপন করে এবং রুদ্রাক্ষ ধারণ করে , সেই ব্যক্তি মহাপাপযুক্ত মহাপাতকী , উপপাতকী , এমন কি নরাধম হলেও যমদূত তার কাছে আসতে পারে না এবং যমদূত তাকে নিয়ে যেতে পারে না।।৬৭
বিল্বমূলমৃদা যস্তু শরীরমুপলিম্পতি । অন্তকালেহন্তকজনৈঃ স দূরীক্রিয়তে নরঃ।।৬৮ ৷৷
অনুবাদ—
ভগবান শিব আরও বলেন , হে রাম ! অন্তিমকালে দেহান্ত সময়ে যে ব্যক্তি বিল্বমূলে মৃত্তিকা দ্বারা তার দেহ লিপ্ত করে , যমদূত তাকে স্পর্শ করতে পারে না , ফলে সেই শিবভক্তকে পরিত্যাগ করে যমদূত দূরে পলায়ন করতে বাধ্য হয় । শিবদূত তাকে শিবলোকে নিয়ে যায় ৷৷ ৬৮ ৷৷
অধীতে শিবগীতাং যো নিত্যমেতাং জিতেন্দ্রিয়ঃ । শৃণুয়াদ্ধা স মুক্ত : স্যাৎ সংসারান্নাত্র সংশয়ঃ ৷৷ ৬৯।
অনুবাদ—
ভক্তি – শ্রদ্ধা সহকারে প্রতিদিন যে ব্যক্তি এই পরম পবিত্র শিবগীতা পাঠ করে , বা একাগ্র মনে সমাহিত চিত্তে শিবগীতার পাঠ ও আলোচনা শ্রবণ করে , সে ইন্দ্রিয়সমূহ জয় করতে পারে । আমার সেই পরম ভক্ত অনায়াসেই এই ভবসংসার বন্ধন থেকে , সংসার মায়াজাল থেকে মুক্তি লাভ করে থাকে ।৷ ৬৯ ৷৷
শ্রীসূত উবাচ
এবং ময়া সমাসেন শিবগীতামাহাত্ম্যম্ সমীরিতা । এতাং যঃ প্রজপেন্নিত্যং শৃণুয়াদ্বা সমাহিতঃ ।।৭০ ।।
অনুবাদ—
এরপর মহামতি সূত বললেন , হে দ্বিজ শ্রেষ্ঠ ঋষিগণ ! আমি আপনাদের নিকট শ্রীশ্রী শিবগীতার মাহাত্ম্য সংক্ষেপে বর্ণনা করলাম । ইহা অত্যন্ত পবিত্র এবং মোক্ষ প্রদানকারী । যে ব্যক্তি একাগ্র চিত্তে সমাহিত হয়ে প্রতিদিন এই পরম পবিত্র শিবগীতা ও শিবগীতার মাহাত্ম্য পাঠ করে বা জপ করে বা শ্রবণ করে , সেই ব্যক্তি অবশ্যই মুক্তিলাভ করে এতে কোনই সংশয় নাই ।। ৭০ ।।
শ্লোক—৭১-৭৫
মাহাত্ম্যমেতদ্ শিবগীতায়াঃ মহেশ্বরপ্রোক্তং পুরাতনম্ । শিবগীতান্তে পঠতে যস্তু যথোক্তফলভাগ ভবেৎ ।। ৭১
অনুবাদ—
পরমেশ্বর ভগবান শিব নিজ মুখে এই শিবগীতা ও মাহাত্ম্য শ্রীরামচন্দ্রকে বলেছিলেন , ইহা পুরাতন । শ্রদ্ধাপূর্বক শিবগীতা পাঠ করার পর যে ব্যক্তি , এই পবিত্র শিবগীতামাহাত্ম্য পাঠ করে ও শ্রবণ করে , সে যথাযথ ফল লাভ করে এবং তার পরমগতি লাভ হয় । ৭১ ।।
শিবগীতায়াঃ পঠনং কৃত্বা মাহাত্ম্যং নৈব যঃ পঠেৎ।
বৃথা পাঠফলং তস্য শ্রম এব উদাহৃতঃ ।। ৭২ ।।
অনুবাদ—
যে ব্যক্তি শিবগীতা পাঠ করার পর শিবগীতা মাহাত্ম্য পাঠ করে না , তার পাঠ বৃথা হয় , কোন ফল হয় না – পরিশ্রম করাই সার – হয়।।৭২ ৷৷
একাগ্রচিত্তো যো মর্ত্ত্যস্তস্য মুক্তিঃ করে স্থিতা ।
অতঃ শৃণুধ্বং মুনয়ো নিত্যমেতাং সমাহিতাঃ ।। ৭৩।
অনুবাদ—
অতএব হে মুনি – ঋষিবৃন্দ ! আপনারা প্রতিদিন সমাহিতচিত্তে শ্রদ্ধা – ভক্তি সহকারে এই শিবগীতা ও শিবগীতা মাহাত্ম্য পাঠ করবেন বা শ্রবণ করবেন । প্রতিদিন শ্রদ্ধা – ভক্তি সহকারে একাগ্রচিত্তে সমাহিত ভাবে পবিত্র শিবগীতা ও মাহাত্ম্য পাঠ বা শ্রবণ করলে অবশ্যই মুক্তি লাভ হয় , মুক্তি তার করতলগত হয় ।। ৭৩ ৷৷
অনায়াসেন বো মুক্তিভবিতা নাত্ৰ সংশয়ঃ ।
কায়ক্লেশো মনঃক্ষোভো ধনহানিৰ্ন চাত্মনঃ ।।৭৪ ।।
অনুবাদ—
পবিত্র শিবগীতা ও মাহাত্ম্য পাঠ বা শ্রবণ করলে মনের ক্ষোভ দেহের ক্লেশ , ধনহানী ও আত্মপীড়া প্রভৃতি কিছুই থাকে না এবং অনায়াসেই মুক্তি লাভ হয় ।। ৭৪ ৷
পীড়াস্তি শ্রবণাদের যস্মাৎ কৈবল্যমাণুয়াৎ । শিবগীতামতো নিত্যং শৃণুধ্বমৃষিসত্তমাঃ ৷৷ ৭৫ ৷৷
অনুবাদ—
মহামতি সূত আরও বলেন , হে ঋষিগণ । শিবগীতা পাঠ ও শ্রবণে যেমন ক্ষোভ , ক্লেশ , ধনহানী বা পীড়াদি থাকে না । তেমনি ইহাতে মানসিক তৃপ্তি ও শান্তি পাওয়া যায় এবং অবশেষে কৈবল্য মুক্তি লাভ হয় ।
আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়
বিশ্ব উস্নায়ন এবং তাকে কেন্দ্র করে জলবায়ু পরিবর্তন একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এটি ধীরে ধীরে একাধিক উপায়ে মানব সমাজকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এটি প্রায় অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।ইতিমধ্যে এটি আমাদের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং আমাদের জীবন যাত্রার উপর ব্যাপক ভাবে প্রভাব দেখাতে শুরু করেছে ।সদ্য হয়ে যাওয়া হিমাচল প্রদেশের বন্যা আমাদের সামনে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিল । এবছর হিমাচল প্রদেশে বর্ষাকালে রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে ,যা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বহু গুণ বেশী। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হিমাচল প্রদেশে ১ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৪৯.৬ মিমি যা স্বাভাবিক গড় ৭৬.৬ মিমি থেকে প্রায় ৭০% বেশী .....বিস্তারিত পড়ুন
তিব্বতে ওজোন স্তরের গর্ত গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাতকে প্রভাবিত করছে
উত্তরাপথঃ ওজোন স্তর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একটি অপরিহার্য দিক, যা স্ট্রাটোস্ফিয়ারে অবস্থিত। এটি সূর্য দ্বারা নির্গত ক্ষতিকারক অতিবেগুনী (UV) বিকিরণ থেকে আমাদের রক্ষা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওজোন স্তরের অবক্ষয় , বিশ্বজুড়ে জলবায়ুর ধরনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে । এরকম একটি পরিণতি হল তিব্বতে ওজোন স্তরের গর্ত যা সেখানকার গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাতকে প্রভাবিত করছে।তিব্বতকে, প্রায়শই "বিশ্বের ছাদ" হিসাবে উল্লেখ করা হয়।এটি একটি বৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্র এবং অনন্য আবহাওয়ার নিদর্শন সহ এক বিশাল অঞ্চল। এর বিশাল এলাকা জুড়ে উচ্চ পর্বতমালা, মালভূমি এবং গভীর উপত্যকা রয়েছে । .....বিস্তারিত পড়ুন
বিক্রম সারাভাই: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার একজন দূরদর্শী পথিকৃৎ
উত্তরাপথঃ ডঃ বিক্রম সারাভাই ছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী। তিনি একজন বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, শিল্পপতি এবং স্বপ্নদর্শীর ভূমিকা সমন্বিত, ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির জনক হিসাবে বিখ্যাত।তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় ভারত মহাকাশ অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO) এর প্রতিষ্ঠা ছিল তার অন্যতম সেরা সাফল্য। তিনি রাশিয়ান স্পুটনিক উৎক্ষেপণের পর ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য মহাকাশ কর্মসূচির গুরুত্ব সম্পর্কে সরকারকে সফলভাবে বোঝান।এরপর ডঃ হোমি জাহাঙ্গীর ভাভা, যিনি ভারতের পারমাণবিক বিজ্ঞান কর্মসূচির জনক হিসাবে পরিচিত, ভারতে প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপনে ডঃ সারাভাইকে সমর্থন করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
টাইপ 2 ডায়াবেটিসে সময়ে খাবার খাওয়া, ক্যালোরি গণনার চেয়ে বেশি কার্যকর
উত্তরাপথঃ টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষ্য হল ওজন কমানো , অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতার সাথে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের অবস্থার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।এই বিপাকীয় ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কোন ডায়েটিং কৌশলটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে তা স্পষ্ট নয়।েতবে টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে অধ্যয়নের অংশগ্রহণকারীরা যারা দুপুর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে খাবার খাওয়া শেষ করেছে তারা, যারা ক্যালোরি গণনা করে তাদের সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ কমিয়েছেন তাদের .....বিস্তারিত পড়ুন